রেডিক্যাল ধর্ম সংস্কার আন্দোলন সম্পর্কে বিবরণ দাও
অথবা উগ্রবাদী ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের বিবরণ দাও
ষোড়শ শতকে ইউরোপ মহাদেশে প্রকৃত খ্রিস্টান ধর্মের বিক্রিত করে চার্লস যে নতুন ধরনের দমনমূলক ধর্মচর্চার জন্ম দিয়েছিল তার বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছিল ধর্মসংস্কার আন্দোলন । এই ধর্ম সংস্কার আন্দোলন বহুমাত্রিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে ৷ ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের বিভিন্ন নেতাদের মধ্যে দিয়ে প্রকৃত খ্রিস্ট ধর্ম তার মহামানবতাবাদী ক্ষমাপ্রদর্শনের ন্যায় সুন্দর আদর্শকে ভুলে অন্যায় অত্যাচার ও ধর্মের নামে কর আদায় করতে থাকে ৷ তাদের এই বিধর্মীয় আচরণের বিরুদ্ধে জন্ম নিয়েছিল ধর্ম সংস্কার আন্দোলন বা যা উগ্রতা এবং রেডিক্যাল চরিত্র লাভ করেছিল ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
মাটির লুথারের মৃত্যুর পর তার অনুগামীদের একাংশ চার্জের প্রয়োজনীয়তা এবং ধর্ম পালনে আচার অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সম্পর্কে সংশ্লিও হয়ে ওঠে ৷ এরা চার্চ ও পোপ বিরোধী এক অতি উগ্র মত পোষণ করতেন ৷ এরা ক্যাথলিক ও প্রটেষ্ঠান রীতির তীব্র বিরোধী ছিলেন ৷ এরা বিশ্বাস করতেন যে ধর্মীয় সংগঠন মাত্র সব ধর্ম প্রসারের পথে বাধা স্বরূপ । এই কারণে সংগঠন বিরোধী কর্মসূচি দ্বারা সর্ব ধর্মের পথে বাধা দুটো করা তাদের জন্য ঈশ্বর নির্দেশিত কর্তব্য এই কারণে এরা উগ্রবাদী ধর্ম সংস্কার নামে পরিচিত ৷
উগ্রবাদী ধর্ম সংস্কারের বিশিষ্ট নেতা কার্লসটাগ, সমাজের নিম্নবর্গীয় ও অবহেলিত সাধারণ মানুষের মধ্যে তার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা ছিল তার আহবানে গুটেনবার্গের চার্চ বিরোধী গণ আন্দোলন সংঘটিত হয় ৷ তারা এতটাই উগ্র আকার ধারণ করে যে স্থানীয় গির্জার মূর্তি ধ্বংস করা এবং গণঅভ্যুত্থানে ধর্মীয় দাঙ্গা রূপান্তরিত হয় ৷
সংস্কারবাদী অভ্যুত্থানের আরেকজন নেতা ছিলেন টমাস মুঞ্জের ৷ একসময় ব্যাপ্টিজিমের বিরোধিতা করতে এক বৈপ্লবিক ধর্মতত্ত্ব প্রচার করেন ৷ দরিদ্র মানুষের কাছে এক আচার বর্জিত ধর্ম চর্চা অনেক বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে ৷ উগ্রবাদী ধর্ম সংস্কার আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র পরলৌকিক মুক্তির আশ্বাস নয় ইহ জীবনেও সর্ব রকম সামাজিক শোষণ থেকে মুক্তির পথ খোঁজা ৷
মুঞ্জের হত্যাকাণ্ডের পর এক দশক পরে ইউরোপের একটি ছোট্ট রাজ্য মুনস্টার এ অ্যানাব্যাক্টিস আন্দোলন পুনঃপ্রকাশ ঘটে ৷ এই নজরে উগ্রবাদীরা একটা সাম্যবাদী সমাজ গড়ে তোলার প্রস্তুতি শুরু করেন ৷ এই আন্দোলনের প্রধান তিনজন নেতা ছিলেন নিপারডোলিং,জন ম্যাথিস এবং জন লেদেন ৷ অ্যানাবেটিসরা মনে করতেন ঈশ্বর বিশ্বাসী মানুষের মধ্যে কোন ভেদাভেদ থাকা বাঞ্ছনীয় নয় এই উগ্রবাদীরা ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিষিদ্ধকরণের পক্ষেও ছিলেন ৷
উগ্রবাদী ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের ক্ষেত্রে অ্যানাবেটিসদের একটি বিশেষ ভূমিকা ছিল অ্যানাবেটিসদের মধ্যে সমস্ত দমনমূলক সরকারি ব্যবস্থা ছিল খারাপ । এই কারণে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করার একটি প্রবণতা এদের মধ্যে ছিল ৷ এরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সমর্থক ছিলেন তবে অ্যানাবেটিসদের যৌথ অংশীদারিত্বের তথ্য উগ্রবাদী সংস্কার আন্দোলনকে বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করলেও উদীয়মান বুর্জয়াদের ভীষণভাবে ক্ষুদ্র করে ৷ তারা এই আন্দোলনকে দমন করতে উদ্যোগই হন ৷ তারা বলেন ধর্ম সম্পন্নরূপে তাত্ত্বিক ও ঈশ্বর সংক্রান্ত বিষয় চার্জের সদস্যপদ বাধ্যতামূলক নয় ৷ এদের এই বক্তব্য ইংল্যান্ডের উগ্রবাদী সংস্কার আন্দোলন কে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত ও গতিশীল করে ৷
তবে উগ্রবাদীত সংস্কার আন্দোলন কিছুদিনের মধ্যেই ইউরোপীয় রাষ্ট্র নায়কদের রসানলের পতিত হয় এবং তারা এই আন্দোলনকে দমন করতে উদ্যোগী হয়ে ওঠে ৷ আসলে সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ দরিদ্র মানুষের অংশগ্রহণের পেছনে একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া কাজ করেছিল ৷ দরিদ্র নিপারিত কৃষকদের দৈনন্দিন জীবন যন্ত্রণা সম্পর্কে লুথার কেউ খুব বেশি উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি ৷ পরাক্রান্ত ধ্বনি বিত্তশালী শহরে মানুষরা বিনা পরিশ্রমকে সাধারণ মানুষকে সন্তানের বাধ্য করতো তাই খ্রিস্টীয় জাদুদের মতই তারাও কৃষকদের বিদ্বেষের প্রাপ্ত হয়ে উঠেছিল ৷ চিরন্তন এই এই মঞ্চনা আরও অধিক হয়ে উঠেছিল ৷ ১৬ শ ষোড়শ শতকে শুরুতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতি বেকারত্ব মজুরের হাসব বৃদ্ধি ইত্যাদি দেখা যায় ৷
Black Forest সামন্ততান্ত্রিক কর ভূমিদাস প্রথার অমানুষিক সংক্রান্ত বিধি ধানের সমবর্ধমান বেগার খাটুনি খাজনার মাত্রাবৃত্তি এই সব কিছুর মধ্যে দিয়ে যে অসন্তো সঞ্চারিত হয়েছিল তার ফলে উগ্রবাদী সংস্কার আন্দোলন বিশেষভাবে প্রভাবিত হয় ৷ কিন্তু ইউরোপীয় রাজন্যবর্গ অত্যন্ত দৃঢ় হস্তে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে এই আন্দোলনগুলিকে দমন করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন ৷ এক কথায় বলা যায় উগ্রবাদী সংস্কার আন্দোলন দমন হয় ইউরোপীয় রাজন্যবর্গের অতি সক্রিয় দমনামূলক কর্মসূচির দ্বারা ৷