১৯৩৩-৩৯ সালের মধ্যে হিটলারের বৈদেশিক নীতি আলোচনা করো।

১৯৩৩-৩৯ সালের মধ্যে হিটলারের বৈদেশিক নীতি আলোচনা করো।

 ১৯৩৩-৩৯ সালের মধ্যে হিটলারের বৈদেশিক নীতি আলোচনা করো।

১৯৩৩-৩৯ সালের মধ্যে হিটলারের বৈদেশিক নীতি  আলোচনা করো।

হিটলার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জার্মানিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জার্মানির ক্ষমতা দখল করেছিলেন। ক্ষমতা দখলের পর হিটলার গৌরবজনক পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের সচেষ্ট হন। হিটলারের পররাষ্ট্র-নীতির মূল লক্ষ্য ছিল জার্মান জাতির অতীত গৌরব পুনরুদ্ধার করা এবং পৃথিবীতে জার্মানীকে সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিতে পরিণত করা। এর জন্য একমাত্র পথ হচ্ছে যুদ্ধ, শান্তি নয়। হিটলার তাঁর আত্মজীবনীতে পরিষ্কার করে বলেছেন, "শাশ্বত যুদ্ধেই মানুষ মহান হয়ে উঠেছে, শাশ্বত শান্তিতে তার বিনাশ ঘটবে"।

কূটনীতি:

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত জেনেভার নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে জার্মান প্রতিনিধিরা দাবি করেছিলেন যে, ভার্সাই সন্ধি অন্যায় ভাবে শুধুমাত্র জার্মানিকেই নিরস্ত্র করেছে। তাই পৃথিবীর অন্যান্য শক্তিগুলো তাদের সামরিক শক্তি হ্রাস করুক অথবা জার্মানিকে তার সামরিক শক্তি বাড়াবার অনুমতি দেওয়া হোক। মিত্রপক্ষ জার্মানির এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করলে হিটলারের নির্দেশে জার্মান প্রতিনিধিরা সম্মেলন ত্যাগ করেন এবং পরে জার্মানি জাতিসংঘের সদস্যপদও ত্যাগ করে।

১৯৩৪ সালে হিটলার পোল্যান্ডের সঙ্গে দশ বছরের অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষর করে ভার্সাই ব্যবস্থার মূলে কুঠারাঘাত করেন । এটা ছিল হিটলারের পাশবিক কূটনীতির একটি দৃষ্টান্ত। ভার্সাই সন্ধিতে জার্মানীর সার উপত্যকার ভবিষ্যৎ ১৯৩৫ সালে গণভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে এটা ঠিক হয়েছিল। হিটলার গোপনে সার অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং ভোটদাতাদের ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন। গণভোটে শতকরা ৯০ জন ভোটার সার অঞ্চলকে জার্মানীর সঙ্গে যুক্ত করার পক্ষে রায় দেয় এবং সার অঞ্চল জার্মানীর অন্তর্ভুক্ত হয়।

রুশ কমিউনিজমের ভয়ে সন্ত্রস্ত ইংল্যান্ড হিটলারের প্রতি তোষণ- নীতি অনুসরণ করতে শুরু করে এবং ১৯৩৫ সালে এক ইঙ্গ- জার্মান নৌ-চুক্তির মাধ্যমে ইংরেজ নৌ-বহরের শক্তির ৩৫ শতাংশ হারে জার্মানীর নৌ-শক্তি বৃদ্ধিতে উভয় পক্ষ রাজী হয় । ১৯৩৬ সালে হিটলার ভার্সাই সন্ধির শর্ত লঙ্ঘন করে রাইনল্যান্ড অধিকার করে নেন। ১৯৩৭ সালে তিনি ইতালি, জার্মানি ও জাপানের মধ্যে সাম্যবাদ বিরোধী একটি শক্তিজোট গড়ে তোলেন যা- 'রোম-বার্লিন-টোকিও অক্ষজোট' নামে পরিচিত।

চেকোশ্লোভাকিয়ার সুদেতান অঞ্চল ছিল জার্মান জাতি অধ্যুষিত। হিটলার তাদের উপর নিপীড়নের অজুহাতে সুদেতান অঞ্চল দখল করতে সচেষ্ট হন। এমতাবস্থায় ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেন, ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী দালাদিয়ের, ইটালির মুসোলিনি ও জার্মানির হিটলারের মধ্যে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের ২৯ সেপ্টেম্বর 'মিউনিখ চুক্তি' স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুসারে জার্মানি সুদেতান অঞ্চল লাভ করে। এই সাফল্য হিটলারকে আরো আগ্রাসী করে তোলে। তিনি পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে ঘোর শত্রু রাশিয়ার সঙ্গে মৈত্রী সম্পর্ক গড়ে তুলতে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে দশ বছরের জন্য 'রুশ- জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি' স্বাক্ষরিত করেন।

আগ্রাসী নীতি:

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

ভার্সাই সন্ধি উপেক্ষা করে জার্মানি রাইন অঞ্চলে সামরিক শক্তি পাঠালে মিত্ররাষ্ট্রবর্গ কোনো বাধা দেয়নি। তাদের এই ব্যর্থতা হিটলারকে আরও সক্রিয় বৈদেশিক নীতি অনুসরণে উৎসাহিত করে। স্পেনে প্রজাতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে জেনারেল ফ্রাঙ্কো যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের এই গৃহযুদ্ধে হিটলার জেনারেল ফ্রাঙ্কোকে সাহায্য করেছিলেন। ফলে জেনারেল ফ্রাঙ্কো জয়ী হয়েছিলেন।

ভার্সাই সন্ধি ডানজিগ বন্দরটিকে আন্তর্জাতিক শাসনাধীনে একটি মুক্ত শহরে পরিণত করেছিল। কিন্তু এ বন্দরটির অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণভার ছিল পোল্যান্ডের ওপর। যথারীতি হিটলার ডানজিগের জার্মান অধিবাসীদের সমর্থন করেন এবং পোলিশ করিডোর দাবি করেন। চেম্বারলেন হিটলারকে সতর্ক করে দেন যে, পোল্যান্ড আক্রান্ত হলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স পোল্যান্ডের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এ সতর্কবাণীর তোয়াক্কা না করে হিটলার পোল্যান্ড আক্রমণ করে বসলেন (১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯)। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স জার্মানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে (৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৯) এবং এর সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন



সম্ভাব্য প্রশ্নঃ -

  • ১৯৩৩-৩৯ সালের মধ্যে হিটলারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নীতি আলোচনা করো।
  • হিটলারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর
  • হিটলারের বৈদেশিক নীতির লক্ষ কী ছিল?
  • এডলফ হিটলারের পররাষ্ট্রনীতি
  • হিটলারের পোল্যান্ড আক্রমণ এর উদ্দেশ্য কি ছিল
  • হিটলারের পোল্যান্ড আক্রমণের উদ্দেশ্য কি ছিল 

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ১৯৩৩-৩৯ সালের মধ্যে হিটলারের বৈদেশিক নীতি আলোচনা করো। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟