জাহান্দারি ও যাওয়াইত বলতে কী বোঝো
দিল্লির সুলতানরা তথ্যগতভাবে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হলেও ভারতীয়রা পরিবেশের বাস্তবতার ক্ষেত্রে কতগুলি সুনির্দিষ্ট ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা কে মেনে নিয়েছিলেন ৷ প্রাথমিক পর্বে তাদের শাসনতান্ত্রিক কার্যাবলী কে প্রধানত দুটি ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রেখেছিল ৷ সেগুলি হল জাহান্দারি ও জাওয়াবিত ৷ জাহান্দারি বলতে বোঝায় রাজ্য জয় করে নববিজিতে রাজ্যগুলিকে অধিকার সুসংহত করা আর জাওয়াবিত বলতে বোঝায় সামরিক বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করে বাহিনীকে সচল ও সন্তুষ্ট রাখা ৷
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
প্রথম পর্যায়ে সুলতানরা একের পর এক রাজ্য জয় করে তাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য বলে বিবেচনা করতেন ৷ এরপর সুলতানরা জাহানদারী ব্যবস্থার প্রতি মনোযোগ দেন অর্থাৎ রাষ্ট্র যন্ত সচল রাখার জন্য একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন ৷ জাহান্দারী ব্যবস্থা অর্থাৎ রাষ্ট্রযন্ত্রের সার্বিক শক্তি তার লক্ষ্যে সুলতানরা কতগুলি কর্তব্য পালন তাদের পক্ষে আবশ্যক বলে বিবেচনা করে ৷ প্রজা বর্গকে ন্যায় বিচার ও নিরাপত্তা দিতে সুলতানবাধ্য বলে শাসকবর্গ মনে করতেন ৷ এক্ষেত্রে সুলতানরা অনেকাংশে শরীয়তী আদেশ ও বিধান পালনের দিকে অগ্রসর হন ৷ আর ফলে অবশ্য উলঙ্গ সম্প্রদায় তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন ৷
সুলতানি শাসনব্যবস্থায় জাওয়াবিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল কারণ দিল্লির সুলতানি বংশ অনেকাংশে সামরিক শক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল ৷ সমগ্র সুলতানি ব্যবস্থা তে সুলতান কে কখনোই সামরিক ব্যবস্থাকে বিন্দুমাত্র শিথিল করতে পারেননি ৷ আলাউদ্দিন খলজির বিশ্বজয়ের স্বপ্ন, মহম্মদ বিন তুঘলকের খোরাসান অভিযানের পরিকল্পনা,কারা চল বিজয় এই সমস্ত কিছুই ছিল জাওয়াবিত ব্যবস্থাজাত ৷ তাই জাহান্দারি এবং জাওয়াবিত ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে এক আধারে সাম্রাজ্যের বিস্তার সাম্রাজ্যের সুগঠন করন,রাষ্ট্রীয় আদর্শ প্রতিষ্ঠা ,সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রয়াস চালানো হয়েছিল ৷ তাই বলা যায় এই দুই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে দিল্লির সুলতানের মধ্যে শাসক এবং সামরিক বিজেতার সমন্বয়ে ঘটেছিল ৷
--🔹সমাপ্ত🔹--