জটিল পারস্পরিক নির্ভরশীলতা / বহুত্ববাদ।
বহুত্ববাদীরা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মূলত দুটি ধারার উল্লেখ করেন যার মধ্যে অন্যতম হল 'জটিল পারস্পরিক নির্ভরশীলতা'। এই তত্ত্বের মূল প্রবক্তা হলেন রবার্ট কেওহান এবং যোসেফ নাই।
বৈশিষ্ট্য: রবার্ট কেওহান ও যোসেফ নাই-এদের মতে 'জাটল পারস্পরিক নির্ভরশীলতার' মূলত তিনটি বৈশিষ্ট্য আছে।
প্রথমত, 'জটিল পারস্পরিক নির্ভরশীলতার' ভত্ত্ব বহুমুখী যোগসূত্রের কথা বলে। এই ধরনের যোগসূত্র আন্তঃরাষ্ট্রীয়, আন্তঃসরকারী এবং আন্তর্জাতিক ভিত্তিতে তৈরি হতে পারে। এই ব্যবস্থায় এক সমাজের সঙ্গে বিদেশি সমাজের সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে রাষ্ট্রীয় নেতৃত্ব এবং অপর দেশের বিদেশ মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের সঙ্গে সরকারী সম্পর্কের বাইরে আন্তরিকতার ভিত্তিতে, কিংবা বেসরকারী স্তরে বিশিষ্ট মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে বা আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে।
> দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক সময় সামরিক সম্পর্কই ছিল মুখ্য আলোচ্য বিষয় কিন্তু সাম্প্রতিককালে অসামরিক বিষয়গুলিও যেমন পরিবেশ, অর্থনীতি, জনসংখ্যা ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সামরিক এবং অসামরিক বিষয়গুলির গুরুত্বের স্তরবিন্যাস করা আজকের দিনে অত্যন্ত কঠিন। কেওহান এবং নাই একেই বলেছেন 'absence of hierarchy among issues.'
> তৃতীয়ত, কেওহান এবং নাই-এর মতে সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সামরিক শক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে সামরিক সংঘাত এবং উন্নত দেশগুলির মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা কিন্তু উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।