ইরাসমাস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর
নবজাগরণের যুগে সর্বাপেক্ষা সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন ইরাসমাস ৷ নেদারল্যান্ডের রটারডামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং খুব দরিদ্রতার মধ্যে বাল্যকাল ও ছাত্র জীবন অতিবাহিত করেছিলেন ৷ তিনি জ্ঞান অর্জনের জন্য জীবিকার জন্য ফ্রান্স,ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম,ইতালি,সুইজারল্যান্ড ও জার্মানি প্রভৃতি দেশের বসবাস করতে বাধ্য হন ৷ এর ফলে কোন বিশেষ দেশ ইরাসমাসের জ্ঞান চিন্তা ধারা দৃষ্টিভঙ্গি প্রভৃতি গঠনের ওপর সুনির্দিষ্ট কোন প্রভাব বিস্তারিত করতে পারেনি । কিন্তু প্রত্যেক দেশেই জ্ঞানের চিন্তাধারা দৃষ্টিভঙ্গি প্রভৃতি গঠনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সাহায্য দান করতে সমর্থ হয় ৷
Related Posts
ইরাসমাসের তুলনা একমাত্র ইরাসমাস সাধারণভাবে এ কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন খ্রিষ্টান প্রতিযোগীদের যথার্থ প্রতিনিধি ৷ এয়োদশ শতাব্দীর প্রথম দিক থেকে ইউরোপীয় সাংস্কৃতি ও চিন্তা জগতে দ্রুত পরিবর্তন দেখা দিয়েছিল ৷ এই সময় একদিকে ইউরোপের শিক্ষিত মানুষের মনে প্রচলিত ধর্ম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং যাজক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রচন্ড অসন্তুষ্ট দেখা দেয় ৷ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে উঠতে শুরু করে ৷ ইরাসমাস নবজাগরণ যুগের প্রকৃত প্রতিনিধি হিসেবে আত্মপরিচয় দেওয়ার জন্য ১৫১৬ খ্রিস্টাব্দের ল্যাটিন অনুবাদ সহ গ্রীক ভাষার সংস্কার প্রকাশ করেন ৷ তিনি এই সংস্করণের মুখবন্ধে বলেন -"আমার ইচ্ছে যে অল্পবুদ্ধির সম্পন্নার নারীগণের ও খ্রিস্টের জীবনী ও উপদেশ বলি এবং পল-এর রচনা সমূহ পাঠ করা উচিত" ৷
ইরাসমাস বিশ্বাস করতেন যে পণ্ডিতদের দার্শনিক তত্ত্বের আলোচনার দ্বারা ভারাক্রান্ত পৌত্তলিক ও ইহুদিদের মতামত দ্বারা প্রভাবিত বর্বর জাতিদের ধর্মীয় আরম্বন ও আচরণ অনুষ্ঠানের দ্বারা বিকৃত হয়ে প্রাচীন মৌলিক খ্রিস্টান ধর্ম তার সহজ ও সরলরূপ হারিয়ে ফেলেছে ৷ ইরাসমাস বিশ্বাস করতেন যে ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য নৈতিক জীবনের পুনর্গঠন ৷ তাই সর্বশেষে বলা যায় নবজাগরণ যুগের অন্যতম প্রধান পুরুষ ইরাসমাস ৷ তার জীবনের অসমাপ্ত কাজগুলো আজও শেষ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি ৷