আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে অযোধ্যার উদ্ভব আলোচনা কর অথবা,মুঘল শাসনে শাসনের শেষ পর্বে অযোধ্যা কিভাবে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল?

আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে অযোধ্যার উদ্ভব আলোচনা কর অথবা,মুঘল শাসনে শাসনের শেষ পর্বে অযোধ্যা কিভাবে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল?

আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে অযোধ্যার উদ্ভব আলোচনা কর অথবা,মুঘল শাসনে শাসনের শেষ পর্বে অযোধ্যা কিভাবে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল?

আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে অযোধ্যার উদ্ভব আলোচনা কর

সুদীর্ঘ মুঘল শাসনাধীনে ভারতবর্ষে একাধিক যেমন শক্তিশালী কেন্দ্রীভূত সার্বভৌমত্ব অখন্ড রাজ্য ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল যা ভারতবর্ষের আর্থ সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বলিষ্ঠতা প্রদান করেছিল, এর পাশাপাশি নানান ধর্ম নানান মত প্রাকৃতিক বৈচিত্র সর্বোপরি সাংস্কৃতিক ভিন্নতার বাস্তবতার জায়গায় দাঁড়িয়ে মুঘল আমলে কেন্দ্রীয় শাসক শাসনের মধ্যে থেকেও অনেকটা স্বাধীনতা ও সক্রিয়তা নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক অঞ্চলের শাসন গড়ে উঠেছিল ৷ যার মধ্যে অন্যতম ছিল অযোধ্যা ৷

আপনি চাইলে এগুলো পড়তে পারেন

মধ্য এশিয়ার খোরাসান অঞ্চল থেকে ভারতে আগত সাদাত খাঁ ছিলেন স্বাধীন অযোধ্যা রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ৷ তিনি মুঘল দরবারের বিশেষ প্রতিভা প্রতিপত্ত লাভ করেন এবং তাকে সুবাদার পদে নিযুক্ত করা হয় । সাদভ খাঁ ছিলেন সাহসী বিচক্ষণ উদ্যোগী এবং দীর্ঘ চেতা ব্যক্তিত্ব ৷ তার হাতেই অযোধ্যাতে একটি শক্তিশালী সংস্কৃতিক বৈচিত্র সমন্বয় সুশাসন যুক্ত এক আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে অযোধ্যা মাথা তুলে দাঁড়ায় ৷

মুঘল সাম্রাজ্য যখন দুর্বল হয়ে পড়তে থাকে সেই সুযোগে সাদাত খাঁ অযোধ্যা ও তার পার্শ্ববর্তী বিস্তীর্ণ উর্বর অঞ্চল নিয়ে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নেন ৷ তিনি অযোধ্যা বিদ্রোহী জমিদারদের কঠোর হাতে দমন করে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন ৷ আবার বশ্যতা স্বীকারকারী আনুগত্য জমিদারদের তিনি স্বপদে বহাল রাখার চেষ্টা করেন ৷ ১৭২৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি নতুন রাজস্ব ব্যবস্থা চালু করেন এবং কৃষকদের ওপর রাজস্ব সংক্রান্ত অতিরিক্ত শোষণ যাতে সংঘটিত না হয়ে পড়ে সেদিকেও তিনি সু নজর দেন ৷ তিনি রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু প্রজাদের প্রতি সমতা ও নিরপেক্ষতা নীতি গ্রহণ করেন ৷ প্রশাসনের অতি উচ্চ পদে বহু হিন্দু কর্মচারীদের নিযুক্ত করেন ৷

সাদাত খাঁ সেনাদল কে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন এবং নিয়মিত বেতনদানের ব্যবস্থা করেন ৷ ১৭৩৯ সালে তার মৃত্যুর আগে সাদাত খাঁ অযোধ্যা নবাব পদে বংশানুক্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন ৷ অযোধ্যা কার্যত স্বাধীন রাজ্য পরিণত হয় ৷ তিনি অযোধ্যা রাজ্যের সাথে বারানসি ও এলাহাবাদ কে সংযুক্ত করেন ৷ নাদির শাহের আক্রমণ কালে বাধাদানের জন্য বাদশাহের অনুমোদনে যুদ্ধই দেন এবং ওই বছরেও তিনি আত্মহত্যা করেন ৷

সাদাত খান মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী হিসেবে তৎপর্য অযোধ্যার পদে নিযুক্ত হন তিনি বিদ্রোহী জমিদার পাঠানদের দমন করে ৷ অযোধ্যায় সু শাসন ধরে রাখেন তিনি আহমদ শাহ আফার আলীর বিরুদ্ধে মুঘল সম্রাটকে সাহায্য করার জন্য পেশওয়ার সাথে চুক্তিবদ্ধ হন ৷ মুঘল দরবারে তার প্রভাব প্রতিপত্তা বৃদ্ধি পেতে থাকে ৷ তিনি নিজ রাজ্যের ন্যায় বিচার ও ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করেন ৷

সদফর জঙ্গের সময় থেকে অযোধ্যা নবাবদের রাজধানীর লখনৌ কে কেন্দ্র করে লখনৌ সংস্কৃতির উদ্ভব হয় ৷ সাহিত্য,সংগীত, নৃত্যকলা, শিল্প-স্থাপত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে লখনও খরানোর উদ্ভব হয় ৷ স্থাপত্যের ক্ষেত্রে ও চরম খাতি লাভ করেন ৷ লখনও ঘরানার উচ্চাঙ্গ সংগীত আজও ভারতের শাস্ত্রীয় সংগীতের জগতে ঝঞ্জরিত হয়ে আছে ৷ হাতের কাজ চিকনের কাজ সুতিশিল্পেদের প্রশংসা কেবল ভারতবর্ষেই নয় বহির্বিশ্ব প্রশংসিত হতে থাকে ৷

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟