হাঙ্গেরি সংকট সম্পর্কে আলোচনা কর

হাঙ্গেরি সংকট সম্পর্কে আলোচনা কর

 হাঙ্গেরি সংকট সম্পর্কে আলোচনা কর (১০/৫ mk)

হাঙ্গেরি সংকট সম্পর্কে আলোচনা কর

উরোপ মহাদেশে অবস্থিত স্থলবেষ্টিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হাঙ্গেরি । হাঙ্গেরির অধিকাংশ এলাকা দানিউব উপত্যকা অঞ্চলে অবস্থিত । চতুর্দশ শতকে বিদেশী শাসকেরা হাঙ্গেরি জয় করে । চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতক ধরে বিভিন্ন ইউরোপীয় রাজবংশ হাঙ্গেরি শাসন করে এরপর ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে দেশটির অধিকাংশ ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্যের দখলে । পরবর্তীকালে দেশটির পশ্চিমের কিছু অংশ অস্ট্রিয়ার হ্যাপসবার্গ রাজবংশ নিয়ন্ত্রণ করত । সপ্তদশ শতকের শেষ ভাগে এসে হ্যাপসবার্গরা প্রায় সমস্ত হাঙ্গেরি দখল করে নিতে সক্ষম হয় । হাঙ্গেরিয়োরা ১৮৪৮ সালে হ্যাপসবার্গদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে কিন্তু তা দমন করা হয় । দুই পক্ষের মধ্যে সন্ধি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং হাঙ্গেরির নাম হয় অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য ।


আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তীকালে হাঙ্গেরিতে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। স্তালিনের মদতে সেখানে নির্বাচন হয় এবং এই নির্বাচনে অ-কমিউনিস্ট দলগুলির পরাজয় হয় ৷ এই সময় কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করেছিল । হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী স্ট্যালিনপন্থী রাকোসী ছিলেন হাঙ্গেরির রাজনীতিতে সর্বেসর্বা । তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে হাঙ্গেরিতে সমাজতান্ত্রিক আদর্শ ও নীতিকে বাস্তবায়িত করতে আরম্ভ করেন। স্তালিনের মৃত্যুর পর রাকোসির জনপ্রিয়তা কমে যায় । নেগীর নেতৃত্ব হাঙ্গেরিতে উদারনীতি কার্যকর হয় । কিন্তু গোঁড়া কমিউনিস্টরা নেগীর এই উদার শাসনকে পছন্দ করেননি । তাকে সরিয়ে আবার রাকোসিকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী করা হয় । কিন্তু রাকোসির শাসনকে সাধারণ হাঙ্গেরিয়রা সমর্থন করেনি । হাঙ্গেরিয় বুদ্ধিজীবিরা এই শাসনের প্রতিবাদে পেটোফি সার্কল নামে এক সাহিত্য সভা গঠন করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল ।


১৯৫৬ সালের জুলাই মাসে রুশ কমিউনিস্ট দল রাকোসিকে পদচ্যুত করেন এবং আর্নোজেরোকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসানো হয় । কিন্তু আর্নোজেরো রাকোসির পথেই হাঙ্গেরিকে পরিচালনা করেন । সে জন্য রুশ রাষ্ট্রপ্রধান ক্রুশ্চেভ বিরক্ত হয়েছিলেন । হাঙ্গেরিয় মানুষজন আর্নোজেরোর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিল। ১৯৫৬ সালের অক্টোবর মাসে পোল্যান্ডে যে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল তাকে সমর্থন করে হাঙ্গেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। তারা হাঙ্গেরিতে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এবং হাঙ্গেরি থেকে সোভিয়েত প্রভুত্বের অবসানের জন্য আন্দোলন করেছিল। সাধারন মানুষ তাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিল। ফলে সারা দেশজুড়ে শুরু হয়েছিল গণ-আন্দোলন।


হাঙ্গেরির কিছু জনগণ এবং ছাত্র সমাজ হাঙ্গেরিতে প্রকৃত গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা এবং হাঙ্গেরি থেকে সোভিয়েত প্রভুত্বের অবসানের জন্য আন্দোলন শুরু করে । সাধারণ মানুষ তাদের সমর্থনে এগিয়ে আসে, ফলে সারা দেশ জুড়ে শুরু হয় এক গণআন্দোলন । সমকালীন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী আর্নোজেরো এই অভ্যুত্থানকে প্রতিরোধ করার জন্য সোভিয়েত সামরিক বাহিনী কে ডাকেন। সোভিয়েত বাহিনী হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করেছিল এবং বিক্ষুব্ধ জনতার উপর গুলি চালিয়েছিল । ফলে জনতার ক্ষোভ বহু গুণে বৃদ্ধি পায় এবং আর্নোজেরোকে পদচ্যুত করে পুনরায় ইমরে নেগীকে প্রধানমন্ত্রী করা হয় । নেগির নির্দেশে সোভিয়েত বাহিনী হাঙ্গেরি ত্যাগ করে । কারণ সোভিয়েত বাহিনী ভেবেছিল রাশিয়ার কথামতো নেগী শাসন পরিচালনা করবেন । কিন্তু নেগি হাঙ্গেরিতে একদলীয় শাসনের অবসান ঘটান । তিনি হাঙ্গেরীকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ রাখার কৌশল নেন ।


১৯৫৬ সালে ১লা নভেম্বর নেগি ঘোষণা করেন যে হাঙ্গেরি 'ওয়ারশ চুক্তি' থেকে বেরিয়ে এসেছে । সোভিয়েত রাশিয়া নেগির এই ঘোষণাকে ভালো চোখে দেখেনি । তাই ১৯৫৬ সালে : ৪ঠা নভেম্বর আড়াই লক্ষ সোভিয়েত সেনাকে বুদাপেস্টে প্রেরণ করে । নেগীকে বন্দী করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় । পরিবর্তে রাশিয়াকে আনুগত্যের শর্তে ক্ষমতায় আসে জানোস কাদার । হাঙ্গেরির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে রাশিয়ার এই রূপ হস্তক্ষেপ হাঙ্গেরিয় সংকটকে আরো জটিল করে তুলেছিল । নেগির মৃত্যুর পর হাঙ্গেরির সাধারণ জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকারের লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যায় । তারা হাঙ্গেরি থেকে সোভিয়েত সেনার অপসারণএর দাবী জানায় । কিন্তু সোভিয়েত রাশিয়া অত্যন্ত নিষ্ঠুরতার সাথে হাঙ্গেরিইয়ানদের বিদ্রোহ দমন করেছিল । হাঙ্গেরির জনগণ রাশিয়ার নিষ্ঠুরতাকে প্রত্যক্ষ করেছিল এবং মস্কো সম্পর্কে তাদের ধারনা বদলে গিয়েছিল ৷


পূর্ব ইউরোপের রাজনৈতিক জটিলতার সাথে ভারতের যোগ ছিল ক্ষীণ । তবুও গণতন্ত্র ও মানবিকতার স্বার্থে ভারত এই অঞ্চলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে যুক্ত হয়েছে । এই ধরনের একটি সংকটের কেন্দ্র ছিল হাঙ্গেরি । সমগ্র বিষয়টি রাষ্ট্রসঙ্ঘের আলোচনার জন্য উপস্থিত হলে ভারতবর্ষ এই সমস্যা সাথে জড়িত হয় । ইতিপূর্বে বিভিন্ন সংকটে সোভিয়েত রাশিয়া ভারতের পক্ষে ছিল তাই ভারতের পক্ষে সরাসরি রুশ বিরোধিতা করা সহজ ছিল না । হাঙ্গেরি সংকটে ভারতের ভূমিকা ছিল দ্বিধাগ্রস্ত । সুয়েজ সংকটে মিশরের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইজরায়েলের আক্রমণের বিরুদ্ধে ভারত সোচ্চার প্রতিবাদ করেছিল । মিশরের সাথে ভারতের স্বার্থগত সম্পর্ক ছিল । কিন্তু হাঙ্গেরির সাথে ভারতের তেমন যোগাযোগ ছিল না । দুই বড় শক্তি যাতে হাঙ্গেরিকে কেন্দ্র করে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে নজর রেখেছিল ভারত ৷ অন্যদিকে ভারত নীতিগতভাবেই জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীনতার সমর্থক । যে কোন জাতির স্বাধীন চিন্তার সম্পর্ক ছিল ভারত । তাই হাঙ্গেরিয় জনতার আন্দোলনকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা ভারতের পক্ষে সম্ভব ছিল না ।


সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ হাঙ্গেরিতে রুশ অভিযানকে সমালোচনা করেছিল । কিন্তু সেই অর্থে ভারত সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করেনি । আসলে কাশ্মীর সমস্যার জন্য ভারত সোভিয়েত যুক্ত রাষ্ট্র কে চটাতে চায়নি। কাশ্মীর নিয়ে ভারতের স্বার্থে সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে অনেকবার ভেটো প্রয়োগ করেছে । নেগি ও তাঁর সহকর্মীদের হত্যা কে ভারত কোনো ভাবেই মানতে পারেনি । ভারত সোভিয়েত ইউনিয়নকে তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল । ভারত দুবছর হাঙ্গেরিতে কোন রাষ্ট্রদূত প্রেরন করেনি । সামগ্রিক বিচারে বলা যায় হাঙ্গেরি সংকটে ভারতের ভূমিকা তেমন ইতিবাচক ছিল না । হাঙ্গেরি সংকটে ভারতের জোটনিরপেক্ষতা নীতি কিছুটা হলেও চাপে পড়েছিল । ভারত কোনভাবেই সোভিয়েত রাশিয়ার বিরোধিতা করতে চায়নি ।


Faq
হাঙ্গেরিয়ান সংকট কি ছিল?

হাঙ্গেরিয়ান সংকট বলতে 1956 সালে হাঙ্গেরিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলির একটি সিরিজকে বোঝায়, যা সোভিয়েত-সমর্থিত কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিদ্রোহের পরিণতিতে পরিণত হয়েছিল।

হাঙ্গেরিয়ান সংকটের প্রধান কারণ কি ছিল?

হাঙ্গেরির সংকটের প্রধান কারণগুলির মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক দমন, অর্থনৈতিক কষ্ট এবং হাঙ্গেরিতে সোভিয়েত প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের প্রতি বিরক্তি। পোল্যান্ড এবং পূর্ব জার্মানিতে সোভিয়েত বিরোধী বিদ্রোহের সাম্প্রতিক সাফল্য দ্বারা হাঙ্গেরিয়ান নাগরিকরাও অনুপ্রাণিত হয়েছিল।

হাঙ্গেরির সংকট কখন সংঘটিত হয়েছিল?

হাঙ্গেরির সংকট 1956 সালের অক্টোবর এবং নভেম্বরে ঘটেছিল।

হাঙ্গেরির সংকটে জড়িত মূল ব্যক্তিত্ব কারা ছিল?

হাঙ্গেরির সংকটের প্রধান ব্যক্তিত্বদের মধ্যে হাঙ্গেরিয়ান কমিউনিস্ট পার্টির নেতা এরন গেরো, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ইমরে নাগি এবং সোভিয়েত প্রিমিয়ার নিকিতা ক্রুশ্চেভ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

হাঙ্গেরির সংকটের প্রধান ঘটনাগুলো কি কি ছিল?

হাঙ্গেরির সংকট 23 অক্টোবর, 1956 সালে বুদাপেস্টে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল, যা বিক্ষোভকারীদের এবং সোভিয়েত বাহিনীর মধ্যে সহিংস সংঘর্ষে পরিণত হয়েছিল। হাঙ্গেরিয়ান সরকারের পতন ঘটে এবং ইমরে নাগি গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি নতুন সরকার গঠন করে। যাইহোক, সোভিয়েত বাহিনী হস্তক্ষেপ করে, বিদ্রোহ দমন করে এবং একটি নতুন সোভিয়েতপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠা করে।

হাঙ্গেরির সংকটের আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল?

হাঙ্গেরির সংকটের আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া মিশ্র ছিল। পশ্চিমা দেশগুলি সোভিয়েত হস্তক্ষেপের নিন্দা করলেও, সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে বৃহত্তর সংঘাতের জন্ম দেওয়ার ভয়ে তারা হাঙ্গেরির বিদ্রোহকে সমর্থন করার জন্য সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করেনি।

হাঙ্গেরির সংকটের পরিণতি কী ছিল?

হাঙ্গেরির সংকটের পরিণতি উল্লেখযোগ্য ছিল। হাজার হাজার হাঙ্গেরিয়ানকে হত্যা বা কারারুদ্ধ করা হয়েছিল এবং আরও অনেকে শরণার্থী হিসাবে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল। হাঙ্গেরিয়ান কমিউনিস্ট পার্টি বৈধতার সংকটের মধ্যে দিয়েছিল এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপের উপর তার নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছিল।

হাঙ্গেরীয় সংকট কীভাবে ঠান্ডা যুদ্ধের গতিশীলতাকে প্রভাবিত করেছিল?

হাঙ্গেরির সংকট শীতল যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পশ্চিমের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। এটি পূর্ব ইউরোপে সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণের সীমাবদ্ধতা এবং সোভিয়েত কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলির ইচ্ছা প্রদর্শন করে।


🔹সম্ভাব্য প্রশ্নঃ- 
  • হাঙ্গেরি সংকট pdf 
  • হাঙ্গেরি সংকট সম্পর্কে টিকা লেখ
  • হাঙ্গেরি সংকট বলতে কী বোঝো 
  • হাঙ্গেরি সংকট.pdf
  • হাঙ্গেরি সংকট 
  • হাঙ্গেরি সংকট কি

হাঙ্গেরি সংকট বলতে কী বোঝ?

হাঙ্গেরি সংকট বলতে কী বোঝ?

হাঙ্গেরি সংকট সম্পর্কে টীকা লেখ

ঠান্ডা লড়াইয়ের অন্যতম ফলশ্রুতি হিসাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলির ওপর নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হয়েছিল এবং এইভাবে পোল্যান্ড, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি প্রভৃতি দেশে কমিউনিস্ট সরকার গঠিত হয় ।বলা যায় এই সব দেশ ছিল সম্পূর্ণভাবে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন | ১৯৪৯ সালে ২০ আগস্ট সোভিয়েত মদতে হাঙ্গেরিতে জৈনিক রাকোসির নেতৃত্বে কমিউনিস্ট গণপ্রজাতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় । রাকোসি  প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হন ।রাকোসি হাঙ্গেরিতে কমিউনিজমকে সুসংহত করতে গিয়ে জনসাধারণের প্রয়োজনের দিকটা সম্পূর্ণভাবে অবজ্ঞা করেন । হাঙ্গেরির উন্নয়নের দিকটাও অবহেলিত হয়। তার শাসনের বিরুদ্ধে দেশময় তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। এর পরিণতি স্বরূপ রাকোসিকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং 1953 সালে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী হন ইমরে নেগি।

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

নেগি অন্ধ কমিউনিজমের পথ থেকে সরে এসেছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল হাঙ্গেরি বাসীর আর্থিক উন্নতি সাধন।তবে রাকোসির ষড়যন্ত্রে তিনি কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বিতাড়িত হন এবং প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।রাকোসি আবার প্রধানমন্ত্রী হন এর ফলে সারা দেশে অসন্তোষ দেখা দেয়।রাকোসির হঠকারিতার বিরুদ্ধে সেই সময় হাঙ্গেরির বুদ্ধিজীবী মহল এগিয়ে আসে এবং তারা কমিউনিস্টদের চন্দ্র নীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিতএই সময় ১৯৫৬ সালে সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির বিংশতিতম সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধিত হয়| এই সম্মেলনে সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী ক্রুশ্চেভ স্ট্যালিন নির্দেশিত পথের তীব্র সমালোচনা করে বলেন যে স্ট্যালিন নির্দেশিত পথই সমাজতন্ত্রের পৌঁছাবার একমাত্র পথ হতে পারে না তারই নীতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। এর ফলে পোল্যান্ডে বিদ্রোহ দেখা দেয় গোমুলকার নেতৃত্বে। যুগোশ্লাভিয়ার মার্শাল টিটো স্ট্যালিনবাদের বিরুদ্ধে চলে যান। একইভাবে হাঙ্গেরিতেও বিদ্রোহ তীব্রতর হয়।

১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে ২৩শে অক্টোবর হাঙ্গেরিতে বিদ্রোহ চরম আকার ধারণ করে। ওই তারিখে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের। ওপর গুলি চালালে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সরকার দেশে সামরিক আইন জারি করে এবং ওয়ারশ চুক্তির শর্ত অনুসারে বিদ্রোহ দমনের জন্য সোভিয়েত সৈন্যবাহিনী হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করে। এই অবস্থায় ইমরে নেগি পুনরায় দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে নিযুক্ত হন। ১৯৫৬ সালে ৩০শে অক্টোবর নেগি সোভিয়েত রাশিয়ার কাছ থেকে হাঙ্গেরির জাতীয় স্বাধীনতার রক্ষা ও হাঙ্গেরি থেকে সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি আদায় করেন।তবে ১৯৫৬সালে নভেম্বরে নেগি ওয়ারশ চুক্তি থেকে হাঙ্গেরির বেরিয়ে আসার কথা ঘোষণা করলে অবস্থা চরমে ওঠে এর ফলে রাশিয়া চরম মনোভাব নেয় এবং ৪ঠা নভেম্বর ২৫০০০০ সোভিয়েত সেনা হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট অভিযান করে নির্মম অত্যাচার শুরু করে।হাঙ্গেরির বিপ্লবী জনতা রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছিল যদিও তারা সফল হয়নি।ইমরে নেগি ক্ষমতাচ্যুত হন ও নিহত হন। উভয় তরফে ব্যাপক সংঘর্ষের ফলে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ মারা যায়। হাঙ্গেরির বেদনাদায়ক ঘটনা প্রবাহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ক্রুশ্চেভের তথাকথিত উদারনৈতিক মনোভাব আন্তরিকতা বিহীন।একথা অস্বীকার করা যায় না যে হাঙ্গেরির বিদ্রোহ দমন বাস্তবে হাঙ্গেরির সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে সম্পূর্ণ ধুলিস্যাৎ করেছিল।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ হাঙ্গেরি সংকট সম্পর্কে আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟