বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ সম্পর্কে আলোচনা কর

 বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ সম্পর্কে আলোচনা কর

বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ সম্পর্কে আলোচনা কর

রাসি দেশে সমাজতান্ত্রিক চিন্তার জন্ম হলেও সমাজতন্ত্রের বৈজ্ঞানিক রূপটি  উপস্থাপিত করেছেন মার্কস ও তার বন্ধু এঙ্গেলসমাক্স ও এঙ্গেলস প্রচারিত সমাজবাদ বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ নামে পরিচিত কারণ মাক্স ও এঙ্গেল কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্ট গ্রন্থে মানবসমাজ কি কেন তার পরিবর্তন হয় কিসের ভিত্তিতে পরিবর্তন হচ্ছে এই সকল বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত ও বস্তুনিষ্ঠ নিয়ে বিশদ বিবরণ দিয়েছেন ৷



আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

বৈজ্ঞানিক সমাজবাদের প্রবক্তা মার্কস ও অ্যাঙ্গেলস বলেছেন আজ পর্যন্ত যতগুলি সমাজ দেখা গেছে তাদের সকলের ইতিহাস হল শ্রেণী সংগ্রামের ইতিহাস মার্কস বলেছে পুঁজিবাদী সমাজে শাসন শোষণ যখন চরম পন্থায় পৌঁছাবে তখন সর্বহারা শ্রেণী বিপ্লবের মাধ্যমে পুজি প্রতি শ্রেণীকে হারিয়ে দিয়ে নিজেরাই রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করবে এবং সর্বহারা শ্রেণীর একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা হবে। এই সমাজের শ্রেণী বৈষম্য থাকবে না ফলে শ্রেণী শোষণের যন্ত্র ও রাষ্ট্রের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে রাষ্ট্রের অবলুপ্তি ঘটবে ৷


বৈজ্ঞানিক সমাজবাদের বৈশিষ্ট্য মার্কস ও এঙ্গেলস প্রচারিত বৈজ্ঞানিক সমাজবাদের বৈশিষ্ট্য গুলি

 হল,

প্রথমত বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ কাল্পনিক সমাজবাদকে প্রত্যাখ্যান করে কারণ কাল্পনিক সমাজবাদ পুঁজিবাদের শোষণ মূলক চরিত্র কে উপলব্ধি করতে পারেননি। তারা শ্রেণী সংগ্রাম বা বিপ্লবের পরিবর্তে শ্রেণী সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে সমাজবাদ প্রতিষ্ঠার কথা বলে সব বাস্তবে কখনোই সম্ভব নয় বলে বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ মনে করেন দ্বিতীয়তঃ বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ মনে করেন যে কোন পণ্য উৎপাদন করার জন্য শ্রমিকরা যতটা সময় তার বিনিময়ে তার সামান্য পরিশ্রমিকই পায় এবং অতিরিক্ত অর্জিত মূল্য মালিকরাই আত্মসাৎ করে নেয় মাক্স ও   বলেছেন শ্রমিক কেউ বঞ্চিত করে মালিক একাই অতিরিক্ত অর্জিত মূল্য বা উদ্বৃত্ত মূল্য আত্মসাৎ করে মালিক সেনের উদ্বৃত্ত ও মূল্য আত্মসাৎ করার জন্যই শ্রমিকের ওপর শোষণ প্রেরণ করতে থাকে তৃতীয় ঐতিহাসিক বস্তুবাদ এর মূল বক্তব্য হল বস্তুকে কেন্দ্র করে সমাজের পরিবর্তন হয়। বস্তু বলতে সমাজের উৎপাদন ব্যবস্থা কে বোঝায় উৎপাদন ব্যবস্থা দুটি দিক আছে। এক উৎপাদন শক্তি এবং দুই উৎপাদন সম্পর্কউৎপাদন শক্তি ও উৎপাদন সম্পর্কের মধ্যে সঙ্গতি বজায় থাকলে উৎপাদন কার্য চলতে পারে। কিন্তু নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলেউৎপাদন শক্তির উন্নতি ঘটে ফলে উৎপাদন শক্তির সঙ্গে উৎপাদন সম্পর্কে সংগতি থাকে না হলে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয় এবং সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন দেখা দেয় চতুর্থত বৈজ্ঞানিক সমাজবাদের শ্রেণি সংগ্রামের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন পুঁজিবাদী সমাজে পুঁজিপতিরা শ্রমিক শ্রেণীকে শোষণ করে এবং এই কাজ রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে চূড়ান্তভাবে শোষিত হওয়ার ফলে শোষিত শ্রমিক শ্রেণী স্বাভাবিকভাবেই সেই শোষণের হাত থেকে মুক্তির অন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে ফলে উভয়ের মধ্যে শ্রেণী সংগ্রাম শুরু হয় মার্কস ও এঙ্গেলস বলেছেন পুঁজিবাদী সমাজ সহ প্রতিটি শ্রেণীর বৈষম্যমূলক সমাজের শ্রেণী সংগ্রামের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। এই শ্রেণী সংগ্রামের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ প্রতিষ্ঠিত হবে পঞ্চমত বৈজ্ঞানিক সমাজবাদের প্রথম পর্যায়ে রাষ্ট্র সর্বহারা শ্রেণীর অধীনে শোষণ মূলক কাজের পরিবর্তে কল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত হবে রাষ্ট্র কল্যাণমূলক কাজ সম্পাদন করতে করতে সমাজকে সুস্থ ও স্বনির্ভর করে তুলবে, অবশেষে নিজেকে অপ্রয়োজনীয় করে তুলবে এবং রাষ্ট্র তখনই নিজেই শুকিয়ে যাবে স্রষ্টত বৈজ্ঞানিক সমাজবাদের প্রবক্তা  মার্ক ও ইংগেল ইংরেবলেছেন সর্বহারা বিপ্লবের পথ ধরে সমাজবাদ প্রতিষ্ঠিত হলেও পুঁজিপতিরা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় না তারা সমাজবাদের মধ্যে গোপন অবস্থান করে হারানো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য সমাজবাদের বিরুদ্ধে প্রতি বিপ্লবের জন্য ষড়যন্ত্র করে এই প্রতি বিপ্লবের ষড়যন্ত্র কে দমন করার জন্য সর্বহারা শ্রেণী রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে

 সপ্তমত সর্বহারা শ্রেণী বিপ্লবের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাদী ধ্বংস হওয়ার পর যে বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ গড়ে ওঠে সেই বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ হল সাম্যবাদের প্রথম স্তর অর্থাৎ সাম্যবাদের উত্তরণের প্রথম পদক্ষেপ হলো বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ


সমালোচকরা বলেছেন মার্কসবাদ অর্থনৈতিক উপাদানের ওপর মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং অন্যান্য উপাদানের ভূমিকা কেও অস্বীকার করেছেন সমালোচকরা বলেছেন সমাজ পরিবর্তনের জন্য বিপ্লব অপরিহার্য নয় বিপ্লব সম্পর্কে মার্কসের ভবিষ্যৎবাণী বর্তমানে ভুল প্রমাণিত হয়েছে সমালোচকরা আরো বলেছেন রাজনীতির মার্কসীয় আলোচনার বিক্ষিপ্ত। ফলে মাক্স ও রাজনীতির ওপর একটি সুসংহত চিত্ত তৈরি করা যায় না 



সমালোচিত হলেও মার্কসবাদের গুরুত্বকে কোনভাবেই অস্বীকার করা যায় না মার্কসবাদ ঐতিহাসিক বস্তুবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজ পরিবর্তনে কারণ বৈজ্ঞানিকভাবেই বিশ্লেষণ করেছে তাই মার্কসবাদ বৈজ্ঞানিক সমাজবাদী পরিণত হয়েছে। বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তিতে এক নতুন সাম্যবাদী সমাজের চিত্র আমাদের উপহার দিয়েছে





তোমাকে অনেক ধন্যবাদ বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ সম্পর্কে আলোচনা কর এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟