সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ও তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আধ্যেচনা করো। অথবা- পুনা চুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করো।

 সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ও তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আধ্যেচনা করো। অথবা- পুনা চুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করো।


সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ও তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আধ্যেচনা করো। অথবা- পুনা চুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করো।


 দ্বিতীয় গোলটেবিল বার্থ হওয়ার পর যখন আইন- অমান্য আন্দোলন পুনরায় শুরু হয়ে তাহা আবার প্রবল আকার ধারণ করে তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রামসে ম্যাকডোনাল্ড ১৯৩২ সালে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষণা করেন। দমননীতির সাথে সাথে বিভেদ সৃষ্টি করে ভারতের জাতীয় আন্দোলনকে ধুংস করাই ছিল এই নীতি প্রবর্তনের প্রধান উদ্দেশ্য।


সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতির মাধ্যমে ভারতবাসীকে এক জাতি হিসাবে বিবেচনা না করে বিভিন্ন সম্প্রদায় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই নীতিতে বলা হয় যে, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান, বর্ণ হিন্দু, অনুন্নত শ্রেণীর হিন্দু প্রভৃতি প্রত্যেক সম্প্রদায় আইনসভায় পৃথক নির্বাচনের অধিকার পাবে। এভাবে ভারতে সামগ্রিক বিভেদ সৃষ্টির পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেও বিভেদ সৃষ্টির পথ প্রশস্ত করা হয়। গান্ধিজি এই সাম্প্রদায়িক নীতির ঘোষণায় প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন। তিনি হিন্দু সমাজের এই বিভেদ বন্ধ করতে পুনার সারবেনা জেলে বন্দি অবস্থায় আমরণ অনশন শুরু করেন। তাঁর এই অনশনে আইন-অমানা আন্দোলন চাপা পড়ে যায় এবং তাঁর শারীরিক অবস্থার দিকেই সকলের মনোযোগ স্থাপিত হয়। এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে দেখা পুনা চক্তি।


এরূপ পরিস্থিতিতে গান্ধিজির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে হিন্দু সমাজের অনুন্নত শ্রেণির নেতা ভীমরাও আম্বেদকর এগিয়ে আসেন। দীর্ঘ আলাপ- আলোচনার পর গান্ধিজি ও আম্বেদকরের মধ্যে পুনা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।


পুনা চুক্তির শর্ত হিসাবে স্থির হয়- 

  1. হিন্দু অনুন্নত সম্প্রদায়ের পৃথক নির্বাচনের নীতি পরিত্যাগ করে হিন্দুদের যৌগ নির্বাচন গৃহীত হয়। 
  2. বিভিন্ন প্রদেশের আইনসভায় অনুন্নত সম্প্রদায়ের জন্য বাঁটোয়ারা নির্ধারিত ১১টি আসন দ্বিগুনের বেশী বৃদ্ধি করে ১৬৮টি করা হয়। 
  3. কেন্দ্রীয় আইনসভাতেও তাদের জন্য ১৮ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকার কথা বলা হয়।


 পুনা চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর দিন গান্ধিজি অনশন ভঙ্গ করেন। গান্ধিজির এই কার্যকলাপকে জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসু সমালোচনা করে বলেছেন, একটি গৌণ বিষয়কে মুখ্য করে গান্ধিজি জাতীয় আন্দোলনের চরম ক্ষতি করেছেন। ঐতিহাসিক সুমিত সরকারের মতে, এর ফলে আইন-অমান্য আন্দোলন ক্রমশ পিছনে চলে যায়।

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟