ঠান্ডা যুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতি আলোচনা করো বা. তুমি কী মনে করো ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান ঘটেছে Discuss post-Cold War world politics.?

ঠান্ডা যুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতি আলোচনা করো বা. তুমি কী মনে করো ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান ঘটেছে?

 ঠান্ডা যুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতি আলোচনা করো বা. তুমি কী মনে করো ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান ঘটেছে?

ঠান্ডা যুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব রাজনীতি আলোচনা করো বা. তুমি কী মনে করো ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান ঘটেছে Discuss post-Cold War world politics.?


উত্তর:- ঠাণ্ডা যুদ্ধের অবসান নিঃন্দেহে এক যুগান্তকারী ঘটনা। ঠাণ্ডা যুদ্ধের অবসানের ফলে পুরানো আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় জায়গায় এক নতুন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার উদ্ভব হয়েছে। নতুন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তনগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল-


>(১) বহুফেন্দ্রবাদ: ঠাণ্ডা যুদ্ধের অবসানের পর বিশ্বে দ্বিমেরুতার অবসান ঘটেছে। ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময় একদিকে ছিল আমেরিকা এবং অন্যদিকে ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এই দুই সুপার শক্তির অধীনে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার

দেশগুলি মোটামুটি দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। এই দ্বিমেরুত্য বিশ্ব রাজনীতিকের উত্তেজিত করে রাখত। ঠাণ্ডা যুদ্ধের অবসানের পর বিশ্ব রাজনীতিতে দমতার একাকিমা কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে আমেরিকা, চীন, জাপান, ভারত প্রভৃতি দেশ হয়ার ক্ষমতার কেন্দ্র। তাই বলা যায় দ্বিমেরুতা আজ বহুমেরুতায় বা বন্ধ্যকেন্দ্রবাদে পরিণাদনা হয়েছে।


>(২) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাধান্য বৃদ্ধি: সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গনের পাতা দ্বিমেরুবাদ শেষ হয়ে যায়। বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকার একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হয়। আজকের দিনে তার এতটাই আধিপত্য যে তাকে কেউ চ্যালেঞ্জ জানাতে সাহস পায় না। তাই আমেরিকা যখন ইরাক আক্রমণ করল তখন ব্রিটেন তাকে স্বাগতায় জানাল। এমনকি রাশিয়াও কোনো প্রতিবাদ করল না। অন্য কিছু রাষ্ট্র প্রতিবাদ করলেও। তাদের প্রতিবাদের ডাসা ছিল দুর্বল ও ক্ষীণ। শুধু সামরিক ক্ষেত্রে নায়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও আমেরিকার একক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বব্যাঙ্ক ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা আন্তর্জাতিক অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। এইসব সংস্থা আমেরিকার কব্জায়।


>(৩) পুজিবাদের প্রভাব বৃদ্ধি: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং সেখান থেকে সমাজতন্ত্রের বিদায় এবং অনাদিকে পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সমাজতন্ত্রের বিপর্যয়ের। ফলে দেখা যাচ্ছে যে সমগ্র বিশ্বে পুজিবাদের প্রভাব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা বিশ্বে পুজিবাদের প্রসার ঘটছে। ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পুজিবাদী ব্যবস্থার কিছু কিছু বৈশিষ্ট। যেমন মুক্ত বাণিজ্য এবং বেসরকারীকরণ প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়ে উঠেছে।


>(৪) অর্থনৈতিক ঠাণ্ডা লড়াই ঠাণ্ডা যুদ্ধের পরবর্তী বিশ্বে অর্থনৈতিক ঠাণ্ডা লড়াইয়ের সূচনা হয়েখে। পূর্বেকার রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত ঠাণ্ডা যুদ্ধের স্থান অধিকদর। করেছে অর্থনৈতিক ?'ও! যুদ্ধ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে এক অর্থনৈতিক প্রতিযোগিত শুরু হয়েছে। বিশ্বের ধনী ও দরিদ্র দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েই চলেছে। দরিদ্র দেশগুলি এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।


>(৫) ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের উদ্ভব ঠাণ্ডা যুদ্ধের পরবর্তীকালে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের উদ্ভব। বিভিন্ন কারণে বহু রাষ্ট্র খণ্ড বিখণ্ডিত হয়ে অনেক ছোট ছোট রাষ্ট্রের উদ্ভবে সহায়তা করেছে। যেমন- চেকোশ্লোভাকিয়া ভেঙে গিয়ে চেক প্রজাতন্ত্র ও শ্লোভাক প্রজাতন্ত্র, যুগোশ্লাভিয়া ভেঙে গিয়ে ক্রোয়েশিয়া ও স্লোভানিয়া প্রভৃতি।


>(৬) পারমানবিক অস্ত্র ভাণ্ডার: ঠাণ্ডাযুদ্ধের সময় বিশ্বে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি হলেও আজ নিরাপত্তাহীনতা পুনরায় দেখা দিয়েছে এবং তা আরও বেশি মাত্রায়। তৃতীয় বিখোর একাধিক দেশ পারমানবিক অস্ত্র প্রস্তুতের প্রযুক্তিবিদ্যার অধিকারী এবং তারা তা প্রস্তুত করে চলেছে। আর এই অবস্থা পারমানবিক অস্ত্রের ব্যবহারজনিত পরাহীনতা ও আডয় নথ দেশকে গ্রাস করছে। ভারত ও পাকিস্তান যে পারমানবিক এপত্তাহীনতা ও আতঙ্ক বহু দেশকে গ্রাস করছে। ভারত ও পাকিস্তান যে পারমানবিক মান্তের ভাণ্ডার গড়ে তুলেছে তার প্রমাণ তারা দিয়েছে। উভয় দেশই দাবি করছে যে এটি অস্ত্র তারা কেবল আত্মরক্ষার প্রয়োজনে কবহার করবে, কিন্তু শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে উপাকিস্তানের জঙ্গি মনোভাবে। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া পারমানবিক অস্ত্রের বিরাট জত ভাণ্ডার তৈরি করেছে। পারমানবিক অস্ত্র যাদের নেই তারা এবং যাদের আছে ভাবাও আজ নিরাপত্তাহীনতার শিকার।


>(৭) বিশ্বায়ন: বিশ্বকে এখন বলা হয় গ্লোবাল ভিলেজ। প্রতিটি দেশের স্বাতন্ত্র্য ভূখণ্ড থাকলেও এককভাবে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। আজকের দিনে কোনো দেশকে অর্থনৈতিক দরজা বন্ধ করে রাখলে চলবে না। বিশ্বের বাজারের দরজা খুলে দিতে কবে। বিশ্বায়নের ফলে জাতি রাষ্ট্রের সার্বভৌমিতা সংকটের মধ্যে পড়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বা যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের ফলে এক বৈপ্লবিক উন্নতি ঘটেছে।



বিশ্ব রাজনীতিতে মতাদর্শগত ঠাণ্ডা লড়াইয়ের অবসান ঘটেছে। মতাদর্শগত ইঠাতা লড়াইয়ের স্থান দখল করেছে অর্থনৈতিক ঠাণ্ডা লড়াই। তাই কেউ কেউ বলেছেন ঠাণ্ডা লড়াইয়ের নতুন রূপ হল অর্থনৈতিক ঠাণ্ডা লড়াই । তাই ঠাণ্ডা লড়াইয়ের অবসান ।

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟