শিমোনোসেকি সন্ধির (১৮৯৫) শর্তগুলি বিশ্লেষণ করো। অথবা, শিমোনোসেকি সন্ধি সম্পর্কে আলোচনা কর বা,পূর্ব এশিয় রাজনীতির ইতিহাসে শিমোনোসেকি সন্ধির তাৎপর্য কিভাবে ব্যাখ্যা করবে?
-%E0%A6%B6%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B7%E0%A6%A3.jpeg.webp)
১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে চীন জাপান যুদ্ধ হয় এবং এই যুদ্ধে জাপানের কাছে চীন পরাজিত হয় ৷১৮৯৫ খ্রিঃ ১৭ এপ্রিল চীন জাপানের মধ্যে শিমোনোসেকি সন্ধির স্বাক্ষরিত হয়েছিল ৷ এই সন্ধিতে বলা হয় যে,
- জাপান ও চীন কোরিয়ার স্বাধীনতা স্বীকার করে নেয় ৷
- কোরিয়া আর চীনের করদ রাজ্য থাকবে না ৷
- চীন জাপানকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০০ মিলিয়ন পায়েল দেবে ৷
- চীন জাপানকে তাইওয়ান ,পেশকাডোরিস ও লিয়াংটু ছেড়ে দেবে ৷ চুংকিং, সুচাও, হ্যাংচাও ও শাসি বন্দর জাপানের কাছে উন্মুক্ত হবে ৷
- জাপান চীনে কারখানা স্থাপন করে শিল্পপত্ন উৎপাদন করার সুযোগ পাবে
- জাপান বাণিজ্য আমদানি ও রপ্তানির পেছনের শুল্ক নিয়ন্ত্রণের অধিকার ফিরে পায়।
চীন-জাপান যুদ্ধে চীনের শোচনীয় পরাজয় চীনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে ৷ পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তিবর্গ চীনের দুর্বলতার সুযোগে চীনকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় ৷ চীনের সার্বভৌমত্ব স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক ক্ষমতা বিপন্ন হয়ে পড়ে ৷ তাছাড়া জাপানের মত একটি ক্ষুদ্র দেশের হাতে পরাজয়ের ফলে দেশের জনসম্মুখে মাঞ্চু রাজবংশের প্রভাব প্রতিপত্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় ৷
চীন জাপান যুদ্ধে জাপানের এই বিরাট সাফল্যের পেছনে যার ভূমিকা সবথেকে বেশি তিনি হলেন জাপানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুৎসু ৷ তিনি কোন অভিজাত গোষ্ঠীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেননি, অত্যন্ত সাধারণ একটি পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৷ নিজ প্রতিভা বলে তিনি বিদেশ মন্ত্রকে দায়িত্ব লাভ করেছিলেন ৷ চূড়ান্ত কূটনৈতিক বুদ্ধি পরিচয় দিয়ে তিনি চীনকে যুদ্ধের পথে নিয়ে এসেছিলেন ৷ যুদ্ধ জয় করার পর তিনি চীন বা কোরিয়ার স্বার্থে প্রতি বিন্দুমাত্র সহানুভূতি দেখায়নি অর্থাৎ , তিনি ছিলেন জাপানের অগ্রাসী বৈদেশিক নীতির অন্যতম অগ্রদূত।