স্বদেশী আন্দোলনের ধারা গুলি আলোচনা করো অথবা, স্বদেশী আন্দোলনের ধারা বলতে কী বোঝো

স্বদেশী আন্দোলনের ধারা গুলি আলোচনা করো অথবা, স্বদেশী আন্দোলনের ধারা বলতে কী বোঝো

স্বদেশী আন্দোলনের ধারা গুলি আলোচনা করো অথবা, স্বদেশী আন্দোলনের ধারা বলতে কী বোঝো

স্বদেশী আন্দোলনের ধারা গুলি আলোচনা করো  অথবা, স্বদেশী আন্দোলনের ধারা বলতে কী বোঝো

স্বদেশী আন্দোলনের ধারা গুলি

ঙ্গভঙ্গ বা স্বদেশী আন্দোলন তিনটি ধারা লক্ষ্য করা যায় - বয়কট ,স্বদেশী, জাতীয় শিক্ষা ৷ বিদেশি সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা শুরু করেন আর স্বদেশীর মাধ্যমে জাতি যেতে উঠে সৃষ্টির নব আনন্দে ৷ স্বদেশী ও বয়কট হল একই অস্তের দুই দিক ৷ স্বদেশী হল গঠনমূলক আর বয়কট হলো বর্জন কর বাতিল কর । ভগিনী নিবেদিতার মতে স্বদেশীয় একই জিনিসের দুটি প্রয়োজনীয় দিক একটিকে বাদ দিলে অন্যটি বিকশিত হতে পারে না ৷ জাতীয় শিক্ষা হলো সকল বিদেশি প্রভাব বর্জন করে জাতীয় আদর্শ ও জাতীয় নিয়ন্ত্রণাধীন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা ৷


আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

সরকারের বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনা কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির সকলের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম একটি কার্যকরী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে ৷ এই ব্যবস্থার নাম হলো বয়কট ৷ বলা হয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য শাসনের জন্য বয়কট নীতির প্রয়োগ ভারতের নতুন কিছু নয় ৷ ভারতীয় শিল্পের পুনরজীবনের জন্য ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে বয়কটের কথা বলা হয় ৷ বোম্বাইয়ের ভারতীয় মিল গুলির স্বার্থে ১৮৭৫,১৮৭৬,১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দের ম্যানচেস্টারের বস্ত্র বয়কটের আহ্বান জানানো হয় ৷ ১৮৮৩-৮৪ খ্রিস্টাব্দে ইলবার্ট বিল ও সুরেন্দ্রনাথের কারাবাস উপলক্ষে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সবার বয়কটের ডাক দেওয়া হয় ৷ ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের প্রাক্কালে বয়কট নতুন তাৎপর্য লাভ করে ৷ ড, রমেশ চন্দ্র মজুমদার বলেন যে, যদিও স্বদেশী আদর্শ পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ তবুও এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে, বয়কটের আদর্শ মানুষকে প্রথম অনুপ্রাণিত করে এবং স্বদেশে ধারণা আসে তারপরে ৷"


১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ১৩ জুলাই কৃষ্ণকুমার মিত্র সম্পাদিত সঞ্জীবনী পত্রিকার প্রথম সরকারের বিরুদ্ধে এক সামগ্রিক বয়কটের কথা ঘোষণা করা হয় ৷ বয়কট মন্ত্র প্রচারে সুরেন্দ্রনাথ ,মতিলাল ঘোষ এবং কালীপ্রসন্ন আন্দোলনের প্রথম পর্ব এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে ৷ ১৬ জুলাই খুলনা জেলায় বাঘের ঘাট শহরে একটি বিরাট জনসভায় বয়কটের প্রস্তাব গৃহীত করা হয় ৷ পরে কলকাতা, ঢাকা ,বীরভূম, নারায়ণগঞ্জ মনমোহন সিং এবং সমগ্র বাংলা ও তার ও ভারতের অন্যান্য স্থানে ও অনুকূল বয়কটের প্রস্তাব গৃহীত হয় ৷ জাতীয় নেতৃবৃন্দ বয়কট বলতে কেবলমাত্র বিলিতি বস্ত বা লবণ বয়কটকে বোঝায়নি তাদের কাছে বিদেশি পণ্য ,ভাষা, খেতাব, আইন, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইন অজ্ঞ থেকে পদত্যাগ এবং সামাজিক বর্জন ছিল বয়কট আন্দোলনের অঙ্গ ৷ বালগঙ্গাধর তিলক এর কাছে বয়কট হল একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার এবং এর দ্বারা ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়বে তিনি মনে করেন ৷


বয়কট আন্দোলন সফলভাবে বাংলায় ছাত্ররা পরম উৎসবের সঙ্গে অগ্রসর হয় ৷ ছাত্রদের চেষ্টায় বয়কট আন্দোলন এক প্রত্যক্ষ সংগ্রামের পরিণত হয় ৷ তারা বিদেশি কাগজ-কলমে না লেখার শপথ গ্রহণ করে এবং বিদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্জন করেন ৷ বিদেশে লবণ, চিনি ,কাপড় মত বিদেশি পণ্যবোধের সামনে তিনি পিকেটিং শুরু করেন ৷ ছাত্রদের উদ্যোগে এই আন্দোলন সফলতা অর্জন করেন ৷ তাই ছাত্ররা আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে সরকার দমন গুলো নীতি গ্রহণ করেন ৷ আন্দোলনে যোগদান কারীর অপরাধে ছাত্রদের ওপর জরিমানা চাপানো হয়, তাদের বৃত্তি বন্ধ করা হয়, স্কুল থেকে বিতাড়িত করা হয় , এমনকি স্কুলের সরাসরি অনুদান ও সরকারি অনুমোদন বাতিল করা হয় । সুরেন্দ্রনাথ তার আত্মজীবনীতে ছাত্রদের এই সক্রিয় ভূমিকার কথা সবিস্তারে আলোচনা করেছেন ।


বাংলায় নারী সমাজ এই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে ৷ ব্রাহ্মগঞ্জ শহর সর্বোচ্চ তারা বিনীতির শাড়ি ছেড়ে তাঁতের বোনা মোটা কাপড় ব্যবহার করতে শুরু করেন ,কাচের চুড়ি খুলে ফেলে এবং রান্নাঘরে বিদেশে লবনের প্রয়োগ নিষিদ্ধ হয় । এই প্রথম বাংলায় মেয়েরা সভা সমিতির ও পিকেটিংয়ে অংশগ্রহণ করে ৷ মহিলাদের মধ্যেই সরলা দেবী চৌধুরানী, হেমাঙ্গিনী দাশ, লীলাবতী মিত্র, নির্মলা সরকার বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল ৷ এদের পাশাপাশি ময়মনসিংহের সূচিহা বিদেশি জুতো ছাড়াতে ফরিদপুর ও কালীঘাটের বগুড়া কাপড় কাটতে, বরিশালের রাধুনীরা রান্নায় বিদেশে দ্রব্য ব্যবহার করতে অস্বীকার করে ৷ পুরোহিত সমাজ বলেন যে," বিদেশী বস্ত্র ব্যবহার করলে তারা বিবাহ করবে না ৷ ব্রাহ্মণ পণ্ডিতরা ঘোষণা করেন যে বিদেশি লবণ ও চিনি ব্যবহার স্বাস্থ্যবিরোধী ৷"


সূচনা পর্বে বয়কট আন্দোলন যে যথেষ্ট সফলতা অর্জন করেছিল সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই ৷ ১৯০৪ সালে সেপ্টেম্বর থেকে ১৯০৫ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাংলায় মফসম্বল অঞ্চল থেকে বিরতি বস্তায় বিক্রি করে ১৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল ৷ ১৯০৫ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর কলকাতায় ঘরোয়াড়ী বণিকসভা ম্যাজিস্ট্রেট বণিক সভাকে টেলিগ্রাম করে জানান যে বিলিতি কাপড়ের বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে । দুই থেকে চার দিনের মধ্যে বঙ্গভঙ্গ রদ না হলে পুজোয় বিলেতি কাপড় বিক্রি হবে না ৷সুতরাং তারা যেন ভারত সচিবের উপর চাপ দিয়ে বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব বাতিলের ব্যবস্থা করেন । ডক্টর সুমিত সরকারের লেখা থেকে জানা যায় যে ,"১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে বিগত বছরের তুলনায় সূচিপত্রের আমদানি ২২% কাপড় , কাপড় চোলের আমদানি ৪৪ % লবণ ১১ % সিগারেটের ৫৫ %, চামড়ার জুতোর আমদানি ৬৮ % কমে যায় । তবে একথা স্পষ্টই বলা যায় যে বয়কট আন্দোলন বিশেষ সফল হয়নি কালক্রমেই তা ভেঙ্গে পড়ে ৷


আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

স্বদেশে ছিল বয়কটের পরিপূরক ৷ বিলিতি বর্জনের সঙ্গে সঙ্গে স্বদেশী বিস্তার চলতে হবে ৷ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে পূর্বে আমেরিকা, আয়ারল্যান্ড ও চীনের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এই পদ্ধতি অনুসরণ করেছিলেন ৷ ভারতের স্বদেশী আন্দোলনের বহু পূর্বে ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে লোক হিতবাদী নামে পরিচিত ৷ মহারাষ্ট্রের গোপাল হরি দেশমুখ প্রথম স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন ৷ মহাদেব গোবিন্দ রানাডে আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠা ,স্বামী আনন্দ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে । বাংলাদেশের রাজনারায়ণ বসুর প্রেরণায় ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে নবগোপাল মিত্র হিন্দু মেলার মাধ্যমে স্বদেশী আদর্শ প্রচার করতে থাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বদেশী ভান্ডারের এবং সরলা দেবী লক্ষী ভান্ডার খোলেন ৷ সুতরাং দেখা গেছে যে স্বদেশের আদর্শ ভারত বা বাংলায় নতুন কিছু নয় । সেই সময় এইসব উদ্যোগ কার্যকরী না হলেও বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের স্বদেশী আদর্শের নতুন তৎপর দান করে ৷


স্বদেশীর প্রেরণায় এই সময় দেশে বহু নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠে থাকে ৷ বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গলক্ষ্মী মিল ও মোহিনী মিল ,আমেদাবাদ ও বোম্বাই তাঁত শিল্প গড়ে ওঠে ৷ স্বদেশী মূলধনের দেশের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক ওষুধ, জাহাজ ,কোম্পানি এবং গেঞ্জি মোজা, দেশলাই, সিগারেট, সাবান, চিলি, চিনি ,চামড়া কালী ,কাগজ ,চিনামাটির বাসন ও মিথ শিল্পের প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হতে থাকে ৷ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল কেমিক্যাল কেবলমাত্র এই নয় স্বদেশী উৎপাদন যাতে উন্নততর হয় সেই দ্রব্য বিক্রির জন্য বাংলায় শহর ও গ্রামে বহু স্বদেশী দোকান খোলা হয় ৷ স্বদেশের আদর্শ সফল করতে যুবকরা সক্রিয় ভূমিকা পালন গ্রহণ করেছিল ৷ তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বদেশী স্বদেশী পণ্য বিক্রি করতো ৷ এই কাজে সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত সার্কুলার সোসাইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল ৷


স্বদেশী আন্দোলন কে কেন্দ্র করে দেশের সাহিত্য ও শিল্পচর্চা নতুন রূপ ধারণ করে ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন, অতুলপ্রসাদ সেন , কালিপ্রসন্ন সিংহ প্রমুখ কবি নাট্যকার প্রবন্ধকার সাহিত্যের ক্ষেত্রে এক নব উন্মাদনার সৃষ্টি করেন ৷ ভগিনী নিবেদিতার প্রেরণায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নন্দলাল বসু প্রমুখ শিল্প চেতনায় ও শিল্পকর্মের স্বদেশী প্রভাব প্রত্যক্ষ হয় ৷ বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রেও এক যুগান্তর আসে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ও ডঃ প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ছাড়াও এই যুগের প্রেসিডেন্ট কলেজ কে কেন্দ্র করে এক দল তরুণ ও প্রতিশ্রুত বৈজ্ঞানিক এর আবির্ভাব হয় ৷ তারা হলেন রসিকলাল দত্ত, নীলরতনধর, জ্ঞানেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ৷


বিদেশি নিয়ন্ত্রণ ও বিদেশি ভাবধারায় পরিচালিত বিদেশে শিক্ষা পদ্ধতি শিক্ষিত ভারতবাসীর সঙ্গে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি । এই শিক্ষা ব্যবস্থায় তাদের কাছে মানুষত্ব মাত্রক হৃদয়হীন ও যান্ত্রিক বলে মনে হতো ৷ স্বদেশী আন্দোলনের বহু পূর্বে উনিশ শতকে চল্লিশা দশকে গোড়া থেকে বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখা যায় এবং ভারতের বিভিন্ন অংশে ভারতীয় আদর্শ নিয়ন্ত্রণ কে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয় ৷ যেমন তত্ত্ববোধিনী পাঠশালা, রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মাচার্য, সতীশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ডন সোসাইটি এই আদর্শে প্রতিষ্ঠিত হয় ।


বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় কার্লাইরা সার্কুলার, জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের ইন্ধন যোগায় ৷ জানরাই স্বদেশী আন্দোলনের মূল শক্তি ৷ এই আন্দোলন থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখার উদ্দেশ্য সরকার এইসব সার্কুলার জারি করেন ৷ ছাত্রদের স্বদেশে সভা সমিতির যোগ দেন , বন্দেমাতারাম ধ্বনি দেওয়া প্রভৃতির ওপর নিষেধাজ্ঞ আরোপ করেন ৷ এই নির্দেশ লংঘন করলে প্রত্যাশ্রয় বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার শিক্ষকদের চাকরি থেকে অপসারণ এমনকি বিদ্যালয়ের অনুমোদন প্রত্যাহার প্রকৃতির ব্যবস্থা করা হয় । সরকারের এই সার্কুলার বিরুদ্ধে ছাত্রনেতা প্রণব বসুর নেতৃত্বে কলকাতায় আন্টি সার্কুলার সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ স্বদেশী প্রচার, স্বদেশী পণ্য বিক্রয় স্বদেশী আন্দোলনের উৎসব দান এবং বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা এই সোসাইটির বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল ৷


সরাসরি অনাচারের প্রতিবাদে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ৫ই নভেম্বর রংপুরে সর্বপ্রথম জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপিত হয় ৷ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ১৬ই নভেম্বর কলকাতায় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠনের একটি প্রস্তাব গৃহীত হয় যেখানে কয়েকজন বিদ্বান ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠান গঠনের উদ্দেশ্যে কয়েক লক্ষ টাকা দানের প্রতিশ্রুতি দেন এবং ১৯০৬ খ্রিস্টাব ১১ মাস সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বজনিত এক সভায় ৯২ জন সদস্য নিয়ে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয় ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রমূখ এই সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৷ ১৪ই আগস্ট এই পরিষদের অধীনে অরবিন্দ ঘোষ কে অদক্ষ করে বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ ঢাকা , দিনাজপুর ময়মনসিংহ, মালদহ, স্থানে অনুরূপ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বাংলায় প্রায় ২৫ টি মাধ্যমিক এবং ৩০০ কিছু বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে ওঠে এবং এর অধিকাংশ ছিল পূর্ববঙ্গে বাংলার বাইরে তিলক,লালা লাজপথ রায় প্রমুখ ও নেতৃবৃন্দ জাতীয় শিক্ষার আদর্শ সমর্থন করলে বোম্বাই , মাদ্রাজ, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব প্রভৃতি স্থানে বহু জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ৷


আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

১৯১০ খ্রিস্টাব্দের পর জাতীয় শিক্ষার জনপ্রিয়তা কমতে থাকে ৷ কারণ জাতীয় বিদ্যালয়গুলির রাজনৈতিক কারণেই প্রতিষ্ঠিত হয় ৷ শিক্ষা বিস্তারের দিকে নেতৃবৃন্দদের আগ্রহ ছিল কম । এমনকি এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে ছাত্রদের চাকরি পাওয়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না ৷ ড, অমলেশ ত্রিপাঠী বলেন যে," কলকাতায় বিদ্যালয়ের গোলামখানা খুলে বৃত্ত নিয়ে তাদের দাম ছিল না যা বাঙালির দের পক্ষে উপেক্ষা করার উপায় ছিল না ৷ " পরিশেষে বলা যায় যে," স্বদেশী আন্দোলন থেকে পরবর্তীকালে জাতীয় আন্দোলন লাভবান হয় ৷ ঐতিহাসিক বিপণচন্দ্র তাই বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলন ভারতীয় জাতীয়তাবাদের এক বিরাট বৈপ্লবিক পদক্ষেপ আখ্যা দিয়েছেন ৷"




সম্ভাব্য প্রশ্নঃ

  • বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের বিভিন্ন ধারা গুলি গুলি আলোচনা আলোচনা করো। 

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟