গ্যালিলিওকে কেন আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয় ?

গ্যালিলিওকে কেন আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয় ?

গ্যালিলিওকে কেন আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয় ?

যেসমস্ত ঘটনা বা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মধ্যযুগের অবসান ও আধুনিক যুগের সূচনা ঘটেছিল তার মধ্যে অন্যতম ঘটনা ছিল নবজাগরণ যা পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরলতম ঘটনা নবজাগরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হলো বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার আর এই সময় বহু বিজ্ঞানের আবির্ভাব ঘটেছিল যেমন কোপার্নিকাস , আইজ্যাক নিউটন,কেপলার প্রভৃতি ৷ তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গ্যালিলিও গ্যালিলি ৷ তিনি ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে জন্মগ্রহণ করেন তাকে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয় কারণ তিনি ছিলেন প্রখ্যাত জ্যোতিষবিদ ৷ গ্যালিলিও দূরবীক্ষণ যন্য আবিষ্কার করে বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে প্রায় বিপ্লব ঘটান । দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে তিনি মহাকাশ সম্পর্কে এমন কিছু তত্ত্ব প্রকাশ করেন যা মধ্যযুগীয় ধ্যানধারণাকে নস্যাৎ করে দেয় । এই কারণে এই বিজ্ঞান সাধকের সাথে রক্ষণশীল ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সংঘাত অনিবার্য হয়েছিল । ১৫৯১ মালে তার প্রথম এমম 'The motion'-এ অ্যারিস্টটলের বিরোধিতা করে তিনি বলেন যে প্রতিটি পদার্থের একটি নির্দিষ্ট ওজন আছে এবং একটি বিশেষ মাধ্যম দিয়ে যদি একটি পদার্থ চলে যায় সেক্ষেত্রে মাধ্যমটির ঘনত্বের ওপর পদার্থের গতিবেগ নির্ভর করে ৷

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

গ্যালিলিও ছিলেন একজন বিখ্যাত তিনি গনিতঞ্জ গবেষণার ক্ষেত্রকে আরো প্রসারিত করেছিলেন তিনি "Dialogue concerning the two chief systems of the world" এবং Dialogue on two new sciences" এই গ্রন্থ বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ৷ দুটি গ্রন্থে বস্তুর গতি সংক্রান্ত গানিতিক বিবরণের সংকেত, সূত্র প্রকাশ করেন ৷ বস্তুর পতন সম্পর্কে নির্ভুল পরিমাণের জন্য তিনি দোলকতল ও আনাততল ব্যবহার করেন । সম্ভবত আধুনিক বিজ্ঞানে ত্রুটি ছিল তার শ্রেষ্ঠ উপহার । তিনি পর্যবেক্ষণ, সাধক পরীক্ষা এবং গানিতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বস্তুর পতন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করেন । তার বক্তব্য যেহেতু অ্যারিস্টটলের দর্শনভিত্তিক বক্তব্যকে নস্যাৎ করেছিল এই কারণে তার Dialogue গ্রন্থ ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গে সংঘাত অনিবার্য করে তোলে ।কোপারনিকাস সেভাবে স্বর্গের জ্যোতিষ্ক ও মানুষের পৃথিবীর মধ্যে দূরত্ব ঘুচিয়েছিলেন, গ্যালিলিওর সিদ্ধান্ত সেই মতকে আরও শক্তিশালী করেছিল ৷ গ্যালিলিও শুধুমাত্র জ্যোতিষবিদ এবং গণিতজ্ঞই ছিলেন না, তিনি ছিলেন পেন্ডুলাম ঘড়ির আবিষ্কারক।

নিউটনের আবির্ভাবের অনেক আগে গ্যালিলিওর গতিসূত্র ও আধুনিক বলবিদ্যা আবিষ্কার করেন ৷ পাদুয়াতে অবস্থানকালে ভার্চুয়াল ওয়ার্ক নামে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আবিষ্কার করেন ৷ তরল পদার্থের ধর্ম পরস্পর কার্যপ্রণালী নিয়েও তিনি গবেষণা করেছিলেন ৷ নানা রকম সূক্ষ্ম হিসাব নিকাশ করা যায় সেই কারণে তিনি দশমিকের ব্যবহার প্রবর্তন করেছিলেন ৷ তিনি স্থাপত্য শৈলী নির্মাণের ক্ষেত্রেও গবেষণা চালিয়েছিলেন । তার গবেষণার প্রতিটি বিষয়ের উপর বক্তৃতা দিয়ে তিনি বিজ্ঞানকে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা দিয়ে তোলার চেষ্টা করেন ৷ তাই এই সকল আবিষ্কার ভুল প্রমান করাই গির্জার পোপ তার ওপর নানা ধরনের অত্যাচার শুরু করেছিলেন ৷ কিন্তু তিনি মাথা নত করেননি । তাই তাকে অন্ধকার কুঠুরিতে জীবনের শেষ কয়েকটি বছর কাটাতে হয়েছিল ৷ দীর্ঘ কারাবাসের পরে এই মহান বিজ্ঞানী জীবনের শেষদিকে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত গ্যালিলিওর জয় হয় পুরানো বিশ্বতত্ত্বের ধারণা ধীরে ধীরে বাতিল হয়ে যায় এবং কোপারনিকাস,কেপলার, গ্যালিলিওর সৌরজগৎ সম্পর্কিত ধারণা স্বীকৃতি পায় ।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ গ্যালিলিওকে কেন আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয় ? এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟