চিনা কমিউনিস্ট পার্টির উত্থানের পটভূমি বা পশ্চাৎ আলোচনা কর গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পেছনে এই দলের সাফল্য বিশ্লেষণ কর

চিনা কমিউনিস্ট পার্টির উত্থানের পটভূমি বা পশ্চাৎ আলোচনা কর গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পেছনে এই দলের সাফল্য বিশ্লেষণ কর

চিনা কমিউনিস্ট পার্টির উত্থানের পটভূমি বা পশ্চাৎ আলোচনা কর গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পেছনে এই দলের সাফল্য বিশ্লেষণ কর

চিনা কমিউনিস্ট পার্টির উত্থানের পটভূমি বা পশ্চাৎ আলোচনা কর গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পেছনে এই দলের সাফল্য বিশ্লেষণ কর

ধুনিক চীনের ইতিহাসে কমিউনিস্ট দলের উত্থান এক অতি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ৷ ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লব চীনের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল ৷ চীনের বুদ্ধিজীবীরা এই সময় থেকে মার্কসীয় দর্শনের প্রতি ক্রমশে আস্থাস্থীল হয়ে পড়েছিল ৷ বিশ্ব রাজনীতিতে সোভিয়েত রাশিয়ার উচ্চারণের প্রভাব বৃদ্ধি এবং শ্রমিক আন্দোলনের কমিউনিস্টদের নেতৃত্ব প্রধান চীনা বুদ্ধিজীবীদের বিশেষ অনুপ্রাণিত করেছিল ৷ এছাড়াও সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর শোষণের চীনের দরিদ্র ও বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছিল যা চীনের সমাজতান্ত্রিক মতবাদ প্রসারে সহায়ক হয়েছিল ‌৷ বুদ্ধিজীবীরা মনে করেছিলেন চীনকে এই দুর্দশা ও দরিদ্রতা থেকে মুক্ত করতে হলে রাশিয়ার ন্যায় সমাজতন্ত্র চীনে প্রতিষ্ঠা করতে হবে ।


আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে "মিন পাউ" পত্রিকা কার্ল মার্কস এর জীবনী প্রকাশ করেছিলেন ৷ ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে চীনা ভাষার অনুমোদিত হয়েছিল ফেডারিক এন্জেলের "introduction to communist manifesto" এবং "the origin of the family" গ্রন্থ ৷ কিন্তু বুদ্ধিজীবী মহলে তখনও সামগ্রিকভাবে সমাজতন্ত্রের প্রভাব ছিল না, ছিল খুবই সীমিত ৷ বিশেষত ৪ঠা মে আন্দোলনের সময় থেকে বুদ্ধিজীবীরা মার্কসবাদ সম্পর্কে আগ্রহ দেখাতে থাকে পাশাপাশি "imperialism - the highest state of capitalism "পুস্তিকায় লেনিনের সাম্রাজ্যবাদের ব্যাখ্যা এবং সোভিয়েত রাশিয়ার পক্ষ থেকে চীনে যার আমলের অবৈধ সুযোগ সুবিধা আগের প্রতিশ্রুতি সমাজতন্ত্রের মর্যাদা বাড়িয়েছিল ৷ অন্যদিকে চিনা ভ্রমণের ফলে চীনে মার্কসবাদের চর্চা বৃদ্ধি পায় ৷ জ্যা শোনা মনে করেন,এই সময় থেকে "communist manifesto",এঞ্জেলোসের "utopain and scientific socialism" এবং কাউটাস্কির "the class struggle" চিনা ভাষায় অনুদিত হয়। এই সময় বেজিং সহ চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেকগুলি পাঠচক্র তৈরি হয়েছিল ৷ যেমন "Society for the study of socialism","Society for the study of Marxist theory" "awalking society", "new study society" সুতরাং এই ভাবেই চীনের সমাজতন্ত্রবাদ বুদ্ধিজীবীদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অঙ্গ রূপে বিকাশ লাভ করতে শুরু করে ৷


মার্কসবাদকে চীনের সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা পরিবর্তনের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে কিনা তা নিয়ে চীনের বুদ্ধিজীবী মহিলা বিতর্ক শুরু হয়েছিল ৷ অনেক বুদ্ধিজীবীরা ধারণা ছিল চীনের সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তনে মার্কসবাদীর ব্যবহার করা যাবে না ৷ তারা কেবল মার্কসবাদ সম্পর্কে তাত্ত্বিক জ্ঞান লাভ করতে চেয়েছিলেন ৷ এই ধরনের তাত্ত্বিক চীনা বুদ্ধিজীবীদের বলা হত "Legal marxist" বা বিধিবদ্ধ মার্কসবাদী ৷ কিন্তু লি-তা- চাও বা চেন-তু-শিউ মনে করতেন চীনে কমিউনিস্টল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা আছে ৷


১৯২০ খ্রিস্টাব্দের গ্রীষ্মকালে সাংহাইয়ের কমিউনিস্ট গোষ্ঠীর নিজেকে পার্টি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এবং একটি কমিটি ও গঠিত হয়েছিল চীনা ঐতিহাসিকরা এই কমিটিকে বলেছিলেন "সেল" এতে শুধু মার্কসবাদী নয়,সমাজতন্ত্রী নৈরাজ্যবাদী ব কুয়োমিংতাং বামপন্থীদেরও দেখা যায় ৷ কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা সঠিক তারিখ তা জানা যায় না কমিউনিস্ট পার্টি সিপিপি প্রকৃতপক্ষে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে জুলাই মাসে সাংহায় শহরে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে৷ সাতটি ছোট কমিউনিস্ট সেল এর মোট ১২ জন প্রতিনিধি শহরে একটি বালিকা বিদ্যালয় মিলিত হন সেখানে লি তাচা উপস্থিত ছিলেন না ৷ উল্লেখযোগ্য উপস্থিত ছিলেন মাও সেতুং এরপর একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয় এবং সদস্য কার্যালয় ও হয় সাংহায় ৷ পার্টির "Secretary General" হন চেন তু শিও হুনান অফিসের প্রধান নিযুক্ত হন মাও সেতুং ৷


চীনে কমিউনিস্টগণ কেতাবি মার্কসবাদ নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন,না কিনা সর্বহারা একনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য বৈপ্লবিক সংগ্রামে অবতীর্ণ হবে তা নিয়ে কংগ্রেস গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছিল ৷ কমিউনিস্ট পার্টি জন্ম লগ্নে অনুপ্রেরণা ছিল বলশেভিক বিপ্লব । আদর্শ ছিল মার্কসবাদ এবং লেনিনের তথ্য অনুযায়ী বিপ্লবের হাতিয়ার হন পার্টি ৷ চিনেন মনে করতেন কমিউনিস্ট পার্টির শিল্প শ্রমিকদের বিপ্লবের হাতিয়ার হিসেবে দেখা উচিত ৷ কিন্তু লি তাও চাও চীনের কৃষকদের মধ্যে বিপ্লবী সম্ভাবনা লক্ষ্য করেছিলেন এই নিয়ে চেইং এবং লি-এর মধ্যে মত পার্থক্য সৃষ্টি হয় ৷ লি - এর অনুগত্য মাও-সে-তুং সম্ভবতই লি-এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল ৷ ইউরোপের কমিউনিস্ট পার্টি গুলি সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য থেকে গড়ে উঠলেও,শোনো মনে করতেন যেহেতু ৪ঠা মে আন্দোলনের সঙ্গে কমিউনিস্টদের উত্থান অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত সেহেতু চিনে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্যে থেকে কমিউনিস্ট পার্টির উদ্ভব হয়েছিল ৷


চীনা কমিউনিস্ট পার্টি সান-ইয়াৎ সেনের কুয়োমিং- তাং দলের সঙ্গে সহযোগিতা করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা হয় ৷ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে মে মাসে অনুষ্ঠিত কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক দ্বিতীয় সম্মেলনে একটি বিতর্ক দেখা দেয় ৷ লেনিন বলেছিলেন পৃথিবীর সমস্ত উপনিবেশিক ও আধা উপনিবেশিক দেশগুলোতে কমিউনিস্ট পার্টি গুলোকে সে দেশের পরিচয় জাতীয়তাবাদী দলগুলি সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তি সংগ্রাম চালাতে হবে ৷ এই বক্তব্যে লেনিনের "thesis on colonial questions" নামে পরিচিত ৷ কিন্তু ভারতীয় মার্কসবাদী মানবেন্দ্রনাথ রায় এর বিরোধিতা করে বলেন,"অনেক ক্ষেত্রে এই পরিচয় জাতীয়তাবাদী দলগুলির সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের বিশ্বাসী কমিউনিস্ট পার্টির সাহায্য গ্রহণ প্রকাশ করেন ৷" সুতরাং সেই ক্ষেত্রে কমিউনিস্ট দলগুলির এককভাবে কাজ করায় বাঞ্ছনীয় ৷ বিশ্ব সাম্যবাদী ইতিহাসের বিতর্ক " Roy-Lenin controversy" এই নামে খ্যাত ৷ অধিকাংশ সদস্যরা লেনিনের বক্তব্যকে গ্রহণ করলেও চিনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রথমে কংগ্রেসে কিন্তু অনেকে কুয়োমিং-তাং দলের সঙ্গে সহযোগিতা প্রশ্ন বিরোধ বাঁধেন ৷


১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে ক্যান্টন শহরে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ও অধিবেশনে এই প্রশ্নের তিন ধরনের মতামত উঠে আসে ৷ চীন মনে করতেন চীন বিপ্লবের দুটি স্তর বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব ও সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ৷ প্রথম বিপ্লব যেহেতু বুর্জোয়া চরিত্রে তাই তার নেতৃত্ব বুর্জয়াদের হাতে থাকবে ৷ তাই এক্ষেত্রে ছেড়ে দেওয়া হয়, কমিউনিস্ট পার্টি বা শ্রমিক শ্রেণীর সেখানে কোন ভূমিকা থাকবে না ৷ দ্বিতীয় মতের প্রবক্তা চাও কুয়ো- তাং এর মতে কুয়োমিং-তাং এর যেহেতু কোনো বৈপ্লবিক ভূমিকা নেই তাই তার সঙ্গে জোর-ধারার কোন প্রশ্ন নেই ৷ তৃতীয় মতের প্রবক্তা মাওসেতুং এর মতে প্রথম দুটি মত দুটি বিপরীত ধরনের বিচ্যুতি চীনের বিচ্যুতি ডানপন্থী বিচ্যুতি এবং চাং-কুয়ো তাও এর বিচ্যুতির বাম বিচ্যুতি যা সংকীর্ণ বাদী প্রস্তাব অনুযায়ী অধিকাংশ সদস্য প্রস্তাব গ্রহণ করেন ৷ কুয়োমিং-তাং এর সদস্য সহযোগিতা করা হবে এবং একই সঙ্গে অগ্রণী শ্রমিক ও কৃষকদের কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যুত্থান করা হবে ৷


কুয়োমিং-তাং দলের নেতা সান-ইয়াৎ-সেন মনে করতেন," জাতীয় বিপ্লবের সব দল ও মতের লোক দিলে আন্দোলন শক্তিশালী হবে ৷"তাছাড়াও তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে,"সোভিয়েত নির্দেশ কমিউনিস্টরা যদি স্বাধীনভাবে চলতে থাকে তাহলে তার জাতীয় বিপ্লবের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যাবে ৷" কমিউনিস্টদের তিনি তার দলে গ্রহণ করে এদের স্বাধীন অস্তিত্বকে মুছে দিতে চেয়েছিলেন ৷ মনে করেছিলেন বৃহৎ কুয়োমিং-তাং দলের মধ্যে কমিউনিস্টরা মিশে যাবে কিন্তু কমিউনিস্টদের আসল লক্ষ্য তিনি ধরতে পারেননি ৷


১৯২৭ থেকে ৩৭ পর্বে চীনের সমরনায়কবাদের প্রতিরোধে সমাজ বা সাম্রাজ্যবাদী অগ্রাসন,কুয়োমিং- তাং দলের দক্ষিণ ও বামপন্থী বিরোধী চেয়েছিলেন ৷ তবু কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে অভিযান চালান এই সময় কমিউনিস্টদের মধ্যে দুটি গোষ্ঠীর উদ্ভব হয় ৷ একটি ছিলেন সেন্ট্রাল পলিটব্যুরো নিয়ন্ত্রণাধীন অপরটি ছিল মাও সে তুং এর নিয়ন্ত্রণাধীন ৷ শেষ পর্যন্ত মাউসে তুং ক্ষমতায় শীর্ষে পৌঁছেছিলেন এরপর ১৯৩৭ থেকে ৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আট বছর ধরে জাপানি অগ্রসন চলেছিলেন ৷ অর্থাৎ কুয়োমিং-তাং নেতা চিয়াং-কাই- শেকের পাঁচটি অভিযান পাঠিয়েছিলেন সাম্রাজ্য বাদের নিধন করার জন্য ৷ কিন্তু শেষ মাউ-সে-তুং এর নেতৃত্বে সাম্যবাদীরাই সফল হয়েছিলেন মনে করেন ৷ সাফল্যের অন্যতম কারণ হলো আট বছর ব্যাপী জাপান বিরোধী যুদ্ধ যা চীনকে সাময়িক আর্থিক ও আধ্যাত্মিক দিক থেকে থেকে দুর্বল করেছিল ৷ জাপানি অগ্রসনের কেন্দ্র ছিল শহরগুলি, যেগুলি জাতীয়তাবাদের ক্ষমতার কেন্দ্র ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সাম্যবাদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ৷ জাতীয়তাবাদীরা মার্কিন সামরিক ও আর্থিক সাহায্য পেলেও সেনাবাহিনী ছিল রণক্লান্ত,জাতীয়তাবাদী রণীতি ঠিক ছিল না । চিয়াং এর নেতৃত্বে মাঞ্চুরিয়াতে সৈন্য পাঠানো ঠিক হয়নি ৷ সাম্যবাদের প্রধান কর্ম ইয়েনান দখলের প্রচেষ্টা ও ঠিক ছিল না ।


যাইহোক ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে জাপানের আত্মসমর্পণের পর কুয়োমিং-তাং ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে ক্ষমতা দখলের পুনরায় রক্তক্ষয় গৃহযুদ্ধ শুরু হয় ৷ যুদ্ধের সময় কেএমটি দল বিদেশ থেকে যে অস্ত্রশস্ত্র গ্রহণ করেছিলেন সেগুলি কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য উঠে পড়ে লাগে ৷ কিন্তু দীর্ঘ আট বছর ধরে জাপ বিরোধী সংগ্রামের পর চিনে সাধারণ মানুষ একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক জীবনের জন্য উন্মুক্ত হয়ে উঠেছিল ৷ চীনা কমিউনিস্ট পার্টি চীনের সাধারণ মানুষের মনের ভাষাকে পড়তে বলেছিল ৷ তাই 1945 এর ২৫শে আগস্ট " decoration on the current situation" নামক একটি ইস্তেহার প্রকাশ করে গণতন্ত্র ও একটার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উপর জোর দেয় ৷ এই উদ্দেশ্যে কমিউনিস্ট পার্টি কিং KMT দলের সঙ্গে একটি সমঝোতা আছে ৷ চাও কিং এর গৃহযুদ্ধ এড়ানোর জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ৷ তার শর্তানুযায়ী চেজিয়াং দক্ষিণ কিয়াং-সু ,দঃ আনহুই অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেন কিন্তু কুয়োমিং-তাং দল চুক্তির শর্ত ভেঙ্গে কমিউনিস্ট নিয়ন্ত্রিত সান্টুং ও হান্টাং অঞ্চলে কুয়োমিং-তাং সৈন্য পাঠালে কমিউনিস্ট ফৌজের হাতে আক্রমণকারী পরাজিত হয় ৷


এইভাবে মাও সে তুং এর নেতৃত্বে চিনা কমিউনিস্ট দল ক্রমশই শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল ৷ তাদের সমর শক্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল কমিউনিস্টরা হুনান ও হোপ্পে দখল করেছিলেন ৷ মাঞ্চুরিয়া থেকে KMT দলের পরাজয় এই ইঙ্গিত দিয়েছিল যে চীনে তাদের প্রভুতের অবস্থানের দিন আসন্ন ৷ এক দিকে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি অর্থনৈতিক সংকট কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধ,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তবোদারি প্রভৃতি কারণে একদিকে যেমন চিয়াং সরকার সরকারের বিরুদ্ধে জঙ্গী ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তেমনি কৃষক শ্রমিক শ্রেণীর সরকারের প্রতি মোহভঙ্গ ভেঙেছিল ৷ এই সময়ে বুদ্ধিজীবী শ্রেণী ও সরকারের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে থাকে ৷ এরপর ১৯৪৯ এর ২৮ এ এপ্রিল নানকিং দখল করে নেন ফলে কুয়োমিং-তাং শাসনের অবসান হয় ।


কুয়োমিং-তাং শাসনের অবসানের ঘটনার পর চীনে গণতান্ত্রিক মানুষ নতুন সরকার গঠনের কাজে উঠে পড়ে লাগে ৷ 1949 সালে ১লা জুলাই মাও " on the People's democratic dictatorship" নামক একটি প্রবন্ধ রচনা করেন ৷ এই প্রবন্ধে তিনি চনের নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থা চরিত্র ও মৌলিক নীতিগুলির বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেন ৷ তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে," শ্রমিক শ্রেণী ও কৃষকদের মৈত্রীর উপর নির্ভর করে কমিউনিস্ট পার্টির মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বে একটি নতুন গণপ্রজাতন্ত্রী চীন গড়ে উঠবে ৷" অবশেষে ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ১লা অক্টোবর পিকিং এর ঠিক মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত স্বর্গীয় শান্তির উন্মুক্ত ময়দানে এক বিশাল জনতার সামনে মাও-সে-তুং গণপ্রজাতান্ত্রিক চীন প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করে ৷ সোচ্চার কন্ঠে বলেন," আর কোনদিন চীনের মানুষ দাসত্বের বন্ধনে শৃঙ্খলিত হবে না ৷" কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক গোষ্ঠীর সহায়তায় গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠাতা চীনের মানুষের সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্ততন্ত্র বিরোধী "নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লবকে সম্পূর্ণ করেছিল ৷ ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের চৌঠা মে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে চীনের ওই ইতিহাসে যে নতুন পর্বের আরম্ভ করেছিল ৷ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ১লা অক্টোবরের নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লবের বিজয়ের মধ্য দিয়ে সেই পর্যায়ে পরিসমাপ্তি ঘটিয়েছিল ৷


পরিশেষে বলা যায় গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠা হল চীনের সমাজতন্ত্রের পথে উত্তরণের প্রচেষ্টার ইতিহাস ৷ এই উত্তরণের মূল কারিগরি ছিলেন মাও-সে-তুং ৷ বিদেশে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রবর্তন মাও এর দুইয়ের আবেদন চীনা জাতির অন্তরের নতুন প্রেরণা দিয়েছিলেন ৷ মাও এর নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মূল লক্ষ্য বা আদর্শ ছিল এমন একটি শক্তিশালী চীন গঠন করা যেখানে কোন সামাজিক অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকবে না ৷



সম্ভাব্য প্রশ্নঃ -

(১). চীনা কমিউনিস্ট পার্টি কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়

(২). চীনা কমিউনিস্ট

(৩). চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা

(৪). চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকা pdf

(৫). চীনের কমিউনিস্ট পার্টির গঠন ও কার্যাবলী

(৬). চীনে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟