প্রাচীন বাংলার রাঢ়-সুক্ষ্ম এবং গৌড় অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিচয় দাও
রাঢ় ও দক্ষিণ রাঢ়। জৈনদের প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে উত্তর রাঢ়কে বজ্জভূমি বা বজ্রভূমি এবং দক্ষিণ রাঢ়কে সুৰ্ভভূমি বা সুক্ষ্মভূমি বলা হত। উত্তর ও দক্ষিণ রাঢ়ের মাঝের সীমানা ছিল অজয় নদ। দক্ষিণ রাঢ় ছিল বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী এলাকা। মহাভারতে ও কালিদাসের কাব্যে এই রাঢ়-সু্যু সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ভাগীরথী এবং কাঁসাই (কংসাবতী) নদীর মাঝে সমুদ্র পর্যন্ত বিরাট এলাকা এর অন্তর্গত ছিল।
- উত্তর রাঢ়: আজকের মুরশিদাবাদ জেলার পশ্চিমভাগ, বীরভূম জেলা, সাঁওতাল পরগনার একাংশ এবং বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার উত্তরভাগ নিয়ে উত্তর রাঢ় গঠিত হয়েছিল।
- দক্ষিণ রাঢ়: আজকের হাওড়া, হুগলি ও বর্ধমান জেলার বাকি অংশ (কাটোয়া মহকুমার উত্তরভাগ ছাড়া) এবং অজয় ও দামোদর নদের মাঝের এলাকা নিয়ে দক্ষিণ রাঢ় গঠিত হয়েছিল।
- গৌড়: প্রাচীন ও মধ্যযুগে গৌড় বলতে একটি জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হত। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে বরাহমিহির-এর রচনা থেকে জানা যায় যে, আজকের মুরশিদাবাদ, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার পশ্চিমভাগ গৌড়ের অন্তর্গত ছিল।
- কর্ণসুবর্ণ: খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে শশাঙ্কের আমলে ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে আজকের মুরশিদাবাদ জেলাকে নিয়ে মূল গৌড় গড়ে উঠেছিল, যার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। গৌড়ের সীমানা উত্তরে পুণ্ড্রবর্ধন থেকে দক্ষিণে উৎকল (ওড়িশার) উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। খ্রিস্টীয় অষ্টম-নবম শতকে গৌড় বলতে সমগ্র পাল রাজ্যকে বোঝানো হত।
প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন ভাগ/অঞ্চলের নাম ও অবস্থান
- পুণ্ড্রবর্ধন - বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহি ও পাবনা।
- বরেন্দ্র - ভাগীরথী ও করতোয়া নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল।
- বঙ্গ - পদ্মা ও ভাগীরথী নদীর মধ্যবর্তী ত্রিভুজাকৃতি অঞ্চল।খ্রিস্টীয় একাদশ-দ্বাদশ শতকে বক্তা হল বাংলাদেশের ঢাকা-বিক্রমপুর, ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল।
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ প্রাচীন বাংলার রাঢ়-সুক্ষ্ম এবং গৌড় অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিচয় দাও The Rada-Sukshma and Gaur regions of ancient Bengal এই নোটটি পড়ার জন্য
