১৯৭২ সালে ইন্দিরা-মুজিবের চুক্তির গুরুত্ব আলোচনা করো।

  ১৯৭২ সালে ইন্দিরা-মুজিবের চুক্তির গুরুত্ব আলোচনা করো।

১৯৭২ সালে ইন্দিরা-মুজিবের চুক্তির গুরুত্ব আলোচনা করো।


১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘ পঁচিশ বছরের মেয়াদী এক চুক্তি সম্পাদিত হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমানের পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা ও আদর্শ এবং ধ্যান-ধারণা এই চুক্তির বিভিন্ন শর্তে প্রতিফলিত এবং ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রী চুক্তির ভিত্তি হিসাবে উভয় দেশের আদর্শগত ঐকা বাস্তবে রূপদানের প্রচেষ্টা দেখা যায় ৷



ইন্দিরা-মুজিব মৈত্রী চুক্তির প্রধান শর্তঃ

  1. প্রথমতঃ উভয়দেশ উভয়দেশের পারস্পরিক স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং রাজ্যসীমার স্থাণত্ব মেনে চলবে। এই দুটি দেশ একে অপরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা রেকে বিরত থাকবে। বর্তমানে উভয় দেশের মধ্যে যে মৈত্রী ও সৌভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক চে উঠেছে তা বৃদ্ধির জন্য সৎ-প্রতিবেশী সুলভ ব্যবহার, বন্ধুত্ব, পারস্পরিক সততার প্রতি অনুসরণ করবে।
  2. দ্বিতীয়তঃ পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের সম-মর্যাদায় বিশ্বাসী, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে কল মানুষের সমতায় বিশ্বাসী ভারত ও বাংলাদেশ পৃথিবী থেকে ঔপনিবেশিকতা, কাবৈষম্য, জাতিবৈষম্য প্রভৃতি বিভেদমূলক যাবতীয় ব্যবস্থার অবসানের জন্য সচেষ্ট থাকবে।
  3. তৃতীয়তঃ ভারত ও বাংলাদেশ জোট-নিরপেক্ষ নীতিতে দৃঢ় বিশ্বাসী। উভয় দেশ শন্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতির মাধ্যমে পৃথিবীতে শান্তি বজায় রাখা সম্ভব বলে মনে করে। ভারত ও বাংলাদেশে উভয় রাষ্ট্রই মনে করে যে, পারস্পরিক শ্রদ্ধার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শক্তি, নিরাপত্তা, বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা যেতে পারে।
  4. চতুর্থতঃ উভয় দেশের মধ্যে শিক্ষা, শিল্পকলা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, খেলাধূলা, স্বাস্থ্য প্রভৃতি উন্নয়নের উদ্দেশ্যে সহযোগিতা ও আদান-প্রদান চলবে।
  5. পঞ্চমতঃ এই মৈত্রীচুক্তি আপাততঃ পঁচিশ বছরের জন্য স্বাক্ষরিত হলেও এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে আবার নতুন চুক্তি সম্পাদিত হবার সাথে সাথে কার্যকরী হবে।


ভারত ও বাংলাদেশের মৈত্রীচুক্তি ভারত উপমহাদেশ তথা সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনৈতিক ভারসাম্যের এক মৌলিক পরিবর্তন সাধন করে। সমগ্র এশিয়ার রাজনীতিতে এই মৈত্রীচুক্তির প্রভাব গভীরভাবে পড়ে এবং এই চুক্তির ফলে ভারত উপমহাদেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার সুযোগ বৃদ্ধি পায়।


তবে পরবর্তীকালে ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এবং এই দুই দেশের মৈত্রীর ক্ষেত্রে নানারূপ বাধার সৃষ্টি হয়। ফলে উভয় দেশের সম্পর্কের কিছু অবনতি ঘটে এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীচুক্তির পূর্ন রূপায়ণ নানাভাবে ব্যাহত হয়। বিশেষতঃ বাংলাদেশের সরকারের ফারাক্কা বাঁধ সংক্রান্ত অযৌক্তিক ও অনমনীয় মনোভাব ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক তিক্ত করে তোলে। ছিট মহলের সমস্যা, সীমানা নির্দিষ্টকরণ ও পূর্বাশা দ্বীপের সমস্যা নিয়েও উভয় দেশের মধ্যে রাজনৈতিক জটিলতা দেখা দেয়। 

তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ১৯৭২ সালে ইন্দিরা-মুজিবের চুক্তির গুরুত্ব আলোচনা করো। এই নোটটি পড়ার জন্য

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟