মেইজি জাপানে পুঁজি কীভাবে সংগঠিত হয়েছিল?অথবা, মেইজি জাপান কিভাবে পুঁজি সংগ্রহ করেছিল?

 মেইজি জাপানে পুঁজি কীভাবে সংগঠিত হয়েছিল?অথবা, মেইজি জাপান কিভাবে পুঁজি সংগ্রহ করেছিল?

মেইজি জাপানে পুঁজি কীভাবে সংগঠিত হয়েছিল?অথবা, মেইজি জাপান কিভাবে পুঁজি সংগ্রহ করেছিল?


মেইজি যুগের আবির্ভাবে জাপানে আধুনিক রাষ্ট্রোপযোগী অর্থনৈতিক ভিত্তি স্থাপিত হয় । মেইজি সরকার শিল্পভিত্তিক আধুনিক পদ্ধতিতে জাপানের অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে সক্রিয় হন । মেইজি পুনর্বাসনের সাথে সাথে অর্থনৈতিক বিপ্লব শুরু হয়। শোগুণ যুগে জাপানের অর্থনীতি ছিল প্রধানত কৃষিভিত্তিক । কিন্তু পাশ্চাত্য দেশের সাথে অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রয়োজন অনুভব করেই জাপান আধুনিক শিল্প ও ব্যবসা- বাণিজ্যের উপর অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করে । ফলে জাপানে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয় । 

অর্থমন্ত্রী মৎসুকাটা উপলব্ধি করেছিলেন যে, জাপানে আধুনিক শিল্প গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস হলো পুঁজি সংগ্রহ। রাষ্ট্রের পুঁজি বৃদ্ধি করার কর্মসূচিতে দুটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল -কর ব্যবস্থার  পরিবর্তন ও ঋণ সৃষ্টি করা। 


প্রথম দিকে মেইজি সরকার বিভিন্ন শিল্পের উপর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করে কিন্তু পরে কিছু কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান পুঁজিপতি পরিবার গোষ্ঠীকে স্বল্পমূল্যে বিক্রয় করে। এইসব পুজিপতি পরিবার দেশের অর্থনীতির উপর প্রভূত আধিপত্য স্থাপন করে এবং তারা জাইবাৎসু নামে পরিচিত হয়। জাইবাৎসু পরিবার গোষ্ঠীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মিংউই, মিৎসুবিশি, সুমিটোমা ও যাসুদা। মেইজি সরকারকে প্রয়োজন মতো আর্থিক সাহায্য দানের বিনিময়ে এইসব পরিবার গোষ্ঠী সরকারের নিকট থেকে নানাবিধ সুযোগ- সুবিধা আদায় করে অল্পদিনের মধ্যে সমাজে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে এবং দেশের অর্থনীতির উপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে।


মেইজি সরকার ভারী তথা হাল্কা শিল্প গড়ে তুলতে অগ্রসর হয় । শোগুনদের শাসনকালের শেষ দিকে ডাইমোদের অনেকে অস্ত্র-শস্ত্র নির্মাণের কারখানা স্থাপন করে। সাতসুমা ডাইমোদের কেগোসিমাতে একটি জাহাজ নির্মাণের কারখানা ছিল। স্বয়ং শোগুনের একটি গোলাবারুদের কারখানা ছিল। নাগাসাকিতে সোগুনের লৌহ ঢালাইয়ের কারখানাও ছিল। মেইজি সরকার এই সব কারখানাগুলি নিজ অধিকারভুক্ত করে। তাছাড়া মেইজি সরকার স্বর্ণ, রৌপ্য, তাম্র, লৌহ, কয়লা প্রভৃতি খনিজ সম্পদ জাতীয় সম্পদ হিসাবে ঘোষনা করে। এই সময় থেকে কয়লা শিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। কাসু ও হোক্কাইডো ছিল কয়লা শিল্পের প্রধান কেন্দ্র।


খনি থেকে তেল উত্তোলন শিল্পও মেইজি যুগে বিস্তার লাভ করে। ১৮৮৮ খ্রিঃ জাপান অয়েল কোম্পানী প্রতিষ্ঠার পর খনিজ তেল শিল্পের প্রসার অধিকতর বৃদ্ধি পায়। ১৮৮৭ খ্রিঃ অশোধিত তেলের উৎপাদন ছিল তেত্রিশ হাজার পিপা। এই উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ১৮৯৩ খ্রিঃ হয় এক লক্ষ পিপা এবং প্রতি বছর এই পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে।  

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟