প্রাচীন ভারতের নারীদের পরিবর্তনশীল অবস্থান লেখ

প্রাচীন ভারতের নারীদের পরিবর্তনশীল অবস্থান লেখ

প্রাচীন ভারতের নারীদের পরিবর্তনশীল অবস্থান লেখ

প্রাচীন ভারতের নারীদের পরিবর্তনশীল অবস্থান লেখ

পৃথিবীর সব সভ্যতা নারীকে দেখা হয়েছে বস্তু হিসাবে না হয় উন্নত পশু হিসাবে ৷ মানুষরূপে নয় সুকুমারি ভট্টাচার্য নারীকে বলেছেন "উপ মানব নারীর জন্ম হলেও অজন্ম পান"। বিশ্ববরণ্য কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন "শুধু বিধাতার সৃষ্টি নহ তুমি নারী পুরুষ বলেছে সৌন্দর্য পূজারী আপন অন্তর হতে"৷



পুরুষ তাই নারীর দ্বিতীয় বিধাতা এ প্রসঙ্গে কবিগুরু আরো বলেছেন "অর্ধেক মানবী তুমি অর্ধেক কল্পনা, নারী তাই পূর্ণ মানব নয়" ৷ প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে নারীর অবস্থান সমভাবে প্রকাশিত হননি ঋক বৈদিক যুগ থেকেই পরবর্তীতে এই নানান উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে নারীর অবস্থা আবির্ভূত ও বিকশিত হয়েছে৷ ঋকবেদের সময়কাল হলেও মোটামুটি ভাবে খ্রিস্টপূর্ব দ্বাদশ শতক থেকে খ্রিস্টয় পঞ্চম অর্থাৎ সতেরো শতক এই দীর্ঘ সময়ে প্রথম পর্বে নারীরা সমাজে মোটামুটি ভাবে মর্যাদা লাভ করলেও পরবর্তী ক্ষেত্রে ক্রমশো তাদের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক এবং মর্যাদাহীন হয়ে ওঠে ৷


প্রাচীন ভারতের অবস্থান সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য আমরা যে সকল গ্রন্থ গুলির ওপর বিশেষভাবে নির্ভর করি তাদের মধ্যে অন্যতম ঋকবেদ, শতপ্রথব্রাহ্মণ, মনুসংহিতা,স্থিতিচন্দ্রিকা ,বৌদ্ধারন , ধর্মসূত্র,উপনিষদ, এছাড়াও রামায়ণ,মহাভারত,বৌদ্ধ ও জৌন ধর্মগ্রন্থ ৷ 


সিন্ধু সভ্যতার বিভিন্ন মাটি মূর্তি থেকে তাদের সম্মানের বিষয়ে একাধিক ধারণা লাভ করা যায় ঋকবেদের পঞ্চম অংশে গ্রাম কেন্দ্রিক জীবনে নারীর মর্যাদার সঙ্গে জীবন কাটানোর অধিকার লাভ করেছিল ৷ এই যুগে নারীকে ভোরের রূপ মমতার সঙ্গে তুলনা করা হতো ৷ এই যুগে নারীরা বেদ পাঠ ও উপনয়নের অধিকার গুলি ছিল মহিলাদের পছন্দের পতি নির্বাচনের অধিকার ছিল ৷ তারা যোগ্য কর্মে অংশ নিতে পারত ৷ এই যুগের আপালা সোগী লোপামুদ্রা, জয়ীতা,বিশ্বকলা প্রমুখ ছিলেন স্বর্ণমধুর নারী ৷



কিন্তু পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীর অবস্থান অতি দ্রুত অবলম্বন ঘটে ৷ নারী তার প্রতি নির্বাচনের অধিকার হারায় ৷ ঋকবেদ  থেকে জানা যায় বিয়ের সময় কন্যাকে কেবল বরকে নয় পরিবারকে দান করা হতো। ব্রাহ্মণ সাহিত্য থেকে জানা যায় ধন এবং নিজের দেহের উপরে ও নারীর নিজের অধিকার ছিল না ৷ পরবর্তী বৈদিক যুগে প্রত্যন্তদের প্রতি কামনা অত্যন্ত বেড়ে যায়। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র বলা হয়েছে "পুত্র প্রজন্ম জনের জন্য নারীর সৃষ্টি এই যুগে একাধিক নির্মম কোথার মধ্যে অন্যতম ছিল শ্রেথজা প্রথা। অর্থাৎ পুত্র সন্তানহীন মহিলাকে পুত্রের জন্য শশুরালয়ের আত্মীয়-স্বজন বা প্রতিবেশী পুরুষের সঙ্গে সহবাস করতে বাধ্য করা হতো ৷



প্রাচীন ভারতে গণিকা ব্যবস্থার বিশেষ প্রচলন ছিল ৷ এই দেবদাসী প্রথা ব্যাপক হারে বেড়েছিল,সতি শব্দের কোন পুংলিঙ্গ নেই যার অর্থ চরিত্র মৌল সুচিতা। কেবলমাত্র নারীদের জন্যই ছিল বলা হয়েছে স্ত্রী হবে স্বামীর অনুগ্রামী এবং পদানুসারণি ৷ মৈত্রায়নী সংহিতায় বলা হয়েছে সম্পত্তিতে নারীর কোন অধিকার থাকবে না অর্থাৎ, নারীকে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে ৷



ভারতবর্ষে মহাকাব্যের যুগে নারীদের মর্যাদা হীনতা ছিল অত্যন্ত প্রবণ ৷ সীতাকে উদ্ধার করার পর রামচন্দ্র সীতাকে বলেছিলেন,যুদ্ধ করে যে জয়লাভ করে ছি সে তোমার জন্য নয়, এই যুদ্ধ ছিল আসলে রামের রাবণের প্রতিকার ও তার পৌরসকে আঘাত করার যুদ্ধ। মহাভারত প্রাচীন ভারতের জনপ্রিয় মহাকাব্য মহাভারত কাব্যের ভিন্ন বলেন "ইহ লোকে স্ত্রীকে অপেক্ষা পদার্থ আর কিছু নয়" বিষর্গ ও মৃত্যুর সাথে নারীদের তুলনা করা হয়েছে ৷


ভারতবর্ষের প্রাচীনকাল হতে নারীদের পরিবর্তনশীল অবস্থার পর্যালোচনা থেকে জানা যায় বৈদিক যুগে প্রথম পর্বে নারীরা কিছুটা স্বাধীন ও মর্যাদা সহকারে জীবনযাপনের সুযোগ পেলেও পরবর্তীকালে নারীদের অসহতা জীবন শুরু হয় বহুকাল ধরে বাল্য বিবাহ বিবাহ দেবদাসী প্রথা শ্বেতঙ্গ প্রথা এই সমস্ত কিছুই মহিলাদের জীবনকে দুরবিসহ করে তোলে তাই প্রাচীন ভারতে নারীদের সম্পর্কে বোধ হয় বলা যায় কন্যাই হলো কন্যাই কষ্টের কারণ ৷

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ প্রাচীন ভারতের নারীদের পরিবর্তনশীল অবস্থান লেখ এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟