আত্ম শক্তির আদর্শ স্বদেশী আন্দোলনে কি প্রভাব ফেলেছিল
লর্ড কার্জনের বাংলা ভাগ পরিকল্পনা বাঙ্গালীদের ভাগ করতে পারেনি, দুর্বলও করতে পারেনি । বরং বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে তারা আরো ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী হয় ৷ বস্তুত পক্ষে শক্তিশালী হয় লর্ড কার্জনের নীতি উদীয়মান বাঙালি সত্তাকে উদ্বেগ করেছিল ৷ যে সত্তা সংকীর্ণগোষ্ঠীর স্বার্থ শ্রেণী সার্থকতা আঞ্চলিক বেড়াজালের ঊর্ধে ছিল ৷ লর্ড কার্জনের স্বৈরাচারী চিন্তাভাবনা বাঙ্গালীদের আত্মশক্তি নির্ভর চিন্তার জন্ম দিয়েছিল ৷ জন্ম দিয়েছিল স্বদেশেই জোট ৷ ঐতিহাসিক রজতকান্ত রায় মনে করেন বঙ্গ সমাজে রাজনৈতিক কাঠামো এই ঘটনা বিপ্লবের চেয়ে কোন অংশে কম নয় ৷
১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ১৭ জুলাই কলকাতার এক বিরাট জনসভায় সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রিটিশ দ্রব্য ও প্রতিষ্ঠান বয়কটের ডাক দেন ৷ ৭ই আগস্টে কলকাতায় উপহলেই আর এক জনসভায় বয়কটের ডাক দেওয়া হয় সেই সঙ্গে আত্মশক্তি নির্ভর স্বদেশী আন্দোলনের সূচনা হয়, আতশক্তির উদ্দেশ্য হিসেবে স্বদেশে দ্রব্যের ও প্রতিষ্ঠানের বিকল্প সাধন ৷ ঐতিহাসিক সুমিত সরকারের মতে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে চরমপন্থী বাড়ার মধ্যে দুটি প্রধান শ্রদ্ধারা লক্ষণীয় হয়ে ওঠে তার একটি ছিল অরাজনৈতিক গঠনমূলক স্বদেশী ৷ এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয় আত্মশক্তি উদ্যোগে বিকাশ সাধনের উপর ৷
প্রথমদিকে বাংলা চরমপন্থীদের গঠনমূলক কর্মসূচি গ্রহণের দিকেই ব্রিটিশ নিত্য প্রয়োজনীয় দুবড়া দিয়ে তৈরির আদর্শবাদী উদ্যোগ জাতীয় শিক্ষা স্বদেশী আন্দোলন এবং গ্রামীণ সংগঠন এই উদ্দেশ্যে বেঙ্গল কেমিক্যাল স্থাপিত হয় ৷ সতীশ চন্দ্র মুখার্জী প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের শুভ সূচনা হয় ৷ পরে প্রতিষ্ঠিত হয় ডন সোসাইটি ৷ এই সময় রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা হয় ৷ এইভাবে রাজনৈতিক আন্দোলনের আগেই আত্মশক্তি জাগরণের আন্দোলন হয় ৷ এর মধ্যে গুরুত্ব দেওয়া হয় ধর্মীয় পুনর্জাগরণ রনকবাদ কে ৷ কারণ আশা করা হয় হিন্দু ধর্মই সমস্ত জাতির ঐক্যের বন্ধন রূপে হয়ে উঠবে ৷