সুলতানি যুগের গ্রামীণ সমাজের বিবরণ দাও
সুলতানি যুগে গ্রামে জাতিভেদ প্রথা প্রবল ছিল ৷ ইসলামের প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য প্রথমদিকে হিন্দু সমাজ বর্ণ ব্যবস্থাকে কঠোর করেছিল এবং মেয়েদের পর্দার আড়ালে নিয়ে গিয়েছিল ৷ এর সঙ্গে সতীদাহ বাল্যবিবাহ প্রভৃতি কুপথা গুলি বলবত ছিল ৷ হিন্দু সমাজে যেমন ব্রাহ্মণদের প্রাধান্য ছিল তেমনি মুসলমান সমাজে উলেমাদের প্রাধান্য ছিল ৷ মুসলমানদের মধ্যে শিয়া ও সুন্নি এই দুই ভাগ ছিল ৷ সুলতানরা ছিলেন গোরা ও রক্ষণশীল তাদের সময়ে হিন্দুদের নানা রকম বিশেষ কর দিতে বাধ্য করা হতো ৷ এমনকি তাদের উচ্চ পদে নিয়োগ করা হতো না ৷ আবার মহম্মদ বিন তুঘলকের মতো শাসক হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
জমির ফসল কে কেন্দ্র করে গ্রাম গড়ে উঠেছিল ৷ নানাবিদ কুঠির শিল্পকে কেন্দ্র করে গ্রামের মানুষ উপযোগিতা হিসেবে গ্রহণ করত ৷ মাঝে মাঝে গ্রামে মেলার আয়োজন করা হতো ৷ রাজনীতি,সমাজনীতি থেকে ব্যক্তিগত বিবাদ জাতিগত আচার বিচার ইত্যাদির নানা বিষয় গ্রামীণ সমাজের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল । কিন্তু নিজের গ্রাম এবং নিকটবর্তী দু একটি গ্রামের ঘটনাবলীর বাইরে বিশ্বজগত সম্পর্কে গ্রামীণ মানুষের কোন ধারণা ছিল না ৷
মুসলমান সমাজের সাম্য ও সৌভাত্রীদের ধারণাও আক্ষরিক অর্থে কার্যকরী ছিল না ৷ ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার বলেছেন,"অমুসলিম অধ্যুষিতদেশে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকার চেষ্টাও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি ৷" সুলতানি শাসনের একেবারে প্রাথমিক পর্বে আত্ম সম্প্রদায় সংঘাত শুরু হয়েছিল যা সুলতানের সংকটের তীব্রতর করেছিল ৷ মুসলমান সমাজের শিয়াদের সুন্নিরা পছন্দ করত না ফলে উভয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগে থাকত ৷ মুসলিম সমাজের সুফি মতবাদ কিছুটা অর্জন করেছিল এরা উলেমাদের ধর্ম বিরোধী বলে আখ্যায়িত করেন ৷ এছাড়া মুসলিম সমাজের জাতীয় গোষ্ঠী ভিত্তিক ভেদাভেদ ও রেসারেসি ছিল ৷