প্রাচীন ভারতের ইতিহাস পুনর্গঠনে বিভিন্ন প্রকার উপাদানের তুলনামূলক আলোচনা কর

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস পুনর্গঠনে বিভিন্ন প্রকার উপাদানের তুলনামূলক আলোচনা কর

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস পুনর্গঠনে বিভিন্ন প্রকার উপাদানের তুলনামূলক আলোচনা কর 

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস পুনর্গঠনে বিভিন্ন প্রকার উপাদানের তুলনামূলক আলোচনা কর


প্রাচীন ভারতবর্ষের ইতিহাস পুনর্গঠনের অনেক উপাদান রয়েছে এবং তাদের গুরুত্ব বিভিন্ন প্রকার। এইসব উপাদানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সাহিত্যিক রচনা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং বিদেশি পর্যটকদের বিবরণ উপরিউক্ত নানাবিদ ও ইতিহাসিক বিবরণের তুলনামূলক বিচারে তাদের আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয় করে ৷ সর্ব প্রথম লিপির প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে আলোচনা প্রয়োজন লিপি একপ্রকার ক্ষতিত হয়ে গেলে আর সেগুলি কোন রকম পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা সম্ভব হতো না। এর ফলে লিপির সভ্যতা অটুট থাকতো ঐতিহাসিক উপাদান হিসাবে এর গুরুত্ব স্বাভাবিকভাবে সর্বাধিক ৷


আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন


লিপির প্রাপ্তিস্থান থেকে রাজা ও সম্রাটের সাম্রাজ্য সীমার ধারণা পাওয়া যায় মৌর্য সম্রাট অশোকের লিপির প্রার্থী স্থান থেকেই তার সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বিদেশে লিপি থেকেও ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনার উপাদান পাওয়া যায় লিপিতে ব্যবহৃত বস্তু,লিপির খোদায়ের ,কেনতা,ভাষা ,অক্ষর,প্রভৃতি থেকে সেই যুগের রাজ্যসীমার সম্পর্কে জানা যায়।


লিপির পরের গুরুত্ব দিক দিয়ে বিদেশি লেখকদের বিবরণ স্থান উল্লেখযোগ্য অবশ্যই কোন কোন বিদেশি লেখকদের রচনার অতিরঞ্জন এবং সময় সময় কাল্পনিক বিষয়বস্তু লক্ষ্য করা যায় ৷ আলেকজান্ডারের সঙ্গে যে সকল গ্রীক ভারতবর্ষে এসেছিল তাদের মধ্যে অনেকেই ভারতবর্ষ সম্বন্ধে বিপদ বিবরণ রচনা করেছেন বস্তুত তাদের রচনা থেকে ইউরোপের ভারত সম্পর্কে ধারণা বিস্তার লাভ করে ৷



গ্রিক বীর আলেকজান্ডার মৃত্যুর কুড়ি বছর পর সেলুকল মেগাস্থিনিস কে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজাধিরাজ দূত হিসাবে পাঠান। মেগাস্থিনিস এর 'ইন্ডিকা' নামক গ্রন্থে মৌর্য যুগের ভারত বর্ষ সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিয়েছেন এই গ্রন্থ থেকে মৌর্য শাসনকাল এবং চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি এক অতি সুন্দর ও নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ রচনা করেছিলেন এ কথা অনস্বীকার্য আর দুজন গ্রিক দূত মৌর্য রাজসভায় এনেছিলেন। জৈনক গ্রীক লেখক  'পেরিপ্লাস' নামক গ্রন্থে প্রাচীন ভারতীয় বাণিজ্য বন্দর ও সামুদ্রিক বাণিজ্য সম্পর্কে বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন ৷ টলেমির 'ভূগোল' গ্রন্থ থেকে ভারতবর্ষের ভৌগোলিক বিবরণ পাওয়া যায় এইসব রচনা গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদান ।



তুলনামূলক গুরুত্বের বিচারে তৃতীয় স্থান স্বাভাবিকভাবেই দিয়েছে সাহিত্যের রচনায় প্রাচীন ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে বিবেচক ভারতবর্ষের প্রাচীনতম সাহিত্য,বেদ, পুরাণ,রামায়ণ ,মহাভারত প্রাচীন ভারতের সমাজ রাজনীতি অর্থনীতি ও ধর্ম সম্পর্কে সুন্দর ধারণা দেয় ৷ তবে এই এর মধ্যে কোনটিও সঠিক ইতিহাস হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয় কিন্তু এগুলি থেকে তখনকার ইতিহাস সম্পর্কে কিছু উপাদান সংগ্রহ করা সম্ভব হয় ৷



জ্যোতিষ শাস্ত্রের ওপর লেখা একটি সংহিতা পতঞ্জলি ও পানিকর ব্যাকরণ ইত্যাদি ইতিহাস পুনর্গঠন করতে সাহায্য করে ৷ কৌটিল্যর অর্থশাস্ত্র,বানভট্টের "হর্ষচরিত"  ,সন্ধা কর নন্দীর "রামচরিত" , আঞ্চলিক কলহনের "রাজতরঙ্গিনী",জয় সিংহের "কুমার পালচরিত"৷ সমসাময়িক কালের ইতিহাস রচনার গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদানের সমৃদ্ধ ৷



পরবর্তী উপাদান হিসেবে  মুদ্রার স্থান ৷ প্রাচীন ভারতীয় রাজাদের অসংখ্য মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে এইসব উদ্ধার ব্যবহৃত ধাতু সেগুলি নির্মাণ কৌশল মুদ্রার গায়ে আঁকা সন,তারিখ,গতি,প্রকৃতি থেকে সেই সময়কার ধাতু শিল্পের উন্নতি,মুদ্রা নীতি,মুদ্রণ আঁকা,দেবদেবীর মূর্তি থেকে সমকালীন রাজা ধর্ম ইত্যাদি জানা যায় ৷ মুদ্রায় উত্তীর্ণ তারিখ থেকে সেই রাজার রাজত্বকাল নির্ণয় করা সম্ভব হয়।


মুদ্রার পর আসে দালান,প্রসাদ,সৌধ,মন্দির,স্তুপ প্রভৃতি যা ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য উপাদান। এগুলি নির্মাণ কৌশল আকৃতির কারুকার্য স্থাপত্য রীতি ভাস্কর্য প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে পুনর্গঠন এর ক্ষেত্রে এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার ৷ চৈত্র গান্ধারের ভাস্কর্য শিল্প অমরাবতী নিদর্শন ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে উল্লেখযোগ্য ৷

এই সকল উপাদানগুলি ছাড়া মাটির নিচ থেকে এবং মাটির উপর থেকে প্রতিনিধিত্রটা আরো নানারকম উপাদান সংগ্রহ করেছেন ফলে বিভিন্ন উপাদানের সাহায্যে প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনা করা সম্ভব হয়েছে, তুলনামূলক গুরুত্ব আলোচনা করে বলা যায় যে,ইতিহাস হল পুনর্গঠনের কোন উপাদান অপরিহার্য নয় বরং সবটাই নির্ভর করে প্রাপ্ত উপাদানের উপর খনন কার্য পাওয়া ৷ তাই তাকে ক্রমস্ত করে এগোতে হয় ৷ ঐতিহাসিক বিচারে তাদের গুরুত্ব আপেক্ষিক ৷

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟