কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র সম্পর্কে আলোচনা কর বা, ইতিহাসের উপাদান হিসাবে অর্থশাস্ত্রের ভূমিকা আলোচনা করো।
কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র :-
কোটিলীয় অর্থশাস্ত্র হল রাষ্ট্রনীতিবিষয়ক একটি গ্রন্থ । সংস্কৃত ভাষায় রচিত গ্রন্থটির রচয়িতা ছিলেন কৌটিল্য-যিনি বিষ্নুগুপ্ত এবং চাণক্য নামেও পরিচিত ছিলেন। কৌটিল্য হলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের অভিভাবক এবং প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তক্ষশিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছিলেন। যদিও অর্থশাস্ত্রের প্রকৃত রচয়িতা তিনি কি না, তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। এমনকি এই গ্রন্থটি কবে রচিত হয়েছিল সেটিও একটি বিতর্কিত বিষয়।
ঐতিহ্যগত ধারণা অনুযায়ী খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে অর্থশাস্ত্র রচিত হয়েছিল । কিন্তু এদের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে ঐতিহাসিকগণ খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক থেকে খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতক পর্যন্ত সময়কালকে নির্দিষ্ট করেছেন । অর্থশাস্ত্র ১৫টি অধিকরণ বা গ্রন্থে বিভক্ত, যার প্রথমটিতে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে । পরবর্তী ৮টি খণ্ডে বিভিন্ন রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে এবং বাকি খণ্ডগুলিতে বিবিধ বিষয়ের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয় । এটি লক্ষণীয় যে, অর্থশাস্ত্রে উল্লিখিত আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক আলোচনার ক্ষেত্রে ছোটো ছোটো রাজ্যের উল্লেখ করা হয়েছে, মৌর্য সাম্রাজ্যের ন্যায় বৃহৎ রাষ্ট্রের উল্লেখ করা হয়নি । সম্পূর্ণ আলোচনা হয়েছে একটি আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রকৃতি এবং বৃহৎ রাজার চরিত্র সম্পর্কে, তিনি কোন নীতির মাধ্যমে রাজ্যের সম্প্রসারণ করবেন ইত্যাদি বিষয় ।
মৌর্যযুগের ইতিহাস রচনায় অর্থশাস্ত্র বহুল পরিমাণে ব্যবহার করা হলেও কয়েকটি বিষয় আমাদের স্মরণে রাখতে হবে । সমগ্র অর্থশাস্ত্রের কোথাও মৌর্যবংশ, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। পাটলিপুত্রের উল্লেখ নেই । এই প্রশ্ন একটি তত্ত্বমূলক গ্রন্থ, যার কিছু কিছু বক্তব্য মৌর্য সাম্রাজ্যের চরিত্রের সঙ্গে মিলে যায় । তাই ঐতিহাসিক ট্রটম্যান অর্থশাস্ত্রকে মৌর্যযুগের উপাদান হিসাবে ব্যবহার করায় আপত্তি তুলেছেন।
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র সম্পর্কে আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য