সাতসুমা বিদ্রোহ সম্পর্কে একটি টীকা লেখ।

সাতসুমা বিদ্রোহ সম্পর্কে একটি টীকা লেখ।

 সাতসুমা বিদ্রোহ সম্পর্কে একটি টীকা লেখ।

সাতসুমা বিদ্রোহ সম্পর্কে একটি টীকা লেখ।
১৮৫৩ খ্রিঃ কমোডোর পেরী জাপানের বাণিজ্য বন্দর বিদেশীদের নিকট উন্মুক্ত করার দাবি নিয়ে ইয়োকোহামা উপসাগরে উপস্থিত হবার পর জাপানের প্রকৃত শাসনকর্তা সোগানদের সম্মুখে এক গভীর ও জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কারণে সোগানদের অবস্থ্য ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়তে থাকে। এবং দেশের আইনত শাসনকর্তা জাপানের সম্রাটের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য একটি ব্যাপক আন্দোলন সংগঠিত হতে শুরু করে। এদের মধ্যে অন্যতম ছিল সাতসুমা বিদ্রোহ

জাপানে ইতিমধ্যে এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটে, যার বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রভাব খুবই গভীর। সোগান বিরোধী দল এবং জাপানের পশ্চিম অঞ্চলের সামন্তগণ বিদেশীদের বিরুদ্ধে তীর বিদ্বেষ পোষণ করত। এমনকি সোগানের নিজস্ব গোষ্ঠী টকুগাওয়া পরিবারের সামন্তদের মধ্যে সোগানের পদের জন্য অন্তর্দ্বন্দ্ব ছিল এবং তাদের অনেকেই বিচ্ছিন্নতা নীতি রক্ষা করার পক্ষপাতী ছিল।

এইরূপ পরিস্থিতিতে ইয়েদোর মিকাডোর দলভুক্ত সামন্তগণ সুবিধানুযায়ী নীতি অনুসরণ করতে শুরু করে। একদিকে সম্রাটকে তারা জানিয়ে দেয় যে, দেশের সামরিক অন্যান্য শক্তি উপযুক্ত হলেই তারা বিদেশীদের জাপান থেকে বিতাড়িত করবে এবং অপরদিকে ইয়েদো শহরে বসবাসকারী বিদেশী কনসালদের তারা জানায় যে, জনসাধারণের বিরাগ উদ্রেক না করে তারা যতদূর সম্ভব চুক্তির প্রতিটি শর্ত মেনে চলার চেষ্টা করবে।

 কিন্তু ১৮৬২ খ্রিঃ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইংল্যান্ডের সাথে জাপানের সাতসুমা গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ সংঘর্ষের সূচনা হলে সোগানের অপসংস্কৃতি অনিবার্য হয়ে ওঠে। জাপানের রীতিনীতি সম্পর্কে অনভিজ্ঞ অশ্বপৃষ্ঠে আরূঢ় মিস্টার রিচার্ডসন নামে জনৈক ইংরেজ ও তার তিনজন সঙ্গী সাতসুমা গোষ্ঠীর অধিনায়কের সম্মানে রাজপথ পরিত্যাগ করে পথপার্শ্বে আশ্রয় গ্রহণ না করার অপরাধে ক্ষুব্ধ জাপানী সেনাগণ মিস্টার রিচার্ডসনকে হত্যা করে।

 ইংরেজগণ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করলে সোগুনদের পক্ষে এই দাবি পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ব্রিটিশ সরকার বাধ্য হয়ে তখন একটি নৌবহর প্রেরণ করে সাতসুমা গোষ্ঠীর প্রধান কর্মকেন্দ্র কাগোসিমা শহরের উপর বোমা বর্ষণ করে। এই ঘটনার পর জাপানের অধিবাসীরা তাদের সামরিক দুর্বলতার কথা সমাকরূপে উপলব্ধি করে বিদেশীদের সম্পর্কে পূর্বের মত পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। অপরদিকে এই ঘটনার ফলে সোগানদের সামরিক দুর্বলতাও সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়ে এবং তার পক্ষে জাপানের সামন্তদের অথবা বিদেশীদের বিরুদ্ধে কোনরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অসমর্থ হয়ে পড়ে।

 সাতসুমা ও চোসু গোষ্ঠীর বিদেশীদের নিকট পরাজয়ের পর সম্রাট জাপানের চিরাচরিত বিচ্ছিন্নতার নীতি পুনরুদ্ধারের জন্য সোগানদের উপর রাজনৈতিক চাপ দিতে শুরু করেন। ইতিমধ্যে বিদেশী শক্তিবর্গ জাপানে নিজেদের দুর্বল অবস্থার কথা সঠিকভাবে উপলব্ধি করে মিকাডোর সমর্থন ও অনুমোদন লাভ করার অজনা বিশেষভাবে চেষ্টা করতে শুরু করে।

 ১৮৬৬ খ্রিঃ জাপানে অবস্থিত ব্রিটিশ কনসাল স্যার হেনরী পার্কস জাপানের সরকারকে জানিয়ে দেন যে বিদেশীদের সাথে সম্পাদিত চুক্তি সমূহে সম্মতি প্রদান করতে মিকাডোর আপত্তি না থাকলে চোসু গোষ্ঠীর কাছ থেকে আদায়ীকৃত ক্ষতিপূরণের কিছু অংশ মুকুব করতে তারা প্রস্তুত। শেষ পর্যন্ত মিকাডো বিদেশীদের সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তি অনুমোদন করেন। সম্রাটের সম্মতি লাভের ফলে বিদেশীদের নিকট জাপানের উন্মুক্ত হবার তৃতীয় পর্যায়ের অবসান ঘটে।

সোগুনের পদত্যাগের পর সম্রাটের ক্ষমতা মুৎসুহিতোর' হস্তগত হলেও, জাপানের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান তখনও সুদূরপরাহত। সম্রাটের ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের পর জাপানের সমস্ত সামন্তগোষ্ঠী সমান মর্যাদা ও রাজনৈতিক অধিকার লাভকরে। সুতরাং সম্রাটের পক্ষে তখন থেকে প্রতিটি সামন্তগোষ্ঠীর প্রতি সমান ব্যবহার ও সমান মর্যাদাপূর্ণ পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। 


তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সাতসুমা বিদ্রোহ সম্পর্কে একটি টীকা লেখ। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟