লর্ড ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ নীতির প্রয়োগ ও অভিঘাত বিশ্লেষণ কর৷

লর্ড ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ নীতির প্রয়োগ ও অভিঘাত বিশ্লেষণ কর৷

 লর্ড ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ নীতির প্রয়োগ ও অভিঘাত বিশ্লেষণ কর৷ অথবা, স্বত্ববিলোপ নীতির পরিচয় ও প্রয়োগ লেখ। ডালহৌসি আর কোন কোন উপায়ে দেশীয় রাজ্য দখল করেন অথবা ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডালহৌসের স্বত্ববিলোপ নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর

লর্ড ডালহৌসির স্বত্ববিলোপ নীতির প্রয়োগ ও অভিঘাত বিশ্লেষণ কর অথবা স্বত্ববিলোপ নীতির পরিচয় ও প্রয়োগ লেখ। ডালহৌসি আর কোন কোন উপায়ে দেশীয় রাজ্য দখল করেন অথবা ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ডালহৌসের স্বত্ববিলোপ নীতি সম্পর্কে আলোচনা কর

র্ড ডালহৌসির উল্লেখযোগ্য সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি ছিল স্বত্ববিলোপ নীতি ৷ তিনি এক ঘোষণায় বলেন কোন ব্রিটিশ আশ্রিত দেশীয় রাজা অপুত্রক অবস্থায় মারা গেলে সে রাজ্যটি সরাসরি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হবে ৷ এই নীতি স্বত্ববিলোপ নীতি নামে পরিচিত ৷ লর্ড ডালহৌসি স্বত্ববিলোপ নীতির উদ্ভাবক ছিলেন না ৷ এই নীতি কার্যকারিতা প্রসঙ্গে আশাবাদী হয়ে ডালহৌসি বলেছিলেন,"ভারতের সব দেশীয় রাজ্যকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।" ডাইরেক্টর সভা কর্তৃক ঘোষিত দত্ত প্রথা নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিকে ডালহৌসের প্রয়োগ করেছিলেন ৷

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

এই নীতি প্রয়োগ করার আগে ডালহৌসি ভারতের দেশীয় হিন্দু রাজ্যগুলিকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করেন যথা -[১].স্বাধীন দেশীয় রাজ্য [২]কোম্পানির সৃষ্ট রাজ্য [৩].কোম্পানির আশ্রিত বা কোম্পানির অধীনস্থ রাজ্য ৷

এই স্বত্ববিলোপ নীতির বেশ কিছু শর্ত ছিল ৷ যথাঃ-

প্রথমতঃ কোম্পানির দ্বারা সৃষ্ট দেশীয় রাজ্যের রাজার পুত্র সন্তান না থাকলে রাজারা দত্তক নিতে পারবেন না এবং সেই রাজ্য সরাসরি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হবে ৷

দ্বিতীয়তঃ ইংরেজ আশ্রিত রাজা রাজ্য গুলির উদ্দেশ্যে বলা হয়,"তারা দত্তক নেওয়ার আগে কোম্পানির অনুমতি নেবেন অনুমতি না নিলে রাজার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারীহীন রাজ্যটি কোম্পানির অধিকারে চলে যাবে ‌৷

তৃতীয়তঃ আর দেশীয় স্বাধীন রাজ্যগুলির উত্তরাধিকার সম্পর্কে কোম্পানি নিরপেক্ষ থাকবে ।

স্বত্ববিলোপ নীতি নীতির প্রয়োগের মাধ্যমে লড ডালহৌসি সাতারা(১৮৪৮), সম্বলপুর,(১৮৫০), উদয়পুর(১৮৫২), ঝাঁসী,নাগপুর(১৮৫৪), কর্ণাটক প্রভৃতি রাজ্যেকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভুক্ত করেন । তবে লর্ড ডালহৌসির প্রবর্তিত স্বত্ববিলোপ নীতি সমালোচনার উর্ধ্বে ছিল না । স্বাধীন দেশীয় রাজ্য ও কোম্পানির শ্রেষ্ঠ রাজ্য ও কোম্পানির আশ্রিত রাজ্যগুলিতে এই নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল ৷ ফলে কয়েকটি রাজ্যের ক্ষেত্রে এই নীতির অপ্রয়োগ ঘটে ৷ তাছাড়া দত্তকপুত্র গ্রহণের অধিকার ডালহৌসি খারিজ করলে দেশীয় রাজ্য ও প্রজারা অসন্তুষ্ট হন ৷ এমনকি দেশীয় রাজ্যগুলিকে অহেতুক রাজ্য গ্রাসের দেখানো হয় ৷ উদয়পুর (১৮৫২) রাজ্য ব্রিটিশের সৃষ্টি না হলেও তাকে স্বত্ববিলোপ নীতির বলি হতে হয়েছিল ৷

লড ডালহৌসি অনেক ক্ষেত্রে লন্ডনের বোর্ড অফ ডাইরেক্টরি পরামর্শকে অমান্য করে স্বত্ববিলোপ নীতির প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন ৷ তিনি মুসলিম বাদে শুধুমাত্র হিন্দুর রাজ্যগুলিতে এই নীতির প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন ৷ স্বত্ববিলোপ নীতি দেশীয় রাজ্যগুলিকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল সে প্রসঙ্গে রাসেল বলেছিলেন,"আমি মনে করি তার দেশীয় রাজ্য দখলনীতি আমাদেরকে কফিনে পেটে পুঁতে দিয়েছে ৷"

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟