গুপ্তযুগে নগরের অবক্ষয় ও সামন্ততন্ত্র। Decline of the city and feudalism during the Gupta period.

গুপ্তযুগে নগরের অবক্ষয় ও সামন্ততন্ত্র।

 গুপ্তযুগে নগরের অবক্ষয় ও সামন্ততন্ত্র।

গুপ্তযুগে নগরের অবক্ষয় ও সামন্ততন্ত্র। Decline of the city and feudalism during the Gupta period.


গুপ্তযুগে অগ্রহার ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে জমির ওপর ব্যক্তিগত মালিকানার ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ব্রাহ্মণ ও অন্যান্য ধর্মীয় কেন্দ্রে নিষ্কর ভূমিদান শুধুমাত্র জমির অধিকারের হস্তান্তর করেছিল তাই নয়, জমির প্রশাসনিক এবং আইনি অধিকারেরও হস্তান্তর যেছিল। রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব বিভাজিত হয়েছিল এই পর্বে। এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যের নিরিখে একদল ঐতিহাসিক গুপ্তযুগে ভারতবর্ষের রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সামন্ততন্ত্রের উদ্ভবের কথা বলেছেন। যদের মধ্যে ডি. ডি. কৌশাম্বী ও রামশরণ শর্মা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। রামশরণ শর্মা তাঁর "The Indian Feudalism' গ্রন্থে ভারতীয় সামন্ততন্ত্রের বিভিন্ন দিকের আলোচনা পরেছেন।


আলোচ্য পর্বে ভূমিদানভিত্তিক অর্থনীতির সূচনার ফলে উৎপাদন অনেকটাই স্থানীয় চাহিদাভিত্তিক হয়ে পড়ে। এই উৎপাদন ব্যবস্থার কেন্দ্র ছিল গ্রাম। গ্রামকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক রেখার ফলে ভারতের প্রাচীন প্রসিদ্ধ নগরগুলি দ্রুত অবক্ষয়ের সম্মুখীন হয়েছিল বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন ঐতিহাসিক রামশরণ শর্মা তাঁর 'Urban Decay in Indid গ্রন্থে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নগরায়নের গতি খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতকে ব্যাহত হয় এবং এই সময় থেকে নগরগলির জনবসতি ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। গুপ্তসাম্রাজ্যের পতনের ১০০ বছরের মধ্য এদেশে আগত চিনা পর্যটক সুয়ান সাও-এর বিবরণের ওপর তিনি এক্ষেত্রে অনেকটা নির্ভর করেছেন। এর ভিত্তিতে তিনি দেখাতে সক্ষম হয়েছেন যে, বেশকিছু গরত্বপূর্ণ নগর তিনি অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, এর পাশাপাশি কৃষিরও ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল যা যেমন-বৈশালী, কৌশাম্বী, শ্রাবন্তী প্রভৃতি দ্রুত অবক্ষয়ের পথে ধাবিত হয়েছিল। তবে পরবর্তীকালের নগরায়নের পথ প্রশস্ত করেছিল।




তাই বলা যায় যে, সামন্ততন্ত্রের একটি দিক হিসেবে নগরের অবক্ষয় যেটি ড. শর্মা কর্তৃক আলোচিত তা সর্বজনগ্রাহ্য নয়। তিনি নিজেই বিষয়টিকে পুরোপুরি মেনে নেননি। আলোচ্য পর্বে গ্রামীণ কষিভিত্তিক অর্থনীতির সুবাদে ব্যাপক কৃষিজ উৎপাদন হয়েছিল। এর থেকে প্রাপ্ত উদ্বৃত্ত বাণিজ্যের সহায়ক হয়েছিল। সপ্তম শতকের পর থেকে ইসলাম ধর্মের যত প্রসারের সূত্র ধরে ভারতের বাণিজ্যিক ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছিল ।পরবর্তীকালে এই নতুন বাণিজ্যকেন্দ্রগুলি এক-একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟