পাল যুগে বৌদ্ধ ধর্মে রূপান্তর সম্পর্কে যা জানো তা আলোচনা কর

পাল যুগে বৌদ্ধ ধর্মে রূপান্তর সম্পর্কে যা জানো তা আলোচনা কর

 পাল যুগে বৌদ্ধ ধর্মে রূপান্তর সম্পর্কে যা জানো তা আলোচনা কর

পাল যুগে বৌদ্ধ ধর্মে রূপান্তর সম্পর্কে যা জানো তা আলোচনা কর

র্ম বিষয়ে পাল রাজারা উদার মতবাদ পোষণ করতেন ৷ ব্যক্তিগতভাবে তাদের আলোকে বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ৷ পাল শাসনকালে প্রায় দীর্ঘ চারশত বছর বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মের শেষ আশ্রয় স্তুলে পরিণত হয়েছিল ৷ ইতিমধ্যে বৌদ্ধ ধর্ম মতো ও আচারের মধ্যে নানা পরিবর্তন ঘটেছিল ৷ হিউয়েন সাং সপ্তম শতকে ভারতের যে বৌদ্ধ ধর্ম দেখিয়েছেন তা গৌতম বুদ্ধ অশোক বা কনিষ্কের আমলে বৌদ্ধ ধর্ম থেকে স্বতন্ত্র ৷ আবার পাল যুগে বাংলার যে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচলিত ছিল তার প্রকৃতি অশোক বা কনিষ্কের রাজ্যের প্রচলিত ধর্ম থেকেও আলাদা ৷

আরও পড়ুন

গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর পর সর্বাস্তিবাদের মহাসংঘিকা মহাযান হীনযান ইত্যাদি নানা বিবর্তন বৌদ্ধ ধর্মকে গহ্রাস করেছিল ৷ কিন্তু পাল যুগের বৌদ্ধ ধর্ম মহাজনবাদ থেকেও স্বতন্ত্র ও জটিলতা রূপে ও প্রতিবাদ ছিল ৷ এই সময় মহাযানদের সাথে নতুন দার্শনিক তত্ত্বের অনুপ্রবেশের ফলে যে নতুন বৌদ্ধ ধর্ম সৃষ্টি হয় তা 'তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম' 'সহাজিয়া ধর্ম' বলে অভিহিত হয় ৷

তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্ম বা সহজিয়া ধর্মের আচার্যরা সিদ্ধাচার্য নামে খ্যাত ৷ মোট ৮৪ জন সিদ্ধাচার্য ছিলেন বলে মনে করা হয় ৷ দশম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে এদের আবির্ভাব ঘটেছিল বাংলা ও বিহারে বৌদ্ধ পন্ডিতের সহায়তায় এরা দেশীয় ভাষায় গ্রন্থ ও তিব্বতীয় ভাষায় রূপান্তরিত করেন ৷ মহামোহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালে যে সকল বৌদ্ধ চর্চায় গীতির সংকলন আবিষ্কার করেন এই সকল সিদ্ধাচার্য রচনা ৷ পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এগুলিকে চর্যাচর্য বিনিশ্চয় নামে প্রকাশ করেছেন ৷ এই সকল চর্যাপদ ও সিদ্ধাচার্য রচিত দোঁহা কোষ থেকে সহজযান সম্পর্কে জানা যায়

বাংলায় সহজিয়া ধর্মের আদি কবি বরুচণ্ডীদাসের 'শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' থেকেও নানা তথ্য পাওয়া যায় ৷ সরহ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধাচার্যদের অন্যতম ছিলেন নাগার্জুন তিল্যপাদ, কাহুপাদ, নারোপাদ অদ্বয়বজ্র প্রমুখ ৷ সরোহ-র প্রধান শিষ্য ছিলেন নাগার্জুন ৷ উড়িষ্যার জনৈক্য তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত করেন ৷ তিল্লোপাদ ও নারুপাদ যথাক্রমে পাল রাজা মহিপালের সমকালীন ছিলেন ৷

কালচক্র যান সহজযান , বজ্রজান ইত্যাদি সহজিয়া ধর্মতান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মের নানারূপ আছে ৷ তিব্বতীয় ঐতিহ্য অনুসারে কালচক্রযান ছিল বিদেশাগত ৷ বজ্রজানের ক্ষুদ্রতম স্তরটির নাম সহজযান । সহজযানে দেব দেবী বা পূজা পাঠের কোন বিধান নেই ৷ এই মতটি চরম গুরুবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত ৷ একান্তভাবে রহস্যময় আচার্যের উপর বিশ্বাসী ।

সহজযানীদের মূল লক্ষ্য ছিল মহাসুঃখ অর্জন করা ৷ কঠোর যোগ সাধনার দ্বারা এই মহা সুখ লাভ করা সম্ভব । শরীরের মধ্যে যে ৩২ টি নাড়ি আছে তাদের মধ্যে দিয়ে শক্তিকে মহা সুখ স্থানে পৌঁছে দিতে হবে ৷ শক্তির মহা সুখ স্থানে পৌঁছালে সাধারণ সম্পত্তি ঘটে ৷ সাধক লাভ করে মহা সুখ বা পরমানন্দ ৷ সহজযানদের মতে প্রত্যেক বুদ্ধত্বের অধিকারী এবং এই যুদ্ধের অধীন দেহের অভ্যন্তরে ৷

রহস্যময় সহজিয়া ধর্মের সমকালীন প্রচলিত ধর্মমতে বিরুদ্ধে এক পরোক্ষ বিদ্রোহ বর্জিত হয় ৷ বৈদিক ধর্ম পৌরাণিক হিন্দু ধর্ম জৈন ধর্ম এমনকি আদি বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি তীব্র শ্লেষ ও ব্যঙ্গাতি সহজিয়া গ্রন্থ গুলিতে দেখা যায় । সহজিয়া দের মতে দৈনিক দ্বীপে নৈবিদ্যের মন্তোচরণ অথবা তীর্থ তপবনে গিয়ে লাভ নেই ৷ সরোহ বলেন যে,"সহজ যানীরা অচিন্ত্য যোগী জীবন মৃত্যু তাদের কাছে একা একই বস্তু জারি জন্ম-মরণে ভয় পান, তারাই রস রসায়নের আকাঙ্ক্ষা করেন ৷" এদের স্বর্গ লাভ হয়তো হয় কিন্তু মোক্ষ হয় না । তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সহজ পন্থা ছাড়া পন্থা নাই,সহজ পন্থা ছাড়া গুরুর মুখে শুনিতে হয়।

উপরিক্ত আলোচনার উপর ভিত্তি করে এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় পাল আমলে বঙ্গদেশে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব আধিপত্য বিরাজমান ছিল ৷ প্রসঙ্গক্রমে আলোচিত হয়েছে যে আলোচ্য পর্বে পাল রাজারা বৌদ্ধ ধর্মের সংহতিবৃদ্ধি ও বিস্তার যথাযথ প্রচেষ্টা নিয়েছিল ৷ বাংলা বিহারের বিভিন্ন এলাকার বৌদ্ধ মহাবিহার গুলি স্থাপন ও সংস্কার সাধন মহাযান বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি প্রসারে সিদ্ধাচার্যদের অলসতা অনলস প্রচেষ্টা এবং সর্বোপরি বিভিন্ন দেব দেবীর পূজার জন্য এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ ৷

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ পাল যুগে বৌদ্ধ ধর্মে রূপান্তর সম্পর্কে যা জানো তা আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟