ইসলাম ধর্মের প্রচারের আগে আরব দেশের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। ইসলাম ধর্মের প্রচার আরব দেশে কী বদল এনেছিল?
ইসলাম ধর্মের প্রচারের আগে আরব দেশের পরিচয়-
থিবীর বৃহত্তম উপদ্বীপ আরব দেশের পশ্চিমে লোহিত সাগর, পূর্বে পারস্য উপসাগর ও দক্ষিণে আরব সাগর অবস্থিত। আরব উপদ্বীপের অধিকাংশই মরুভূমি অঞ্চল। মরু অঞ্চলের অধিবাসীদের অধিকাংশই ছিল যাযাবর। তারা বেদুইন নামে পরিচিত ছিল। তাদের কোনো স্থায়ী বাসস্থান ছিল না। তারা ছিল কষ্টসহিষ্ণু, সাহসী ও দুর্ধর্ষ।
আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন
খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকের শুরুতে কিছু কিছু আরব উপজাতির প্রধান জীবিকা ছিল ব্যাবসা। মক্কা ও মদিনা এখানকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। মক্কা শহর একটি বাণিজ্যকেন্দ্ররূপে গড়ে ওঠে। বাণিজ্য উপলক্ষ্যে আরব বণিকরা বিদেশে যেত। এই উপলক্ষ্যে খ্রিস্টান ও পারস্য দেশের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ গড়ে ওঠে। তাদের পরিচয় ঘটে ইহুদি, খ্রিস্টান ও পারসিক ধর্মমতের সঙ্গে। সমুদ্রপথে তারা ভারতের পশ্চিম উপকূলের সঙ্গে ব্যাবসাবাণিজ্য করত।
আবার, এইসময় নগরের দখলদারি নিয়ে আরবের বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকত। ফলে আরব জাতির সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনে চরম অধঃপতন নেমে এসেছিল। এইরূপ পরিস্থিতিতে আরব দেশে হজরত মোহম্মদ প্রবর্তিত ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব ঘটে।
বিভিন্ন আরব উপজাতিদের মধ্যে ধর্মীয় দ্বন্দ্ব বন্ধ করার জন্য হজরত মোহম্মদ একটি বিশ্বাসকে চালু করেছিলেন। ইসলাম ধর্মের প্রচারের ফলে বিভিন্ন আরব উপজাতির মধ্যে ধর্মীয় ঐক্য তৈরি হয়। হজরত মোহম্মদ মক্কা ছেড়ে মদিনায় চলে আসেন, সেইসময় থেকে হিজরি অব্দ নামে ইসলামীয় অব্দ বা সাল গণনা শুরু হয়। দশ বছরের মধ্যেই হজরত মোহম্মদ আরব ভূখণ্ডের বিশাল এলাকা দখল করেন। মক্কাতেও তাঁর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুর পর একশো বছরের মধ্যে আরবরা এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে এক বিরাট সাম্রাজ্য গঠন করে।
