চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সম্পকে একটি প্রথন্ধ লেখ, অথবা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের উদ্দেশ্য, ফলাফল ও প্রভাব গুলি আলোচনা কর। অথবা ,চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের কারণ কী ছিল? এই ব্যবস্থা কি তার উদ্দেশ্য সাধন করতে সফল হয়েছিল?
1793 খ্রী: বাংলা, বিহার, উড়িষ্যায় বন্দোবস্তের প্রবর্তন ভারতীয় ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার ইতিহাসে এক অতি উল্লেখযোগ্য ঘটনা । ১৭৬৫ খ্রী: কোম্পানীর দেওয়ানী লাভের পর থেকে বাংলার ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যে অনিশ্চয়তা ও পরীক্ষা নীরিক্ষা চলছিল এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্ণওয়ালিশ তার অবসান ঘটিয়ে বাংলার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
কোম্পানী ভূ-রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিং ১৭৭৭ খ্রী: পাঁচশালা বন্দোবস্ত এবং পরে ১৭৭৭ খ্রী: একশালা বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন ৷ এই সব ব্যবস্থার ফলাফল ছিল প্রবল হতাশা ব্যঞ্জক ও অসোন জনক । প্রতি বছর জমি নিলামে দেবার ফলে জমি থেকে বাৎসরিক আয়ের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না । প্রতি বছর ইজারাদার বদল হওয়ায় তারা জমির উন্নতির দিকে নজর দিত না, বরং যতবেশী সম্ভব রাজস্ব আদায়ের জন্য ইজারাদাররা প্রজাদের ওপর অত্যাচার চালাতো ৷ অনেক সময় দরিদ্র প্রজা নির্যাতনের ভয়ে জমি ছেড়ে পালাতো ৷ এই সব অসুবিধা দূর করে একটি সুষ্ঠ রাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তন অপরিহার্য হয়ে পড়ে ১৭৮৪ খ্রী: "পিটের ভারত শাসন আইন" ভূমি রাজস্বের ব্যপারে ক্ষতিকর পরীক্ষা নিরীক্ষা বন্ধ করে ৷ জমিদারদের সঙ্গে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কথা বলা হয় ৷ কোম্পানীর পরিচালক সভা ঘনঘন রাজস্ব ব্যবস্থার পরিবর্তনের নিন্দা করে এবং কর্নওয়ালিসকে বাংলায় স্থায়ী ভাবে ভূ-রাজস্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনের নির্দেশ দিয়ে গভর্নর জেনারেল হিসাবে ভারতে পাঠায় ৷
কর্নওয়ালিস ভারতে এসে এই ব্যপারে অনুসন্ধান চালায়। জমি বন্দোবস্ত সম্পর্কে এই সময় দুটি পরস্পর বিরোধী মতের উৎপত্তি হয়। রাজস্ব বিভাগের প্রধান 'স্যার জন শোর' টোডরমল থেকে মিরকাশিমের আমল অর্থাৎ 1582 খ্রীঃ থেকে 1763 খ্রী: পর্যন্ত বাংলার ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে জানান যে মোঘল আমলে জমিদারি ছিল জমির মালিক এবং তাদের পর সঙ্গেই জমি বন্দোবস্ত করা উচিত । তার মতে জমি জরিপ না করে প্রকৃতি রাজস্বের পরিমান স্থির না পারে জমিদারদের সঙ্গে বন্দোবস্ত করা ঠিক হবে না তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা কোম্পানির হবে ৷ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পরিবর্তে তিনি দীর্ঘমেয়াদী বন্দোবস্তের পক্ষে মত প্রকাশ করে ৷
অপর পক্ষে কোম্পানীর দলিল বিভাগের প্রধান "জেমন্স গ্রান্ট শোরের" মতের তীব্র বিরোধীতা করে বলেন যে, মোঘল আমল থেকে জমির প্রকৃত মালিক ছিলেন সরকার,জমিদার ছিল রাজস্ব সংগ্রাহক মাত্র ৷ সুতরাং সরকার,জমিদার বা প্রজা যার সঙ্গে ইচ্ছে তার সঙ্গেই বন্দোবস্ত করতে পারে । বহু আলোচনার পর লর্ড কর্নওয়ালিশ 1789 খ্রীঃ 10ই ফেব্রুয়ারি বাংলা ও বিহারে এবং 1790 ঔড়িষ্যার জমিদারদের সঙ্গে,তিনি 10 বছরের জন্য জমি বন্দোবস্তের বাথা ঘোষনা করে এই ব্যবস্থা 'দলশালা' বন্দোবস্ত নামে পরিচিত । এই সঙ্গে তিনি এ কথাও ঘোষনা করেন যে পরিচালনা সভার অনুমতি পাওয়া গেলে এই ব্যবস্থা চিরস্থায়ী করা হবেন ।
পরিচালক সভার অনুমোদন পাওয়ার পর 1793 খ্রী: দশশালা বন্দোবস্ত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে পরিণত হয় । পরবর্তীকালে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার ছাড়াও এই ব্যবস্থা বারানসী,উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ ও মাদ্রাস প্রেসিডেন্সি কোনো কোনো স্থানে এই ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয় । (i) জমিদার, তালুকাদাররা যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারকে খাজনা দিয়ে দেয় তাহলে তারা বংশানুক্রমিক ভাবে জমির সুখ ভোগ করতে পারবে ৷ (ii) জমিদারের ওপর ধার্য রাজস্ব চিরদিনের জন্য অপরিবর্তীত থাকবে। (iii) নির্দিষ্ট দিনে সূর্যাস্তের পূর্বে সমস্ত রাজস্ব সরকারী কোষাগারে জমা দিতে হবে অন্যথায় জমিদারি বাজেয়াপ্ত হবে, অথবা সমস্ত জমিদারি বা তার অংশ বিক্রি করে রাজস্ব মেটাতে হবে (iv) ভবিষ্যতে ক্ষরা,বন্যা, মহামারি বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও রাজস্ব মুকুব হবে না (v). ভবিষ্যতে জমিদারদের আয় বাড়লেও কোম্পানীর আদায়রত নির্ধারিত রাজস্বের পরিমান অপরীবর্তীয় থাকবে।
উদ্দেশ্যেঃ- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পশ্চাতে কোম্পানীর কিছু উদ্দেশ্য পূরণ করতে চেয়েছিল। যেমন – (১). বছরে নির্দিষ্ট সময়ে পূর্ব নির্ধারিত রাজস্ব আদায় করার লক্ষ্যে কোম্পানী চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তন ঘটায়। জমিদাররা সূর্যাস্ত আইনের হাত থেকে জমিদারি রক্ষার লক্ষ্যে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে তাদের নির্দিষ্ট পরিমান রাজস্ব জমা দিতে বাধ্য থাকেন , তার ফলে কোম্পানী নির্দিষ্ট সময়ে তার নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব আদায় সম্পর্কে নিশ্চিত থাকত ৷ (২). ভূমি রাজস্বের পরিমাণ স্থায়ী হলে সরকারের পক্ষে বার্ষিক আয়ব্যয়ের হিসাব বা বাজেট তৈরী করা সহজতর হবে ৷ (৩). কর্ণওয়ালিশ আশা করেছিলেন যে জমিতে স্থায়ীভাবে স্বত্ত্ব পেলে জমিদাররা কৃষির উন্নতির জন্য জমিতে বিনিয়োগ করবে । এতে দেশ সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে এবং এর ফলে প্রকৃত লাভ হবে কোম্পানি ৷
ছিয়াতরের মন্নন্তারের ফলে বাংলার বিপুল পরিমান জমি অনাবাদী হয়ে পড়েছিল । কর্ণওয়ালিশ আসা করেছিলেন যে জমিদারদের উদ্দোগ্যে এই সব জমি চাষযোগ্য আবাধযোগ্য হয়ে উঠবে । (৪). কৃষি ও শিল্প একে অপরের সঙ্গে জড়িত। কৃষির উন্নতির উপর শিল্প ও সেই দেশের আর্থিক নতি নির্ভরশীল ৷ (৫).জমিদার-সম্পদায় একটি স্থিতিশীল শক্তিহিসাবে কাজ করবে এবং গ্রামে শিক্ষ্যা, স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট প্রভৃতির ব্যবস্থা করে গ্রামীণ জীবনে প্রাণের সঞ্চার করবে (৬). অনেকে বলেন যে বাংলায় বিদ্রোহের হাত থেকে কোম্পানীকে রক্ষার জন্য জমিদারদের সাহায্য পাবার উদ্দেশ্যে কর্ণওয়ালিশ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন এবং জমিদারদের কোম্পানীর শাসনের সহযোগীতে পরিণত করেন । (৭). অনেকেই বলেন যে "চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের দ্বারা কর্ণওয়ালিশ বাংলার শিল্প বাণিজ্যকে ধ্বংস করে বাংলাকে একটি কৃষি নির্ভর দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন । তবে ডঃ বিনয় চৌধুরী এই বক্তব্যকে নসাৎ করে দিয়ে বলেন যে কর্নওয়ালিশের এরকম কোনো ইচ্ছা ছিল না । বরং তিনি মনে করতেন যে শিল্প বাণিজ্যের স্বার্থে কৃষির অগ্রগতি প্রয়োজন ৷
প্রভাব :- বংলা তথা ভারতের ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার ইতিহাসে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়, ৷ ওয়ারেন হেস্টিং এর আসল থেকে নানা পরীক্ষা নীরিক্ষার পর এই ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয় । এর পশ্চাত্যে ইংরেজ আমলাদের নানা ধরনের চিন্তাভাবনা ছিল এবং এর উদ্দেশ্য ছিল দেশবাসীর কল্যান স্বাধন ও অধিক পরিমাণে রাজস্ব আদায় । বাস্তব ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা পুরো- পুরিভাবে তার উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারে এর কিছু দোষ গুন ছিল । চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল ও কুফল নিয়েই ঐতিহাসিবাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রমেশ চন্দ্র দত্ত বলেন যে ,"দেড়শত বছর বিট্রিশ রাজত্বকালে এটাই একমাত্র ব্যবস্থা যা ভারতবাসীর অর্থনৈতিক কল্যান স্বাধন করেছে।" আবার স্মিথ বলেন যে,"চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করে লর্ড কর্ণওয়ালিস এক বিপ্লব ঘটায়" ৷ এই ব্যবস্থার সুফলগুলি হল-
- প্রথমতঃ - এই ব্যবস্থার ফালে সরকার তার বার্ষিক আয় সম্পর্কে সুনিশ্চিত হয় এবং এর ফলে তার বার্ষিক আয় ব্যায়ের হিসাব বা বাজেট তৈরী করা সহজতর হয়
- দ্বিতীয়তঃ - জমির ওপর জমিদারে স্বত্ব নিশ্চিত হওয়ায় তারা নিজ নিজ এলাকায় কৃষির উন্নতিতে সচেষ্ট হন এবং বন জঙ্গল ও অনাবাদি জমি চাষের অধীনে এনে কৃষি এলাকার সম্প্রসারণ ঘটান
- তৃতীয়তঃ - জমিদাররা গ্রামে বিদ্যালয় ও চিকিৎসালয় স্থাপন , গ্রামীণ পাঠাগার্ট নির্মাণ, পানীয় জলের জন্য পুষ্করিণী খনন প্রভৃতি ব্যবস্থা করার গ্রামীণ জনসাধারণের অনেক উপকার হয় ।
- চতুর্থতঃ - জমিদারদের উদ্যোগে গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র ও কুটীর শিল্পের উন্নতি হয় ।
- পঞ্চমতঃ- এই ব্যবস্থার ফলে সরকারের অনুগত একটি জমিদার শ্রেণীর উদ্ভব হয়, তারা উপলদ্ধি করেন যে সরকারের অস্তিত্বের ওপরেই তাদের অস্তিত্ব নির্ভরশীল ৷
- ষষ্ঠতঃ - "খাজনা নির্দিষ্ট হওয়ায় কৃষকদের সুবিধা হয়। ইজারাদারদের শোষণ ও ঘনঘন জমি থেকে উচ্ছেদের আশঙ্কা থেকে তারা রক্ষা পায় ।
এই ব্যবস্থা ক্রুটি মুক্ত ছিল না । তবে বলে রাখা ভালো চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে কু-ফল ছিল অনেকবেশী ৷ হোমস তার ' History of Indian Mutiny ' গ্রন্থে লিখেছেন – 'চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ছিলে একটি দুঃখজনক ভুল', Edward Thompson বলেন যে," চরম অজ্ঞতা থেকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সৃষ্টি হয়। এই ব্যবস্থার কু-ফল গুলি হল ---
- প্রথমতঃ- চিরস্থায়ী ব্যবস্থায় সরকারের বার্ষিক আয়ের পরিমাণ সুনির্দিষ্ট হলেও এরফলে ভবিষ্যতে ভূমি-রাজস্ব থেকে সরকারের আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা চির তবে বন্ধ হয়ে যায় । জমিদার প্রজাদের ওপর বেশী রাজস্ব চাপিয়ে আয় বৃদ্ধি করলে সরকারের কিন্তু আয় বৃদ্ধির আর কোনো সুযোগ রইল না ৷
- দ্বিতীয়তঃ-এই ব্যবস্থায় জমিদারদের দেওয়া রাজস্বের হার ছিল খুব বেশী সূর্যাস্ত আইন অনুসারে নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে সরকারী কোষাগারে রাজস্ব জমা দিতে না পারার জন্য বহু প্রাচীন জমিদার জমিদারী চ্যুত হন । এইভাবে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনে ২০ বছরের মধ্যে রচনার প্রায় অর্ধেক প্রাচীন জমিদার উচ্ছেদ হয়ে যান ৷
- তৃতীয়তঃ – চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে বহু প্রাচীন জমিদার তার জমি হারান এবং ধনশালী বনিক ও ব্যবসায়ীদের অনেকেই এই জমিদারী গুলি ক্রয় করে ৷ তারা জমিদারিকে বিনিয়োগের একটি ক্ষেত্র বলে মনে করতেন প্রজা কল্যাণ নয় ৷ প্রজাদের শোষনের মাধ্যমে অধিক মুনাফা অর্জনই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য ছিল ৷
- চতুর্থতঃ - জমিতে স্থায়ী স্বত্ব হওয়ায় সকলের মধ্যেই জমি ক্রয়ের জন্য এক ধরনের অদ্ভুত প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় ৷ শহরের ব্যবসায়ী, মহাজন,জমিদার, সরকারী আমলা ও সুদের কারবারী সকালেই জমিতে মূলধন বিনিয়োগ করতে থাকে ৷ এর ফলে জমির ওপর প্রবলচাপ পড়ে এবং আদালতে জমি সম্পর্কিত মামলা মোকদ্দমা বৃদ্ধি পায় ।
- পাঞ্চমতঃ - এই ব্যবস্থায় জমির গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় শিল্পপতি ও বণিকরা শিল্প বাণিজ্যে মূলধন বিনিয়োগ করা অপেক্ষায় জমিতে মূলধন বিনিয়োগ করতে থাকে । শিল্প বানিজ্যে মূলধন বিনিয়োগ প্রচন্ডভাবে হ্রাস পায় । এরফলে বাংলার শিল্প বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- ষষ্ঠতঃ – চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অন্যতম ফল হল কৃষির বাণিজ্য কারণ ৷ বণিক-মহাজনরা জমির মালিক হওয়ায় তারা ঋনগ্রস্থ কৃষককে ধানগমের পরিবর্তে অধিকতর লাভজনক অর্থকারী ফসল নীল, আখ, পাট, তুলা প্রভৃতি চাষে বাধ্য করে, এরফলে মহাজনের কাছে ঋনগ্রস্থ কৃষকের অন্নাভাব আরো বৃদ্ধি পায়।
- সপ্তমতঃ-চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সালে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় রায়ত বা কৃষক সম্প্রদায় । জমির ওপর জমিদারের মালিকানা স্বীকৃত হলেও কৃষকের কোনো মালিকানা ছিলনা ,তাই জমিদার কৃষকদের ইচ্ছামত উৎখাত করতে পারত ।
- অষ্টমতঃ - পূর্বে ফসলের মাধ্যমে রাজস্ব দেবার পদ্ধতি চালু ছিল ৷ ইংরেজ সরকার এই রীতি বাতিল করে নগদ অর্থে রাজস্ব প্রদানের রীতি চালু করে । এর ফলে প্রজারা ফসল বিক্রি করে সরকারী রাজস্ব মেটাতে বাধ্য হয় । প্রাকৃতিক দুযোগে ফসল না হলে ঋন করে সরকারের প্রাপ্য মেটাতেই হত ৷ এই অবস্থায় কৃষকে ধান দেবার জন্য গ্রামাঞ্চলে মহাজন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হয় । তারা চড়া সুদে কৃষককে ঋন দিত এবং ঋন শোধ করতে না পারলে ঋন গ্রস্থ কৃষকের জমি ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেবে । এই ভাবে ঋন গ্রস্থ কৃষকরা ভূমিহীন কৃষি শ্রমিকে পরিণত হয় ।
সুতরাং, পরিশেষে বলা যায় যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল গুলি শুধুমাত্র ইংরেজদের জন্যই ছিল । অন্যদিকে এর কুফল গুলি পড়েছিল ভারতীয় জনসমাজের উপর ৷ এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ভারতীয় কৃষকদের কোনো দুঃখ মোছানো হয়নি বরং তাদের দুঃখ বেড়েছিল । তাই সিরাজুল ইসলাম বিট্রিশ ভারতের প্রথম 'কালাকানুন' বলে বর্ণনা করেছেন ৷
সম্ভাব্য প্রশ্ন গুলি হলঃ-
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের উদ্দেশ্য কি ছিল চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রেক্ষাপট শর্তাবলী ও প্রভাব আলোচনা কর ৷
- লর্ড কর্নওয়ালিশ কর্তৃত্ব প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বিভিন্ন ফলাফল গুলি উল্লেখ কর
- অথবা,লর্ড কর্নওয়ালিস প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলাফল আলোচনা কর ৷
- কোন প্রেক্ষাপটে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তিত হয়েছিল এই বন্দোবস্তের ফলাফল লেখো
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পটভূমি কি ছিল চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের ফলাফল গুলি আলোচনা করো ৷
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত pdf
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত.pdf
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কে প্রবর্তন করেন
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কবে চালু হয়
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কে চালু করেন
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল ও কুফল
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কাকে বলে
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কারণ ও ফলাফল
- চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সম্পর্কে আলোচনা করো