মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকার গুরুত্ব লেখো।

মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকার গুরুত্ব লেখো।

 মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকার গুরুত্ব লেখো।

মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকার গুরুত্ব লেখো।

 প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসাবে বৈদেশিক সাহিত্য ও পর্যটকদের বিবরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা নিজের চোখে যা দেখেছেন বা স্থানীয় মানুষদের কাছে যা শুনেছেন দেশে ফিরে গিয়ে তার ভিত্তিতে গ্রন্থ রচনা করেছেন। আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের সূত্র ধরেই সেলুকাস মেগাস্থিনিসকে চন্দ্রগুপ্তের রাজসভায় দূত হিসাবে পাঠান। ভারতবর্ষ সম্পর্কে বিশেষ করে মৌর্যযুগ সম্পর্কে তিনি মূল্যবান তথ্য ইন্ডিক্স নামক গ্রন্থে লিখে রেখে গেছেন। দুর্ভাগ্যবশত তাঁর এই মূল্যবান গ্রন্থটি পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী গ্রিক লেখকরা যথা-অ্যারিয়ান, স্টার্বো ডায়াডোরাস প্রমুখরা ইন্ডিকা থেকে যে সমস্ত উদ্ধৃতি দিয়েছেন সেগুলির ভিত্তিতে আমরা এ সম্পর্কে অবহিত হয়ে থাকি। মেগাস্থিনিসের 'ইন্ডিকা' গ্রন্থ কেবলমাত্র মৌর্য শাসনব্যবস্থা সম্পর্কেই আমাদের বিশদ বিবরণ দেন, সে যুগের সমাজ ও অর্থনীতি সম্পর্কেও একটা সুষ্ঠু ধারণা এর থেকে পরিস্ফুট হয়।

সমকালীন ভারতবর্ষের আকার, আয়তন, নদনদী, মৃত্তিকা, জলবায়ু, উৎপাদিত দ্রব্য, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, সমাজ এবং কিংবদন্তী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি সরবরাহ করে ইন্ডিক্স গ্রন্থ। ভারতীয় পশুপাখির বিচিত্রতা গ্রিকদের অবাক করেছিল। ইন্ডিকা গ্রন্থের পশুপাখির বিচিত্রতা গ্রিকদের অবাক করেছিল। এই গ্রন্থের মধ্যে হাতি, বানর, ঘোড়ার প্রশিক্ষণ হাতি শিকার ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। ভারতবর্ষ প্রাচীন উপজাতিদের বাসস্থান, পরবর্তীকালে সংস্কৃতসহ অন্যান্য বিষয়গুলি উন্নততর হয়েছিল। ইন্ডিকা গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, গ্রিকদেবতা ডাইনোসাস এবং হেরাক্লিস-প্রকৃতপক্ষে বাসুদেব কৃত্বের পুজো প্রচলিত ছিল। আরো বলা হয়েছে যে, ভারতীয় কৃষকরা কখনো যুদ্ধে অংশ নিত না, সমাজে দাসব্যবস্থা ছিল না এবং চুরি হত না। মেগাস্থিনিস আরো লিখেছেন যে, ভারতীয়রা সুদের কারবার করত না। স্ট্রাবো লিখেছেন ইন্ডিকার ওপর ভিত্তি করে যে, ভারতীয়রা যজ্ঞ ছাড়া মদ্যপান করত না এবং তারা লিখতে জানত না।

ইন্ডিকা গ্রন্থ থেকে এবং পরবর্তীকালে অন্যান্য গ্রিক লেখকরা যাঁরা ইন্ডিকা গ্রন্থের ওপর ভাষ্য দিয়েছেন। তার ভিত্তিতে সমকালীন ভারতের যে চিত্র পরিস্ফুট হয়, তার মধ্যে প্রাচীন গ্রিসের সমাজব্যবস্থার সুস্পষ্ট প্রতিফলন লক্ষণীয়। ভারতে বরাবরই দাসব্যবস্থার প্রচলন ছিল এবং অন্যান্য উপাদান থেকে জানা যায় যে, মৌর্যযুগে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুদের একটা ভূমিকা ছিল। এই ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও বলা যায় যে, মৌর্যকালীন ভারতের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় জীবনের একটি খণ্ডচিত্র উৎঘাটিত হয় ইন্ডিকা গ্রন্থের মধ্যে। যদিও মূল গ্রন্থটি পাওয়া যায়নি। তা সত্ত্বেও বলতে হয় সমকালীন ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনায় ইন্ডিকা গ্রন্থ ও তার ওপর ভাষ্যগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। 
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ মেগাস্থিনিসের ইন্ডিকার গুরুত্ব লেখো। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟