জাতীয় শিক্ষা পারিষদ সম্পর্কে আলোচনা কর অথবা,'ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন' বলতে কী বোঝো?
স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম একটি দিক ছিল বয়কট ৷ বিদেশি পণ্য, কর্মসংস্থা বয়কট করার পাশাপাশি বিদেশে নিয়ন্ত্রিত ও বিদেশী ভাবধারার প্রচলিত বিদেশী শিক্ষা পদ্ধতি শিক্ষিত ভারতবাসীর মনে প্রানে গ্রহণ করতে পারেন নি । যার পরিণতিতে স্থাপিত হয় জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ১১ই মার্চ সতীশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ও সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিতীতে ৯২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয় ৷ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ এর প্রসারে ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকান্ত রায় চৌধুরী ,রাজা সুবোধ চন্দ্র মল্লিক অর্থ দান করে । বিদেশে শিক্ষা সংস্কৃত বর্জন করে জাতীয়তাবাদের ভাবধারা বজায় রেখে মাতৃভাষা ও ইংরেজির মাধ্যমে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা দান এবং শিক্ষার্থীদের দেশ বোধের মনোভাব জাগিয়ে তোলাই ছিল জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রধান উদ্দেশ্য ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ স্থাপিত হয় যেমন কারিগরি শিক্ষার উন্নতির জন্য তারকনাথ মালিকের উদ্যোগে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে আবার প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ অরবিন্দ ঘোষ এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন ৷ এই কলেজে কলা বিজ্ঞান বাণিজ্য কারিগরি ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা চলে ৷ জাতীয় শিক্ষা পরিষদের তত্ত্বাবধানে ঢাকা, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, মালদহ জেলার ২৫ টি মাধ্যমিক ও ৩০০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয় । তাছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় শিবনাথ শাস্তি ,সুভাষচন্দ্র মল্লিক ,রাজবিহারী বসু বিপিনচন্দ্র পাল প্রমূখ বিশিষ্ট বক্তব্য জাতীয় শিক্ষা নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৷
জাতীয় শিক্ষার আদর্শ বাংলার বাইরে ও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে তিলক রাজপথ রায় প্রমুখ নেতৃবৃন্দ জাতীয় শিক্ষা আদর্শ সমর্থন করলে বোম্বাই মাদ্রাজ উত্তর প্রদেশ যুক্ত প্রদেশ পাঞ্জাব প্রভৃতি স্থানে বহু জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপিত হয় ৷ কিন্তু তা সত্বেও ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের পর জাতীয় শিক্ষা কারণে ব্যর্থ হয়েছিল ৷ যেমন এই প্রতিষ্ঠানের প্রদয় ডিগ্রী গুরুত্বহীন হাওয়ায় অভিভাবকরা ব্রিটিশ শাসনের প্রতি আকৃষ্ট হন ৷ আর্থিক সংকট জনিত কারণে এর কাজকর্ম বাধা প্রাপ্ত হয় স্বল্প বেতনজনিত কারণে বহু শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের নেতিবাচক মনোভাব এবং চরমপন্থী বিরোধিতা এর উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করে তুলে অর্থাৎ অর্থভাব পরিকাঠামগত ত্রুটির জন্য জাতীয় শিক্ষা পরিষদ বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি ৷ তবে পরিষদে প্রথম জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে কার্যকরী কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল ৷ অমলেশ ত্রিপাঠি বলেন,"কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় গোলামখানা হলেও বিশ্বের বাজারে তাদের ডিগ্রীর দাম চাকরি অন্ত্যপান বাঙালির পক্ষে উপেক্ষা করার উপায় ছিল না ।"
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ জাতীয় শিক্ষা পারিষদ সম্পর্কে আলোচনা কর অথবা,'ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশন' বলতে কী বোঝো? এই নোটটি পড়ার জন্য
