এশীয়দের জন্য এশিয়া'-এই উক্তির আড়ালে জাপানি সাম্রাজ্যবাদের পরিচয় দাও।

এশীয়দের জন্য এশিয়া'-এই উক্তির আড়ালে জাপানি সাম্রাজ্যবাদের পরিচয় দাও।

 

 'এশীয়দের জন্য এশিয়া'-এই উক্তির আড়ালে জাপানি সাম্রাজ্যবাদের পরিচয় দাও।

'এশীয়দের জন্য এশিয়া'-এই উক্তির আড়ালে জাপানি সাম্রাজ্যবাদের পরিচয় দাও।


এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে জাপান নিজেকে উউত করতে চেয়েছিল। শুধু তাই নয় জাপান চেয়েছিল ইউরোনায়। প্রাজাবাদী শক্তিগুলির সমকক্ষ হয়ে উঠতে। এই আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে জাপান স্লোগান তুলেছিল এশীয়দের জন্য এশিয়া।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন


এশীয়দের জন্য এশিয়া'-ব্যাখ্যা

১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে চিন জাপান যুদ্ধ শুরু হয়। এশিয়া ভূখণ্ডে জাপান আধিপত্য বিস্তার করতে গেলে জীবন চিন ও জাপানের মধ্যে এই বিরোধের সূচনা ঘটে। এশিয়া ভূখণ্ডে আলিম রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে জাপান চেয়েছিল কোরিয়াকে পরাজিত করতে। কিন্তু কোরিয়া জাপানের হাতে চলে যাক চিন তা চায়নি। এরা তাই চিন জাপান যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। চিন জাপান যুদ্ধে চিনের পরাজয় ও শিমোনোসেকির সন্ধির ফলে চিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


জাপানি সাম্রাজ্যবাদের তীব্রতা বৃদ্ধি: রুশ-জাপান যুদ্ধে জেতার পর জাপানের সাম্রাজ্যবাদের তীব্রতা বৃদ্ধি পায় । ইতিপূর্বেই শিমোনোসেকির সন্ধি বলে জাপান ফরমোজা দ্বীপের অধিকার লাভ করেছিল । পরে পোর্টসমাউথের সন্ধি বলে জাপান কোরিয়ার ওপর নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে । রুশ জাপান যুদ্ধের পর দক্ষিণ মাঞ্জুরিয়াতে জাপানের প্রভাব স্বীকৃতি পায় । শিমোনোসেকির সন্ধির পর সুকৌশলে জাপান শান্টুং অঞ্চল নিজের অধিকারে আনে।


শান্টুং প্রদেশে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার পর হয়ে জাপান চীনের কাছে একুশ দফা দাবি পেশ করে। পরবর্তীকালে মাসির ভার্সাই সন্ধিতে জাপানের একুশ দফা দাবিগুলির মধ্যে বেশ কিছু এই দাবি মেনে নেওয়া হয়। দূর প্রাচ্যে জাপান এক প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে । ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানকে ইঙ্গ-জাপান চুক্তি বাতিলের প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু জাপান এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। তাই মার্কিন উদ্যোগে আয়োজিত হয় ওয়াশিংটন সম্মেলন' (১৯২১ খ্রি.)। এই সম্মেলনের মধ্যে জাপানের সামরিক শক্তি হ্রাস ও সাম্রাজ্যবাদী নীতিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।


 জাপান নিজের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নিদর্শন হিসেবে চিনের মানূরিয়া অঞ্চলটি অধিকার করে। নেয় (১৯৩২ খ্রি.)। সোভিয়েত রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি জাপানের সমালোচনা করে। রাষ্ট্রসংঘ ও লিটন কমিশনের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জাপানের মাঞ্চুরিয়া অধিগ্রহণকে সমালোচনা করেন।


মাঞ্চুরিয়া অধিকার করার পর রাষ্ট্রসংঘের ভূমিকায় জাপান ক্ষুথ হয়। প্রতিবাদ হিসেবে জাপান রাষ্ট্রসংঘের সদস্যপদ ত্যাগ করেন। পূর্ব এশিয়াতে জাপান নিজের প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে এক নতুন নীতি গ্রহণ করে। এই নীতির নাম 'জাপানি মনরো ডকট্রিন ফর ইস্ট এশিয়া'। এই নীতি ঘোষণা করে জাপান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে পাশ্চত্য শক্তিবর্গ যেন পূর্ব এশিয়াতে কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে।


জাপানের প্রধানমন্ত্রী পূর্ব এশিয়ার নতুন বিধান (New Order of East Asia) ঘোষণা করেন (১৯৩৬ খ্রি.)। এই ঘোষণার উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদের অবসান ঘটিয়ে জাপানি সাম্রাজ্যবাদ প্রবর্তন করা। জাপানের এই উদ্যোগে শঙ্কিত হয়ে পাশ্চাত্য শক্তিবর্গ চিনের পাশে দাঁড়ায়।


 পাশ্চত্য শক্তিবর্গের প্রতিরোধ অগ্রাহ্য করে জাপান ইন্দোচিনের দখল নেয়। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন পূর্বভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে যাবতীয় রপ্তানি সামগ্রি বন্ধ করে দেয়। ফলে জাপান-মার্কিন সম্পর্ক তিক্ততায় পরিণত হয়।


জাপান প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি পার্ল হারবারে বোমা নিক্ষেপ করে মার্কিন বিরোধী অক্ষশক্তিজোটে যোগ দেয়। জাপানের সামতিক বাহিনী প্রথম দিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ, ইন্দো-বর্মী সীমাও অ্যালিসিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, সোলেমনস, নিউ গিনি প্রভৃতি অঞ্চল যখন করে নেয়। পরে অবশ্য জাপান প্রশান্ত মহাসাগরের দিনওয়ে দ্বীপের যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরাজিত হয়।


শেষপর্যন্ত জাপানের হিরেসিমা ও নাগাসাকি শহরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আণবিক বোমা নিক্ষেপ করলে জাপান আত্মসমর্পণ করে ৷





About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟