ধর্মশাস্তে বর্ণিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রাচীন ভারতের নারীর সামাজিক মর্যাদা নিরূপণ করো / প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে নারীর সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল তার ওপর একটি প্রবন্ধ রচনা কর

ধর্মশাস্তে বর্ণিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রাচীন ভারতের নারীর সামাজিক মর্যাদা নিরূপণ করো / প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে নারীর সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল তার ওপর একট

 ধর্মশাস্তে বর্ণিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রাচীন ভারতের নারীর সামাজিক মর্যাদা নিরূপণ করো / প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে নারীর সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল তার ওপর একটি প্রবন্ধ রচনা কর 


ধর্মশাস্তে বর্ণিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রাচীন ভারতের নারীর সামাজিক মর্যাদা নিরূপণ করো / প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে নারীর সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল তার ওপর একটি প্রবন্ধ রচনা কর


ধর্মশাস্তে বর্ণিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রাচীন ভারতের নারীর সামাজিক মর্যাদা নিরূপণ করো / প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে নারীর সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল তার ওপর একটি প্রবন্ধ রচনা কর


বৈদিক যুগের সমাজ পিতৃতান্ত্রিক ছিল বলে স্বাভাবিকভাবেই সকলের প্রত্যেক জন্ম কামনা করতেন ৷ পরস্পরের প্রীতি প্রতিভাব রহস্য ও আধ্যাত্মিক কর্মে পরস্পরে সহায়তা এবং পুত্রের উৎপাদন দ্বারা বংশ রক্ষা করা এ সমস্তই ছিল বিবাহ বন্ধনের মুখ্য উদ্দেশ্য ৷ অবশ্য পরিবারে কন্যা অপেক্ষার পুত্র সন্তানের জন্ম এখনো ভারতের সর্বত্র এমনকি পৃথিবীর অপরাপর বহু দেশে অধিকতর বাঞ্ছনীয় বলে মনে করা হয় । তবে ঋকবেদের যুগে পুত্র সন্তানের প্রতি মানসিক দুর্বলতা থাকলেও স্ত্রীলোক ও কন্যা সন্তানের প্রতি স্নেহ মমতার কার্পন্য করা হতো না ৷


সে যুগের সংসারের সর্বময়ী কর্তী ছিলেন নারীরা এবং বহিীর জীবনেও তাদের যথেষ্ট স্বাধীনতা ছিল ৷ পুরুষদের মতো নারীরাও বিদ্যাচর্চা করার সুযোগ লাভ করতেন ৷ তবে সেই যুগের নারীরা যে শিক্ষা লাভ থেকে বঞ্চিত ছিল না তার অসংখ্য প্রমাণ বৈদিক যুগের পাওয়া যায় ৷ ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয়,বৈষ্ণব এই তিনটি উচ্চ বর্ণের নারীরা বেদ অধ্যায়নে অধিকার ভোগ করতেন এবং তারা অধ্যাপনার কাজও করতেন ৷ এ যুগের স্বর্ণামাধ্যম নারীরা হলেন অপালা,পৌলমী, লোপামুদ্রা,জয়িতা প্রমুখ এরা বেদমন্ত্র উচ্চারণ করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ৷



মৌর্য ও মৌর্যত্তর যুগে ভারতীয় সমাজের নারীর স্থান সম্পর্কে জানতে হলে প্রধানত আমাদের গ্রিক উপাদান, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র ,অশোকের কয়েকটি লেখ দুটি মহাকাব্য এবং মেগাস্থিনিসের বর্ণনার উপর নির্ভর করতে হয় । মেগাস্থিনিস বলেছেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের নারীরক্ষী বাহিনীর কথা ৷ মেগাস্থিনিস আরো বলেছেন যে পাঞ্জাবের রমণীগণ আলেকজান্ডার কে প্রতিরোধ করার কাজে তাদের স্বামীদের সাহায্য করেছিলেন ৷ শুধু যুদ্ধের প্রয়োজনে নয় রাজ্য শাসনের নারীরা তখন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করত ৷ অর্থশাস্ত্রে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে রাজ অন্তঃপুরে বিশেষ পাহাড়ার নারীরা থাকতেন ৷ অর্থশাস্ত্রের আরো বলা হয়েছে যে মৌর্য যুগের উচ্চ শ্রেণীর মেয়েদের স্বাধীনতা আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হত ৷ অনেক সময় এমনও হতো যে সামন্ত ঘরের মহিলারা বিভিন্ন উপায়ে জীবিকা অর্জন করত ৷



অশোকের লেখ থেকে জানা যায় যে তার সময় মেয়েদের তুচ্ছ আচার অনুষ্ঠান নিয়ে সদা ব্যস্ত থাকত ৷ এই লেখতে অশোকের দ্বিতীয় প্রত্নি ধর্মীয় দানের উল্লেখ আছে । তা থেকে বোঝা যায় যে স্ত্রী তখন স্বামীর সঙ্গে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন ৷ সাতবাহন বংশের বিধবা রানী গৌতমী বলশির জীবনে প্রতিচ্ছবি "নাসিক" লিপিতে বর্ণিত আছে ৷ শাস্ত্রকারেরা বলেছেন যে, "নারীর সম্মানের যোগ্য কিন্তু স্বাধীনতার যোগ্য নয় ৷" যদিও এই উক্তি সর্বদা সত্য ছিল না সাতবাহন বংশী ও নারীদের নাম এ প্রসঙ্গে স্মরণীয় ৷


প্রাচীন ভারতে নারীরা সর্বদা ধর্মীয় জীবন গ্রহণ করতে পারত ৷ তবে তারা পুরোহিতদের কাজ করতে পারত না ৷ তাদের প্রধান দায়িত্ব ছিল বিবাহ স্বামীর সেবা এবং সন্তান পালন করা । তবে উচ্চ স্তরের মহিলারা অনেকের শিক্ষিত ছিলেন ৷ তৎকালীন সংস্কৃত সাহিত্যে এমন অনেক নারীর সন্ধান পাওয়া যায় যারা লিখতে-পড়তে,সংগীত রচনা করতে পারতেন ৷ চিত্রশিল্প এবং মালা তৈরীর কাজেও তাদের বিশেষ দক্ষতা ছিল ৷




খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে শুরু করে গুপ্ত যুগের সূচনা কাল পর্যন্ত যে সময়সীমা তার প্রথমার্ধে অনেক মহিলা উচ্চ শিক্ষা লাভ করেছিলেন ৷ তখন দুই শ্রেণীর মহিলা ছাত্রীর কথা শোনা যায় । এক শ্রেণীকে বলা হত 'ব্রহ্মবাদী' এরা আজীবন বেদ অধ্যায়ন করতেন ৷ অন্য শ্রেণীকে বলা হত 'সদ্যদ্রবাহ' তারা বিবাহের পূর্ব পর্যন্ত বেদ চর্চা করতেন ৷ পানিনি বেদের বিভিন্ন শাখায় ছাত্রীদের কথা বলেছেন বিশিষ্ট শাস্ত্র বিদ কাত্যয়ন অধ্যাপিতাদের অধ্যাপক পত্নীর উপাধ্যায় থেকে পৃথক করার জন্য তাদের উপাধ্যায়া আখ্যা দিয়েছেন । জৈন গ্রন্থে কৌশাম্বীরাজকন্যা জয়ন্তীর কথা আছে, যিনি ধর্ম ও দর্শন চর্চার জন্য আজীবন অতিবাহিত করেছিলেন ৷



তবে আইনের দৃষ্টিতে ভারতীয় সমাজে নারীর স্থান ছিল বরাবরই পুরুষদের পরে ৷ মনুস্মৃতিতে বলা হয়েছে ভারতীয় নারী চিরকাল অন্যের অধীন ৷ বৌদ্ধ ধর্মেও দেখা যায় যে একজন সন্ন্যাসিনী তিনি যতই অগ্রসর হোন না কেন তরুণ শিক্ষা নবীদের অধীনে থাকতেন ৷ মনুস্মৃতিতে নারীকে পণ্য হিসেবে এ দেখার মনোভাব কে নিন্দা করা হয়েছে ৷ স্বামী স্ত্রীকে শিশুর মত শাস্তি দিতে পারত ৷ মনুস্মৃতিতে বলা হয়েছে যে ,"স্বামীকে স্ত্রী দেবতা জ্ঞানে পূজা করবে ৷" নারীদের বীরাঙ্গনা করলে বিবাহিত জীবনের সীমাবদ্ধ ছিল না ৷ তাদের জন্ম লগ্ন থেকে এই ত্রিরাম বোনা চলতো ৷



পরিশেষে বলা যায় গৃহের অভ্যন্তরে নারীর স্থান পুরুষের তুলনায় হীন ছিল না ৷ গৃহপতি বা দম্পতির কেবল পুরুষ নয় নারীও হতে পারত ৷ ধর্ম চারণের ক্ষেত্রে স্ত্রী পুরুষের অধিকারের কোনো ভেদাভেদ ছিল না । বৈদিক যুগের সতীদাহ প্রথা ছিল কিনা সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা সম্ভব নয় ৷ আর এই প্রথা প্রচলিত থাকলেও তা একমাত্র রাজনীয় বর্গের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ৷ স্মিতিশাস্ত্রে গণিকা ব্যক্তিকে অনুমোদন করা হয়নি ৷ মনুস্মৃতিতে গণিকা কে চোরের সমপর্যায়েই যুক্তি করা হয়েছে ৷ গণিকাদের সঙ্গে ধর্মীয় মনোভাবের কোন মিল ছিল না এবং সাধারণ মনু ভাবী জয়ী হয়েছিলেন ।

About the author

Irisha Tania
"আমি সেই মেয়ে, যে শব্দে বাঁচে। কলম আমার অস্ত্র, আর কাগজ আমার স্বপ্নের আকাশ। প্রতিটি অনুভব, প্রতিটি চিন্তা আমি সাজিয়ে রাখি অক্ষরের গাঁথুনিতে। কখনো গল্পে, কখনো কবিতায়, আবার কখনো নিঃশব্দের ভেতরে। আমি লিখি, কারণ লেখার মাঝে আমি নিজেকে খুঁজে পাই। …

Post a Comment

🌟 Attention, Valued Community Members! 🌟