কনফুসীয় মতবাদ সম্পর্কে লেখ।

কনফুসীয় মতবাদ সম্পর্কে লেখ।

 কনফুসীয় মতবাদ সম্পর্কে লেখ।

কনফুসীয় মতবাদ সম্পর্কে লেখ।

প্রাক আধুনিক যুগে চীনের সামাজিক জীবন এবং রাজনৈতিক সংগঠনের কনফুসিয় আদর্শের মূল দীর্ঘপথ ৷ যেমন নীতিবিদ্যা ও নৈতিকতার তথ্য ছিল তেমনি রাজনৈতিক কর্মের ও নির্দেশক ছিল ৷ চীনের কনফুসিয় মতাদর্শ চীনা সরকারের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ মূলত এই তাদেরই সৃষ্টি করা ৷ রাজনৈতিক মতাদর্শ হিসাবে কনফুসীয় তত্ত্ব চীনের দুই হাজার বছর প্রভাব বিস্তার করেছে ৷ জীবন দর্শনের বৃহৎ ক্ষেত্র যে প্রশান্ত গুণাবলীর ওপর কনফুসিয়বাদের জোর দেওয়া হয় তা হলো ধৈর্যশান্তি সমঝোতার পূর্বপুরুষ । বিদ্বানদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং কখনো মানবতাবাদ বা ঈশ্বরকে নয় মানুষকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কেন্দ্রে স্থাপন করেছে ৷

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

কনফুসিয়বাদ অনুসারে রাষ্ট্র হল একটি বৃহৎ পরিবার যা পিতৃতন্ত্র ও রাজভক্তির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে ৷ রাষ্ট্র এমন একটি আইন মন্ত্রণালয় যার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তির অধিকার রক্ষা করা ৷ রাষ্ট্রের স্বার্থ পদ্ধতি এই মতাদর্শ অনুসারে শিক্ষা উপদেশের মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে এবং রাজাকে অবশ্যই নৈতিক গুণাবলীর অধিকারী হতে হবে । কনফুসিয় বলেন রাজা যখন ধার্মিক হন তখন কেউ তার প্রতি অশদ্ধাশীল হতে সাহসী হবে না, রাজা যখন ন্যায়বিচার ভালোবাসা তখন জনগণ অন্যায় করতে সাহস পাবে না কনফুসীয় বাদের প্রাসঙ্গিকতা চীনে আজও বর্তমান ৷

উনবিংশ শতাব্দীর রাজনৈতিক সংগঠন মূলত স্বৈরতান্ত্রিক সংস্কার যা উত্তরাধিকার সূত্রে চীন এবং হান বংশ থেকে এসেছে ৷ কনফুসিও মতাদর্শের সরকার হিসেবে নৈতিক ভাবাদর্শে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং ধ্রুপদী সাহিত্যে বিদগ্ধ পন্ডিতের দ্বারা পরিচালিত সাম্রাজ্যবাদী চীনা শাসনের শেষ পর্বে কনফুসীয় মতাদর্শকে আরও বেশি করে আঁকড়ে ধরার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় ৷ বড় অভিজাত ও পরিবার গুলির পরিবর্তে নানা প্রান্তে ছড়ানোর ছোট সম্ভ্রান্ত শ্রেণীকে শাসনকার্যে নিযুক্ত করা হয় ৷ সরকার ও সমাজে রাজনৈতিক ক্ষমতা তথা প্রশাসন পরিচালনার বিভক্ত সমাজ অপ্রতিদ্বন্দ্বিত হলে তার মূল সরকারের ভৃত ছিলেন ৷ আমলা রূপে সংঘটিত হলেও তাদের প্রত্যক্ষ সদস্যকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং ইচ্ছামত ও শাস্তি প্রদানের অধিকার সম্রাটের ছিল ৷

বাস্তবে সম্রাটের বিরুদ্ধে সংঘটিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমরা নানা বাধার সম্মুখীন হন ৷ প্রথমতঃ কোন কর্মচারী বা পদাধিকারীকে তার নিজের জায়গায় কাজ করতে দেওয়া যেত না। দ্বিতীয়তঃ তার কার্যকলাপের মেয়াদ এত কম ছিল যে তারা সেখানে থিতু হয়ে থাকতে বসতে সময় পেতো না। তৃতীয়তঃ কোন পধাধিকারী কোন বিভাগের পুনর দায়িত্ব দেওয়া হতো না ৷ দায়িত্ববণ্ডিত হতো একে অপরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ৷ চতুর্থতঃ সম্ভবত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেন্দ্রের সম্রাটের গোচরে আনা হতো ৷ যা চীনা প্রশাসন ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ৷

কনফুসীয় মতবাদ অনুসারে সম্রাটকেই রাষ্ট্র ভাবাহত ৷ চীনের জন্য আলাদা দেশত্ববোধ ছিল না শাসক বংশকেই চীন এবং চীনকে সভ্য পৃথিবী ভাবা হতো । চিনারা তাদের রাষ্ট্রের বাইরে যে তারা যে আরো শিক্ষা সংস্কৃতি ও সভ্যতা আছে সে কথা মানতেই চাইত না । প্রাচীন যুগ থেকেও সম্রাট ছিলেন রাজা ও পুরোহিত ৷ স্বর্গের পুত্র ও সম্রাট ও স্বর্গ ও পৃথিবীর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনকারী স্বর্গের আদেশ অনুসারে তিনি একমাত্র শাসন করার অধিকারী , যতদিন তিনি সদাচার এবং সু সরকার স্থাপনে সক্ষম হবে ৷ কনফুসীয় আদর্শে উৎপীড়ন ও বিবাদের কোন স্থান নেই ৷ চীনারা বল প্রয়োগের পরিবর্তে যুক্তি মধ্যস্ততা সমঝোতাই বিশ্বাসী ছিলেন ৷

কনফুসীয়বাদে বিরোধী যেসব মতাদর্শ চিনে প্রভাব বিস্তার করেছিল তাদের মধ্যে তাওবাদ অন্যতম ৷ তাওবাদীদের মতে সব সরকারি অত্যাচারের যন্ত্র এবং কোন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নৈতিক গুণাবলীর পতনের সূচনা করে ৷ তাওবাদীরা শান্তিবাদী ছিলেন এবং জনগণকে যুদ্ধের নিষ্ফলতা সম্পর্কে শিক্ষা দিতেন ৷ তারা কনফুসীয়বাদে বর্জ্য লৌকিকতা অনুমোদন করতেন না । তাওবাদীরা নৈতিক আদর্শের চেয়ে রাজনৈতিক আদর্শবাদী বিশ্বাসী ছিল ৷

চিনা ইতিহাসের সূচনা লগ্ন থেকেই চীন সরকার প্রশাসনের অন্যতম অঙ্গরুপে আমলাতন্ত্রের বিকাশ হয় ৷ একদিকে রাজকর্মচারী ও অন্যদিকে সম্ভ্রান্ত শ্রেণী অন্যদিকে সাধারণ জনগণ এই দুই স্তরের মধ্যে স্পষ্ট প্রভেদ ছিল ৷ সাধারণ জনগণ ও প্রাচীন শাসক শ্রেণীর এই বৈপরীত্য এক অভিজাত ঐতিহ্য সূচনা করেছিলেন যা কনফুসীয় বাদের মাধ্যমে লালিত হয়ে বর্তমান যুগে সঞ্চারিত হয় ৷ কনফুসিবাদ ছিল আমলাদের আদর্শ আমলা শাসনশ্রেনির উত্থান হয়েছিল প্রাচীন চীনে বিকেন্দীভূত শাসনতন্ত্রের অবসানের পর ৷ সাম্রাজ্যবাদী শাসকের হাত ধরে কনফুসিবাদে শাসকের আচরণের উপর নির্ভর করে গুরুত্ব আরোপের রাজকর্মচারী রূপে বৃদ্ধ সমাজের গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছিল ৷ তারা এই সরকারের নৈতিক প্রকৃতি ধারা এবং তারাই পারবেন স্বর্গের অনুশাসনকে ধরে রাখতে ||

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ কনফুসীয় মতবাদ সম্পর্কে লেখ। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟