কাশ্মীর সমস্যার প্রকৃতি বিচার করো। ১৯৭০ সালে পর্যন্ত ভারত কীভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করেছিল? বা,History of Kasmir Crisis
কাশ্মীর সমস্যার ইতিহাস
পৃথিবীর স্বর্গ হিসেবে খ্যাত কাশ্মীরে আজ বিরাজ করছে দুঃসহ এক নরকীয় পরিবেশ। মানবতার আর্তনাদ, লাশ আর বারুদের পোড়া গন্ধে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ এশীয় শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যে সমস্যাটি সবচেয়ে তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে কাশ্মীর সমস্যা। ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক অবনতির পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে কাশ্মীর সমস্যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে চারটি যুদ্ধ (১৯৪৭, ৬৫, ৭১ ও ৯৯ সালে) সংঘটিত হয়েছে তার তিনটিই কাশ্মীর নিয়ে। এ সমস্যা উভয় দেশকেই আস্তে আস্তে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে ফেলছে। উভয় দেশই সীমান্তে সৈন্য ও অস্ত্রের মজুদ বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। উভয় দেশের বাজেটের বিরাট একটি অংশ বরাদ্দ করা হয় সামরিক খাতে যা দেশ দু'টির দারিদ্র হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। পর্যবেক্ষকগণ এ বিষয় নিয়ে আরও একটি যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন, যার ফলাফল অনেক ভয়াবহ হতে পারে। এ সমস্যার প্রকৃতি বুঝতে পেরে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এটাকে Pandora's Box এবং জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব উথান্ট Time Bomb হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ১৯৯০ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের অধিক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছে হাজার হাজার নারী ও কিশোরী। তাই বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে এ সমস্যার সমাধান হওয়া একান্ত কাম্য।
পাকিস্তানি কায়েদে আজম (জাতির জনক) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এর বিখ্যাত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে ১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকরা ধর্মের ওপর ভিত্তি করে মুসলিম অধ্যূষিত এলাকা নিয়ে পাকিস্তান এবং হিন্দু অধ্যূষিত এলাকা নিয়ে হিন্দুস্থান বা ভারত গঠন করলেও মুসলিম অধ্যূষিত এলাকা কাশ্মীরের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কাশ্মীরসহ দেশীয় রাজ্যগুলোকে স্বাধীনতা দেওয়ার পরিবর্তে তাদের
ইচ্ছানুয়ায়ী ভারত অথবা পাকিস্তানের সাথে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার বিধান রাখা হয়েছিল। এ ব্যবস্থা অনুযায়ী অধিকাংশ রাজ্য ভারতের সাথে এবং কিছু কিছু পাকিস্তানের সাথে অঙ্গীভূত হয়। কিন্তু কাশ্মীরের তৎকালীন হিন্দু রাজা (গলাবসিং এর বংশধর) হরিসিং কাশ্মীরকে একটি নিরপেক্ষ স্বায়ত্বশাসিত রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়ে নেহেরু ও জিন্নাহ উভয়ের বিরাগভাজন হন। ভারত ও পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রই কাশ্মীরকে তাদের সাথে একীভূত হওয়ার জন্য মনস্তাত্ত্বিক চাপের মধ্যে রাখে।
কাশ্মীরের জনগণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন- খাদ্য সামগ্রী, লবণ, কেরোসিন, পেট্রোল, ভোজ্য তেল ইত্যাদি পূর্ব থেকেই পাকিস্তান থেকে সরবরাহ করা হত। কিন্তু পাকিস্তান হঠাৎ করে এরূপ জরুরি প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কাশ্মীরে সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং পাকিস্তানের সাথে একীভূত হওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এমতাবস্থায় মহারাজা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে থাকে। বিপর্যয় কেটে ওঠার জন্য মহারাজা আস্তে আস্তে ভারতের সাথে অন্তর্ভূক্তির দিকে আগাতে থাকে। ১৯৪৭ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে কাশ্মীরের ইসলামী জাতীয়বাদী দলগুলো পাকিস্তানের সহায়তায় হিন্দু রাজা হরিসিং এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করলে হিন্দু মহারাজা ভারত বন্ধু নামে কথিত শেখ আব্দুল্লাহর পরামর্শে ভারতের সামরিক সাহায্য কামনা করে। ভারত কাশ্মীরকে ভারতের সাথে একীভূত হওয়ার শর্তে সামরিক সাহায্য প্রদানে রাজী হয়। ১৯৪৭ সালের ২৪ অক্টোবর ভারত কাশ্মীরে হস্তক্ষেপ করলে ২৪-২৭ অক্টোবর ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে ভারত কাশ্মীরের দুই-তৃতীয়াংশ (জম্মু কাশ্মীর) দখল করে এবং পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে আসে এক-তৃতীয়াংশ (আজাদ কাশ্মীর বা মুক্ত কাশ্মীর)। ১৯৪৮ সালের ১৭জানুয়ারি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পাক-ভারত বিরোধ নিরসনের প্রচেষ্টাস্বরূপ এক প্রস্তাব পাশ করে। এর তিন দিন পরে জানুয়ারির ২০ তারিখে ভারত ও পাকিস্তানের জন্য জাতিসংঘ কমিশন সৃষ্টি করে এবং যুদ্ধ বিরতির জন্য জাতিসংঘ বাহিনী গঠন করে। কিন্তু জাতিসংঘ বাহিনী গঠনে দীর্ঘ সময় নেয় এবং ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হয় এবং সেখানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
১৯৪৮ সালের ১৩ আগস্ট জাতিসংঘ ৪৭ নং প্রস্তাব এবং ১৯৪৯ সালের ৫ জানুয়ারি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগে গঠিত শান্তি কমিশনের প্রস্তাবে ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কাশ্মীরের ভবিষ্যত কাশ্মীরের জনগণের মতামতের ওপর নির্ভর করবে বলে মেনে নিতে সম্মত হয়। কিন্তু ভারত কাশ্মীরী জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে ১৯৫৭ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধানের ১নং ধারা মোতাবেক কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ৩৭০ নং ধারা মোতাবেক এ অঞ্চলকে কেন্দ্র শাসিত প্রদেশে পরিণত করে সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। স্বভাবত: কারণেই পাকিস্তান কাশ্মীর প্রশ্নে ভারতের এ ভূমিকাকে মেনে নিতে পারেনি। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান পাশ্চাত্য সামরিক জোটে যোগ দিলে ইঙ্গ-মার্কিন শক্তির পাকিস্তান প্রীতি বেড়ে যায়।
১৯৫৫ সালে ভারত সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে মৈত্রী চুক্তি পর নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর প্রসঙ্গে ভারত-বিরোধী প্রস্তাব উঠলেই সোভিয়েত ইউনিয়ন তাতে একতরফাভাবে ভেটো দিত। সে কারণে ১৯৫২ ও ১৯৬২ সালে পাকিস্তান কাশ্মীর বিতর্ক জাতিসংঘে তুললে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এর বিরোধিতা করে। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান পুনরায় নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর সমস্যা উত্থাপন করলে সোভিয়েত ইউনিয়ন কাশ্মীর প্রশ্নে ভারতকে শুধু সমর্থনই করেনি বরং কাশ্মীরকে ভারতের একটি অবিচ্ছিন্ন অংশ যা কাশ্মীরের জনগণ কর্তৃক নির্ধারিত হয়েছে বলে বর্ণনা করে।
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় ১৯৬৫ সালের পাক ভারত ২য় যুদ্ধ। সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলটির অধিকার ভোগ করতে দুটি দেশই এক ইঞ্চি পরিমান জমি ছাড়তে নারাজ। তৎকালীন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর পরামর্শে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের নির্দেশে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ ও ভারতের গুজরাটের সীমান্তবর্তী "রান অব কচ্ছ" এর জলাভূমিতে পাকিস্তানের একটি ছোট্ট বিতর্কিত এলাকার মালিকানা নিয়ে পাক সেনাবাহিনী শক্তি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এলাকাটি অনায়াসে দখল করে নেয়।
ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে পাক-হস্তক্ষেপ বন্ধ করার উদ্দেশে ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর কাশ্মীর ও লাদাখের যোগাযোগ পথের ওপর কারগিল ঘাঁটি থেকে আক্রমণ করে ১৭দিন ব্যাপী দ্বিতীয় পাক ভারত যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায়। যুদ্ধে ভারত পাকিস্তানের কারগিলের দু'টি ঘাঁটি দখল করে নেয়। এ সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সো কোসিগানের আমন্ত্রণ ও মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে দুদেশের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে এক শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা শেষে ১৯৬৫ সালের ১০ জানুয়ারি উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধ বিরতির একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা "তাসখন্দ চুক্তি" নামে পরিচিত।
এ চুক্তি অনুসারে উভয় রাষ্ট্র ১৯৬৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি উভয় পক্ষের সেনাবাহিনী আগের নির্ধারিত সীমানায় ফিরে নিয়ে যায় এবং অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করে পারস্পরিক স্বার্থের খাতিরে চুক্তি অনুসারে ভারত তার অধিকৃত কারগিলের দুটি ঘাঁটি পাকিস্তানকে ফেরত দেয়। কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে পাক ভারত তৃতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়। এ যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী শুধুমাত্র বাংলাদেশেই পর্যদুস্ত হয়নি। পশ্চিম সীমান্তেও পর্যদুস্ত হয়।
১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তান হেরে যায় ৬ ডিসেম্বর ভারত স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় এবং পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে । অপরদিকে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্পষ্ট জানান পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারত কখনও স্বীকার করেনা এবং তিনি পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে দখলমুক্ত করার চেষ্টা চালান। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ার করেদেয় যে, ভারত যদি কাশ্মীরকে মুক্ত করতে চায় তবে মার্কিন নৌবাহিনী ভারতের ওপর পাল্টা আঘাত হানবে। কারণ, ভারত সোভিয়েত ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকলে দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ক্ষমতা বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। সাবেক সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী কোসিগানের পরামর্শে ইন্দিরা গান্ধী তার ইচ্ছা পরিত্যাগ করেন। তারপর ১৯৭২ সালে পুরীতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যাবতীয় ভুল বুঝাবুঝি, বিবাদ দূর করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৭২ সালের ৩ জুলাই ভারত ও পাকিস্তানের পক্ষে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা ঐতিহাসিক "সিমলা চুক্তি" নামে পরিচিত। ভারতের পক্ষে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের পক্ষে জুলফিকার আলী ভুট্টো এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তিতে বলা হয়েছিল "ভারত ও পাকিস্তান সরকার সংঘর্ষের ঘটনা, যা উভয় দেশের মধ্যে এতকালের সম্পর্কের বৈশিষ্ট্য, তার অবসান করে, সদিচ্ছা, সহযোগিতা, সম্পর্কের উন্নয়ন এবং স্থায়ী শান্তিপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক আপোষ আলোচনার পদ্ধতিতে বা উভয়দের ঐক্যমত হলে অন্য কেনো শান্তিপূর্ণ পন্থায় মতোনৈক্যের অবসান করবে। চুক্তি স্বাক্ষরের দু'যুগ অতিবাহিত হলেও দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততার অবসান আজও ঘটেনি। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত কাশ্মীর সমস্যাংকিছুটা স্তিমিত থাকলেও ৯০ এর দশকে কাশ্মীর পরিস্থিতি অহিংস রূপ ধারণ করে। ১৯৯২ সালের মার্চ মাসে স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরবাসী একটি লং মার্চের আয়োজন করে সীমান্ত অতিক্রম করলে পাকসেনার গুলিতে কয়েকজন কাশ্মীরী মারা যায়। এবং তখন থেকে পাক-ভারত উত্তেজনা দেখা দেয়। ১৯৯৩ সালের ১৪ অক্টোবর শ্রীনগরের বাল মসজিদের জঙ্গী কাশ্মীরীরা আগমন করলে ১৫ অক্টোবর ১০ হাজার ভারতীয় সৈন্য সেটি ঘিরে ফেলে এবং তাদের ভীতি প্রদর্শন করে আত্মসমর্পন করতে বাধ্য করে। জম্মু ও কাশ্মীরের কারগিল ও দ্রাস সেক্টরকে কেন্দ্র করে ভারত পাকিস্তান চতুর্থ যুদ্ধ সংগঠিত হয় ১৯৯৯ সালের ৬ মে থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত যা কারগিল যুদ্ধ নামে পরিচিত। এ যুদ্ধে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ৩০০ জন অফিসার ও জওয়ান প্রাণ হারায় এবং আহত হয় প্রায় ৫০০ জন।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মতে, পাকিস্তানের পক্ষে হতাহতের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান ২৫ মে, ১৯৯৯ এ সংঘর্ষ সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ২৭ মে, ১৯৯৯ কমনওয়েলথ মহাসচিবও একইভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এবং উভয় পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে বলেছেন। কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখার মাধ্যমে প্রথম পশ্চিম ইউরোপ ও আমেরিকা খোলাখুলির কারগিল যুদ্ধে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে। গত ৫৩ বছরে ভারত পাকিস্তান সংঘর্ষে ১৯৯৯ সালে বিশ্বের প্রধান দেশগুলো ভারতের অবস্থান সঠিক বলেছে। এবং ৭২ এর সিমলা চুক্তির সময় চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত নিয়ন্ত্রণ রেখা মেনে নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ১৯৯৯ সালের ৫ জুলাই ওয়াশিংটনে আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে তিন ঘণ্টা আলোচনা হয় এবং এক ধরনের চাপের মাধ্যমে পাকিস্তানকে এ যুদ্ধ বন্ধ করতে বাধ্য করানো হয়, যা ভারতের জন্য একটি বড় ধরনের সাফল্য হিসেবে বিবেচিত। এভাবেই কাশ্মীর সংকট শুরু কিন্তু আজও এর ফলপ্রসু কোনো সমাধান হয়নি।