প্রথম রাজেন্দ্র চোলকে কেন চোলবংশের শ্রেষ্ঠ নরপতি বলা হয়? অথবা, তাঁর সাম্রাজ্যবিস্তার নীতি সম্পর্কে কী জান?
প্রথম রাজেন্দ্র চোল ১০১৬ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন । সিংহাসনে বসেই তিনি রাজ্যবিস্তার নীতিতে মনোযোগ দেন । তাঁর রাজ্যবিস্তার নীতি সম্পর্কে জানতে গেলে তিরুমালাই ও তাঞ্জোর লিপির ওপর নির্ভর করতে হয়।
প্রথমেই তিনি মহীশুরের গঙ্গরাজ্য ধ্বংস করেন । তিনি পশ্চিমে চালুক্যদের সঙ্গে একাধিকবার যুদ্ধ করেন এবং চালুক্যরাজ জয়সিংহকে পরাজিত করেন।
তিনি বাংলা আক্রমণ করেন এবং পূর্ববঙ্গের গোবিন্দচন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গের মহীপাল এবং দক্ষিণবঙ্গের রণসূরকে পরাজিত করেন । বঙ্গদেশ অভিযানের পর তিনি গাইকোন্ড উপাধি ধারণ করেন । বঙ্গবিজয় শেষ করে তিনি কাবেরী নদীর তীরে গন্ডাইকোন্ডচোলপুরম নামে একটি নতুন রাজধানী স্থাপন করেন।
রাজেন্দ্র চোল সিংহলরাজ পঞ্চম মহেন্দ্রকে পরাজিত করেন এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, ব্রহ্মদেশের একাংশ । শ্রীবিজয় রাজ্য (মালয়, সুমাত্রা ও যবদ্বীপ) জয় করে অবিস্মরণীয় কীর্তির অধিকারী হন।
রাজেন্দ্র চোল চিনের সঙ্গে সৌহার্ণাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন ৷ ১০১৬ ও ১০৩৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি চিন সম্রাটের নিকট দূত প্রেরণ করেন । প্রথম রাজেন্দ্র চোলের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব হল সুমাত্রার শৈলেন্দ্র বংশের বিরুদ্ধে নৌ-অভিযান প্রেরণ । তিনি ১০২৫ খ্রিস্টাব্দে শৈলেন্দ্র বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী প্রেরণ করেন । শৈলেন্দ্র বংশীয় নরপতি বিজয়োতুঙ্গবর্মনকে পরাজিত করে বন্দি করেন । ফলে শৈলেন্দ্র সাম্রাজ্যের কয়েকটি অঞ্চল চোল সম্প্রদাযুক্ত হয় ।
এইভাবে চোল সাম্রাজ্যের সীমানা সর্বাধিক বিস্তৃত হয় এবং তাঁর আমলেই চোল সাম্রাজ্য ব্যাপক সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠিত হয় ।