আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় নারীধারী (ক্ষেত্র টিকনাথ) তত্ত্ব ব্যাখ্যা করো। Explain the Narimandhari (Kshetra Tiknath) theory in the discussion of international relations.

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় নারীধারী (ক্ষেত্র টিকনাথ) তত্ত্ব ব্যাখ্যা করো।

 আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় নারীধারী (ক্ষেত্র টিকনাথ) তত্ত্ব ব্যাখ্যা করো।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় নারীধারী (ক্ষেত্র টিকনাথ) তত্ত্ব ব্যাখ্যা করো। Explain the Narimandhari (Kshetra Tiknath) theory in the discussion of international relations.

উত্তর:- আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একটি নবীনতম তত্ত্ব হল নারীবাদী তত্ত্ব। এক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন যে, সামাজিক তত্ত্ব হিসেবে নারীবাদ কখনোই নতুন তত্ত্ব নয়। তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচ্চা বিষয় হিসাবে নারীবাদী তত্ত্ব সাম্প্রতিককালের সংযোজন। ১৯৮০ দশকের পর থেকেই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় নারীবাদী তত্ত্ব গুরুত্ব অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নারীবাদী তত্ত্বটির মুখ্য প্রবক্তাগণ হলেন জেত্র টিকনার, মেরী উলস্টোনক্র্যান্ট প্রমুখ।



* মূল বক্তব্য: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নারীবাদী তাত্ত্বিকদের মতানুযায়ী চিরাচরিতভাবে করে পশ্চিমী বাদের কন্দ্র ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনা কতকগুলি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকে। এগুলি হল বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্পর্ক যুদ্ধ, শাস্তি, নিরাপত্তা, সহযোগিতা, কুটনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, প্রচার এবং সামরিক বাহিনী। নারীবাদী তাত্ত্বিকগণ বলেন এ বিষয়গুলি আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। এক্ষেত্রে জেত্র টিফনার-এর বক্তব্য উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন বাস্তববাদী তাত্ত্বিকরা নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এর ফলে বাহ্যিক আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং ঘরোয়া পরিবেশ সুরক্ষিত হয়। কিন্তু এর ফলে নারীদের সব সময়ই দমিয়ে রাখা হত। তাছাড়া আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নারীবাদী তাত্ত্বিকরা এই ধারণা পোষণ করেন যে যদিও যুদ্ধ পুরুষদের দ্বারাই সংঘটিত হয় এবং তারাই এতে অংশগ্রহণ করে। এর ফলে নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷



ক্ষমতা প্রসঙ্গে ভো টিকলার: জেত্র টিকনার মরগেন খাউয়ের শক্তি তত্ত্বে বর্ণিত ছয়টি নীতিকে নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সমালোচনা করেন এবং এর পাশাপাশি বিকল্প ছয়টি নীতিকে তুলে ধরেন। টিকনার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনায় ক্ষমতার সংজ্ঞা পরিবর্তন করেন। তার মতে সমাজের ঐক্যবদ্ধ শক্তি স্বীকৃতি ও প্রয়োজনই হল ক্ষমতা। ক্ষমতাকে কেবল কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যম হিসেবে দেখলেই চলবে না। এই কারণে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আলোচনার ক্ষেত্রে বিন্দ সহযোগিতা বিষয়ক সাবস্থাকে আরও কল্যাণকর করার কথা বলা হয়।


পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা বর্জন: টিকলার বলেন যে আন্তজাতিক সম্পর্ক বিষয়ক আলোচনাকে যথাযথভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রথমেই পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাভাবনাকে বর্মন করে বা ঐসব সংকীর্ণতা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে উদ্যার মরদোলাউয়ের ৬৪টি নীতিকেই কেবল বাতিল করেননি ৷ তিনি জাতীয় স্বার্থের ধারণাফেও বর্জন করেছেন। এককথায় জাতীয় স্বার্থ বলতে মরগেনথাউয়ের 'জাতীয় ক্ষমতা'কে বুঝিয়েছেন। কিন্তু টি-কনার আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে 'জাতীয় স্বার্থ' বলে উল্লেখ করেছেন।


সমালোচনা: নারীবাদী তত্ত্ব বিভিন্ন দিক থেকে সমালোচিত হয়েছে।

> প্রথমত, সমালোচকরা বলেছেন নারীবাদী তাত্ত্বিকরা তত্ত্বের দিক থেকে যতটা অবদান রেখেছেন প্রয়োগের দিক থেকে তারা এগিয়ে যেতে পারেননি।


> দ্বিতীয়ত, সমালোচকরা বলেছেন নারীবাদীরা নিজেদের তত্ত্বকে মহিমান্বিত করার পরিবর্তে পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিষোম্পার করেছেন। এটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি।


> তৃতীয়ত, সমালোচকরা বলেছেন নারীবাদীগণ অতি মাত্রায় আমলাতান্ত্রিক আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।


> চতুর্থত, সমালোচকদের মতে নারীবাদী সার্বভৌমত্বের অবসানের কথা বলে ভুল করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পুরুসতান্ত্রিকতার অবসান ঘটাতে ন্যায়ের ভিত্তিতে বিশ্ব সরকার গড়তে হবে। কিন্তু তা এখনও সম্ভব হয়ে ওঠেনি।


মূল্যায়ন: নারীদের অবস্থা এবং তাদের দাবি তুলে ধরার ক্ষেত্রে নারীবাদী তত্ত্ব হল সাম্প্রতিককালের একটি অন্যতম তত্ত্ব। এই তত্ত্বটির ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে লিঙ্গ-সংবেদনশীল গবেষণা সংঘটিত করা এবং তত্ত্ব প্রণয়ন করা সম্ভব হয়েছে। এই তত্ত্বটি পরিবারের অভ্যন্তরে, রাষ্ট্রে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমাজে নারীদের শোষণের ওপর আলোকপাত করে। এই তত্ত্বটির প্রভাবের ফলে অনেক দেশ নারীদের উন্নতিকল্পে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।


About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟