ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত তিনটি প্রধান নীতি বা,ভিয়েনা সম্মেলন (1815 খ্রি., Congress of Vienna) কী এবং এর মূল উদ্দেশ্য ও গৃহীত নীতিগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো?

 ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত তিনটি প্রধান নীতি বা,ভিয়েনা সম্মেলন (1815 খ্রি., Congress of Vienna) কী এবং এর মূল উদ্দেশ্য ও গৃহীত নীতিগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো?


ভিয়েনা সম্মেলন তিনটি প্রধান নীতি Vienna Cong (1815)


নেপোলিয়ন ইউরোপের মানচিত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন । তাঁকে এলবা দ্বীপে নির্বাসন ও পরাজিত করার পর ইউরোপীয় রাজ্যগুলির পুনর্গঠন, সীমানার পুনর্বিন্যাস এবং অন্যান্য নানা সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনাতে ইউরোপের প্রায় সব দে উদ্দেশ্যে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনাতে ইউরোপের প্রায় সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান সহ নেপোলিয়নের পতনে বিশিষ্ট ভূমিকা গ্রহণকারী চারটি রাষ্ট্র অস্ট্রিয়া, রাশিয়া, প্রাশিয়া ও ইংল্যান্ড (Big Four) এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে মিলিত হয়। এই সম্মেলন ভিয়েনা সম্মেলন নামে পরিচিত- (১৮১৫)। মূলত এটি ছিল সমগ্র ইউরোপ তথা সমগ্র বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন।


দ্বৈত রাজতন্ত্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর, ভিয়েনার বলহাউসপ্ল্যাটজে (আজ অস্ট্রিয়ান ফেডারেল চ্যান্সেলরের সরকারি বাসভবন)।


একাধিক রাষ্ট্র অংশগ্রহণ করলেও এই চারি প্রধান শক্তি ভিয়েনা সম্মেলনের ভাগ্য নিয়ন্তা হয়ে ওঠেন। সম্মেলন সম্পাদক জেনৎস বলেন যে, "বিজয়ীরা একত্রিত হয়েছিল বিজয়ের ফসল কে ভাগ করে নেয়ার জন্য।" যাক তাদের সামনে যে সমস্যাগুলি ছিল- (ক) নেপোলিয়ন কর্তৃক বিভি রাষ্ট্রগুলিকে নতুন করে সংগঠিত করা, (খ) নেপোলিয়ন কর্তৃক বিতাড়িত পুরাতন রাজবংশগুলিকে পুনর্বাসিত করা, (গ) ফ্রান্স সম্পর্কে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ঘ) পোল্যাণ্ডের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা, (ঙ) নেপোলিয়ন-বিরোধী চুক্তিগু মর্যাদা দেওয়া এবং (চ) ফরাসী-বিপ্লবের ভাবধারায় যাতে ইউরোপের বিপ্লবের আগুন না ছড়ায় তার ব্যবস্থা করা। এই সমস্ত সমস্যা গুলোর সমাধান কল্পে নেতৃবৃন্দ কয়েকটি নীতি গণ করেন- 


ন্যায্য-অধিকার নীতি:- এই নীতি অনুসারে নেপোলিয়নীয় যুগে বিতাড়িত বৈধ রাজবংশগুলিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়। ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন। বুরবোঁ বংশের অষ্টাদশ লুই। স্পেন, সিসিলি ও নেপল্স-এ বুরবোঁবংশীয় রাজারা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হন ৷হল্যান্ড-এর সিংহাসন ফিরিয়ে হয় অরেঞ্জবংশকে, সার্ভিনিয়া, পিয়েডমন্টে স্যাভর রাজবংশ পুনঃস্থাপিত হয়। পোপ তাঁর রাজ্য ফিরে পান এবং জার্মানীতে পুনরায় অস্ট্রিয়ার আধিপত্য স্থাপন করা হয়। তবে এই নীতি কিন্তু সর্বক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য হয়নি। নেতৃবর্গ নিজ পরিচালিত হয়েছিলেন



ক্ষতিপূরণ নীতি:- নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে ইওরোপের বহু রাষ্ট্র, বিশেষত ইংল্যান্ড, রাশিয়,অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া, সুইডেন প্রভূত ক্ষতি স্বীকারে বাধ্য হয়েছিল। ভিয়েনা সম্মেলনে গৃহীত ক্ষতিপুরণ নীতি অনুসারে তারা বেশ কিছু অঞ্চল নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয় অস্ট্রিয়া উত্তর ইতালীতে লম্বার্ডি ও ভেনেশিয়া, পোল্যান্ডের অংশবিশেষ, টাইরল ও ইলিরিয়ান প্রদেশগুলি লাভ করে। মধ্য হ্যাপস্বার্গ ইতালীর পার্মা, মডেনা ও টাস্কেনিতে অস্ট্রিয়ার হ্যাপস্বার্গ বংশের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এয় নবগঠিত জার্মান কনফেডারেশনের নেতৃত্বও অস্ট্রিয়ার হাতে আসে। প্ৰাশিয়া পায় স্যাক্সনির উত্তরাংশ, পোজেন, থর্ন, ডানজিক, রাইন পশ্চিম পোমেরেনিয়া। রাশিয়া পায় ফিনল্যান্ড, বেসারাবিয়া এবং পোল্যান্ডের বৃহদংশ।




শক্তিসাম্য নীতি:- ভিয়েনা-সম্মেলন শক্তিসাম্য- নীতিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। যাতে ভবিষ্যতে ইউরোপের অন্য রাষ্ট্রকে আক্রমণ করতে না-পারে বা কোন একটি দেশ অধিক শক্তি সঞ্চয় করে ইউরোপের শান্তি নষ্ট না-করে, সেদিকে নজর রেখেই এই নীতি রচিত হয়েছিল। বলা যে পারে, ভিয়েনা-সম্মেলনের প্রধান সিদ্ধান্তসমূহ শক্তিসাম্যের ধারণা থেকেই উদ্ভূত। এই নীতির প্রয়োগ করে, (১) ফ্রান্সের সীমান্তকে বিপ্লব-পূর্ববর্তী রেখায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। (২) ফ্রান্সে মিত্রবাহিনীর সৈন্য মোতায়েন করা হয়। (৩) ফ্রান্সের উত্তর-পূর্বে হল্যান্ডকে শক্তিশালী করা হয়। (৪)ফ্রান্সের পূর্ব-সীমান্তে রাইন অঞ্চলকে জার্মানীর সাথে যুক্ত করে পূর্বদিকে ফ্রান্সের অগ্রগতি রোধ করা হয়। (৫) দক্ষিণ-পূর্বে সুইজারল্যান্ডের সাথে ফ্রান্সের জেলাকে যুক্ত করা হয়। এইভাবে ফ্রান্সের চারদিকে একটি রাষ্ট্র-বলয় সৃষ্টি করা ৷






About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟