সুলতান রাজিয়া সম্পর্কে আলোচনা কর

সুলতান রাজিয়া সম্পর্কে আলোচনা কর

 সুলতান রাজিয়া সম্পর্কে আলোচনা কর



সুলতান রাজিয়া সম্পর্কে আলোচনা কর


সুলতান রাজিয়া সম্পর্কে আলোচনা কর

২১১ খ্রীষ্টাব্দে দিল্লীর শিশু সুলতানির চরম সংকটকালে এই সাম্রাজ্যের হাল ধরেন কুতুবউদ্দিন জামাতা ইলতুৎমিস ৷ তিনি সম্রাজের আর্থিক সামরিক প্রশাসনিকসহ নানা দিক থেকে অত্যন্ত শক্তিশালী করে তোলেন এবং এর অস্তিত্বকে পরবর্তী কয়েক শতকের জন্য সুনিশ্চিত করেন, এই কারনে ঐতিহাসিকদের মতে কুতুবউদ্দিন দিল্লীর সুলতানির প্রতিষ্ঠাতা হলেও ইলতুৎমিসই ছিলেন প্রকৃত প্রতিজ্ঞাতা । তবে ২৬ বছর রাজত্ব শেষে ১২৩৬ খ্রীষ্টাব্দে ইলতুৎমিস পেরলোক গমন করলে দিল্লীর দিল্লীর সুলতানি আমার পুনরায় চরম সংকটের মুখে পড়েন । ইলতুৎমিসের তাযোগ্য মুত্র রুকনুদ্দিনের স্বল্পকালীন আাসনে সাম্রাজ্যের চারিদিকে গোলযোগ, অসন্তোষ, আমির ওমরাহদের সক্ষমতার দ্বন্দ, আঞ্চলিক মনাসন কর্তাদের বিদ্রোহ তখন দিল্লীর সুলতানিকে অস্তিত্বের সংকটে ফেলের তখন সেই সময় দিল্লীর সুলতানির হাত ধরে ইলতুৎমিসের যোগ্য কন্যা রাজিয়া, [১২৩৬-৪০] সিংহাসন আরোহণ করেন ৷ 



রাজিয়া তার স্বল্পকালীন শাসনে যে রাজনৈতিক বিচক্ষনতা, সামরিক প্রতিভা, কূটনীতি সর্বারী শাসন সংক্রান্ত দৃঢ়তার যে পরিচয় দিয়েছিলেন তার কারণে, তাঁর নেতৃত্ব ইতিহাসের এই সময়টিকে সবচেয়ে বিতর্কিত হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে । ঐতিহাসিক মিনহাজ-উদ্দিন-সিরাজ তাঁর তবাকত-ই-নাসখরি গ্রন্থে রাজিয়ার শাসন কালের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় । ঐতিহাসিক ইমামীর মতে, রাজিয়ার সিংহাসন গ্রহণ করা ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং কাজ, কারণ এটি কঠিন ছিল, রাজিয়া বুঝে গিয়ে ছিল যে, তার জীবন শীঘ্রই হতাশাজনক হয়ে উঠবে যদি সে পুরুষদের চেয়ে ভাল না করে ।

রাজিয়া প্রথমে বিরোধী অভিজাতদের বিভক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল । তিনি রক্ষমহল, গদায়ন, সুলতান,হামসি লাহোরের রামপুন, প্রাদেশিক শাসকরণ রাজিয়াকে সিংহাসনে চ্যুত করার সিদ্ধন্ত গ্রহন করলে রাজিয়া নিজ বুদ্ধির বলে কূটনৈতিক কৌশল প্রয়োগ করে অরিজিাতির সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ৷ মিনহাজ লিখেছেন, রাজিয়ার তীঘ্ন রাজনৈতিক বুদ্ধির সুক্ষ প্রয়োগের ফলে লক্ষনাবর্তী থেকে দেবল পর্যন্ত সমস্ত মালিক এবং আমিরগন রাজিয়ার আনুগত্য স্বীকার করেছিল । ইতিহাসবিদ নিজামীর মতে, "রাজিয়া তার রাজনৈতিক বিচক্ষণতার ব্যতিক্রমী প্রমাণ দিয়েছিলেন অদম্য ক্ষমাশীলদের মোকাবেলায়"।

অগ্রগতি হত ক্ষমতার অধিকারী রাজিয়া রাজনৈতিক ক্ষমতা সংহত করলেও সাম্রাজা বিস্তারের ক্ষেত্রে তাঁর সমস্ত অভিমান প্রেরন নিষ্ফলায় থেকে গিয়েছিল ৷,রণমম্বরের বিরুদে সামরিক অভিমান ছাড়াও গোয়ালিয়রের বিরুদ্ধে তাঁর অভিমানটিও বিফলে যায়, এর ব্যর্থতার কারন ছিল ক্ষমতাবান, তুর্কি মালিক ও আমিরদের বিরোধীতা ও ষড়যন্ত্র ৷ রাজিয়ার মধ্যে যে বিচক্ষনতা, ন্যায় চারয়নতা চারমুনতা ও  মহান রাজকীয় গুনের সমাবেশ ঘটেছিল তা উচ্চবিও আমির ওমরাহদের বিরোধীতার ফলে অনেকাংশেই সাফল্য লাভ করেনি ৷

শক্তিশালী তুর্কি মালিক এবং আমিরদের প্রতিরোধই ছিল সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের সমস্ত প্রচেষ্টার ব্যর্থতার কারণ সম্পর্কে ঐতিহাসিক দের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে ৷ হানিফের 'ফুতুহ-উস-সালাতিন' গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, 'রাজিয়া নারী সুলভ মনোভাব ত্যাগ করা উলেমা ও অভিজাতদের ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল, এদিকে নিজামী এই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে রাজি নন । তিনি বলেন, রাজিয়ার সুরুম সুলভ আচরন নয়, তাঁর ব্যক্তিত্ব, কৃতিত্ব এবং দক্ষতা ইত্যাদি গুনাবলী অভিজাতদের ঈর্যাম্মিত করে তুলেছিল । আবার অনেক ঐতিহাসিকের বলেন যে স্ববাসি হাবসি ব্রীতদাস জামালউদ্দিন ইয়াকুতের সঙ্গে রাজিয়ার প্রনয় অভিজাজ্ঞা মেনে নিতে পারেনি । ইবনে বতুতা এবং মিনহাজউদ্দিন উভয়েই এই দাবির সাথে একমত ।


 সুমাঞ্জলী তুর্কি অভিজাত সম্পনদায় ও বিদ্রোহ আমিরপগ জানতেন যে, দিল্লীর বুকে বসে রাজিয়ার বিরূদের কোন আন্দোলন সফল করা যাবে না । তাই তারা দিল্লীর বাইরে থেকে বিভিন্ন প্রদেশে রাজিয়ার বিরুদেশ ষড়যন্ত্র ও প্রাদেশিক বিদ্রোহ করার চেষ চেষ্টা করেন ৷  এমনকি তথাকথিত রাজিয়ার দুই  বিশস্ত আমির আসেতুমিয়া এবং কবির খাঁ ভার বিরোধীতা করেন ৷ কবির খাঁ রাজিয়ার বিরূদে এক যুদ্ধ সংগঠিত করে অবশেষ পর্যন্ত তিনি রাজিয়ার বশতা স্বীকার করে রক্ষা পান ৷ কিন্তু ভাতিনদ্বার শাসক কর্তা আলতুমিয়ারের বিদ্রোহ দমনে রাজিয়া ব্যর্থ হন এবং তিনি বন্দি হন । রাজিয়া পরে আলতুমিয়াকে বিয়ে করে সোনার তার বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করে । কিন্তু রাজিয়ার ছোট ভাই বাহরাম শাহের চক্রান্তের ফলস্বরূপ, রাজিয়া অলসভাবে প্রাণ ত্যাগ করেন ।

তার রাজকীয় দৃষ্টিভঙ্গি সত্ত্বেও, ব্যক্তিগত লাভের জন্য তুর্কি আভিজাত্যের প্রভাবকে ক্ষুণ্ন করার জন্য রাজিয়ার সাহসিকতা শেষ পর্যন্ত একটি কল্পনা হিসাবে স্বীকার করতে হয়েছিল । কিন্তু রাজিয়া সালতানাতের সাম্রাজ্যে তিনিই একমাত্র মহিলা যিনি প্রথাকে বঞ্চিত করেছিলেন এবং একজন অত্যন্ত দক্ষ বিজয়ী এবং শাসক হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিলেন । রাজ্যের শাসনের সংক্ষিপ্ত সময়কাল সত্ত্বেও, তিনি তার রাজনৈতিক জ্ঞান, শিক্ষা এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের জন্য ইতিহাসে একটি স্থায়ী ছাপ রেখে গেছেন ।

                            ~~🔹সমাপ্ত🔹~~

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সুলতান রাজিয়া সম্পর্কে আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟