রাওলাট সত্যাগ্রহের পাশ্চাত্যে কি কারণ ছিল

রাওলাট সত্যাগ্রহের পাশ্চাত্যে কি কারণ ছিল

রাওলাট সত্যাগ্রহের পাশ্চাত্যে কি কারণ ছিল

রাওলাট সত্যাগ্রহের পাশ্চাত্যে কি কারণ ছিল 

 রাওলাট সত্যাগ্রহের কারণ




প্রথম বিশ্বযুদ্ধত্তর রাজনীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এই যে,এই সময় ভারতবর্ষের ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা নীতি অনুসরণ করাই ছিল ভারতীয় জাতীয় নেতৃবৃন্দের অন্যতম লক্ষ্য । কিন্তু এসব সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় আইনসভা ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ১৮ মার্চ রাওলাট আইন পাস করেছিল ৷ এই আইনি নিয়ে আগেই আলোচনা শুরু হয়েছিল ৷ আইনসভার ভারতীয় সদস্যরা সকলে এই আইনটির বিরোধিতা করেছিলেন ৷ কিন্তু তবুও ১৯১৯ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় বিপ্লবীদের দমন করার জন্য রাওলাট আইন প্রণয়ন করেন ৷ এই আইনটি ছিল অসম্ভব-অগণতান্ত্রিক এবং জনবিরোধী আইন । বিচারপতি সিডনি রাওলাটের নেতৃত্বে সিডিশন কমিটিটি এই আইনের খড়সা প্রস্তুত করেন ৷  বিচারপতি রাওলাটের নেতৃত্বে আইনটি হয়েছিল বলে এটি রাওলাট আইন নামে পরিচিত লাভ করে ৷ এই আইনের খড়সায় বলা হয়েছিল বিনা বিচারে যেকোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা যাবে, বিনা পরোয়ানায় গৃহ তল্লাশি করা যাবে, বিশেষ আদালতে অভিযুক্তের বিচারের ব্যবস্থা হয়েছিল ৷ পুলিশকে এই আইনে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল ৷


এই আইনটির খড়সা প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুজরাট ও অন্যান্য স্থানে রাওলাট আইন নিয়ে অনেক গুজব ছড়িয়েছিল ৷ জাতীয়তাবাদীরা একে দেশের স্বার্থ বিরতি ও অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বলে প্রচার করেছিল । এ দেশে বসবাসকারী সরকারি, বেসরকারি বণিক ও শিল্পপতি মহল ভারত সচিব লট মন্টেগুর ঘোষণায় অস্বস্তি প্রকাশ করেছিল ৷ সম্ভবত তাদের অশান্ত ও শান্ত করার জন্য সরকার একটি দমন মুলক আইনের কথা ভেবেছিলেন ৷ গান্ধীজী রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে এটি বাস্তবসম্মত গণ প্রতিবাদ আন্দোলন গঠন করার কথা ভাবেন ৷ কারণ গান্ধীজি বুঝেছিলেন তরুণ প্রজন্ম আর আবেদন নিবেদনের রাজনীতি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চাই না । তাই ১৯১৯ সালের ২৪ শে ফেব্রুয়ারি তার অনুগামীদের নিয়ে এই অনৈতিক অন্যায় আইন না মানা শপথ নেন । পরে ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে একটি সর্বভারতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন ৷


হোমরুল লীগপন্থী সংগঠন কয়েকটি ইসলামিক গোষ্ঠী একটি সত্যাগ্রহ সঙ্গ নিয়ে রাওলাট সত্যাগ্রহ আন্দোলন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় ৷ গান্ধীজি যমুন দাস, শংকর লাল, অমরসমানি গান্ধীজিকে রাওলাট সত্যাগ্রহের লোকবল ও অর্থ জোগানের ব্যবস্থা করে দেয় ৷ রাওলাট সত্যাগ্রহের বিরুদ্ধে গান্ধীজীর ডাক দিলেও 30 মার্চ ৬ এপ্রিল হরতাল পালিত হয় ৷ রবীন্দ্র কুমারের গবেষণা থেকে জানা যায় আসলে  যুদ্ধোত্তর কলে ভারতীয়দের আশা আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রসঙ্গিত রেখে কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি ৷ তাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রজন্মকে দিয়ে এই অগণতান্ত্রিক জনবিরোধী আইন বাতিল করানো ৷ 




গান্ধিজী পরিচালিত রাওলাট সত্যাগ্রহ শেষপর্যন্ত কিছু উদ্দেশ্য চরিতার্থ হওয়া আগেই এই আন্দোলনের ব্যর্থতার পর্যভূষিত হয় । তার কারণ হল - 
  •  ইংরেজরা রাওলাট আইন প্রত্যাহার করে নেয়নি । 
  • এই আন্দোলন অহিংসার নীতি থেকে সরে এসে হিংসাশ্রয়ী হয়ে উঠেছিল । এই কারণে তিনি রাওলাট সত্যাগ্রহের কর্মসূচীকে 'হিমালয় সদৃশ ভুল' বলে অভিহিত করেছেন ।

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ রাওলাট সত্যাগ্রহের পাশ্চাত্যে কি কারণ ছিল এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟